reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০১ মার্চ, ২০২১

স্কুল-কলেজ খুলছে উদ্বেলিত ছাত্রসমাজ

তীর্থস্থানে যেতে পারেনি একটি বছর। বেশির ভাগ সময় কাটাতে হয়েছে চার দেয়ালের মধ্যে। কেবল তীর্থস্থানেই নয়, ঘরের বাইরে পা রাখার ওপরও ছিল নিষেধাজ্ঞা। করোনা মহামারির কারণে পৃথিবীর সবকিছু থমকে যাওয়ার মতোই থমকে গিয়েছিল তাদের জীবন। কৈশোর আর তারুণ্যের জন্য বিষয়টা যে কতটা বেদনাদায়ক; তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তবু তারা পার করেছে এই কঠিন সময়। ক্ষতির কথা আর নাইবা বললাম। এ ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সময় হয়েছে। এক বছর পর ক্লাসে যাবে শিক্ষার্থীরা। আনন্দের শিহরনে জেগে উঠছে কিশোর আর তরুণের অবরুদ্ধ মন।

টানা এক বছর ১৩ দিন পর খুলছে দেশের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা। আগামী ৩০ মার্চ প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি পাঠদান শুরু হবে। জুলাই মাসে নেওয়া হবে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের অবশ্য এখনই ক্লাসে যেতে হবে না। পরে অবস্থা বুঝে তাদের ব্যাপারে ঘোষণা আসবে। আর আগের ঘোষণা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুলবে ২৪ মে। এক সপ্তাহ আগে খুলে দেওয়া হবে আবাসিক হলগুলো। হলে অবস্থান নির্বিঘœ করতে এ সময়ের মধ্যে ১ লাখ ৩০ হাজার ছাত্রছাত্রীকে টিকা দেওয়ার কাজ শেষ করা হবে। আর স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা খোলার আগে শিক্ষক-কর্মচারীদের টিকা দেওয়ার কাজ শেষ করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টিকার গ্রহণকারীর সংখ্যা যত বাড়তে থাকবে, তত তাড়াতাড়ি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

সব কিছুরই একটি ধর্ম আছে। তা সে জড়ই হোক বা অজড়। যেমন লোহার ক্ষেত্রে বলা যায়, দীর্ঘদিন একটি ধারালো তলোয়ারকে বাইরে ফেলে রাখলে তাতে মরিচা পড়ে, ধার কমে যায়। একইভাবে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ছাত্রছাত্রীদের অবস্থাও আর আগের মতো নেই। সেখানেও মরিচা পড়েছে, ধারও কমেছে। তাই শিক্ষার্থীদের প্রথম কাজ হবে মরিচা দূর করা। কাজটি মূলত তাদেরকেই করতে হবে। পারিপার্শ্বিকতা তাদের সহযোগিতা করবে। বিশেষ করে বাবা-মা বা অভিভাবকদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। কোনোভাবেই তাদের ওপর বলপ্রয়োগ করে চাপ সৃষ্টি করা যাবে না। হঠাৎ চাপ প্রয়োগ করা হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। যেতে হবে একটি সহনীয় পরিবেশের মধ্য দিয়ে। করোনার কারণে যা আমরা হারিয়েছি, তা দ্রুত ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশা ইতিবাচক হবে না। সব কিছুই যখন নতুনভাবে শুরু করতে হচ্ছে, তখন সন্তানদের ক্ষেত্রেও নতুন করে নতুনভাবে শুরু করার কথা ভাবতে হবে। মনে রাখা জরুরি যে, যা হারিয়ে যায়, তা কখনো ফেরত পাওয়া যায় না। বিশেষ করে যে সময়টা হারিয়ে গেছে তাকে আর ফেরত আনা সম্ভব নয়। তাই নতুন করে শুরু করার কথা ভাবতে হবে। আর সেই শুরুর মধ্যে থাকতে হবে সততা এবং আন্তরিকতা।

স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে সরকার যে আন্তরিকতা দেখিয়েছে, তার যথাযথ মূল্য দেওয়াও হবে শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। পেছনের দিকে না তাকিয়ে, লোকসানের কথা না ভেবে, সাহসের ওপর নির্ভর করে সামনের দিকে পা ফেলতে হবে। আশা করি, শিক্ষার্থীরা সফল হবে। আমাদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা পূরণ হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close