reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৩ জানুয়ারি, ২০২১

আকাশের বদলে ছাদ একটি মাইলফলক

এতকাল মাথার ওপর কোনো ছাদ ছিল না। ছিল খোলা আকাশ। ঝড়-বৃষ্টি-রোদ মাথায় নিয়ে ঘুমাতে হয়েছে এসব মানুষকে। এখন সেসব মানুষই পাচ্ছে দুই শতাংশ জমির মালিকানাসহ একটি বাড়ি। যেখানে থাকছে দুটি শোবার ঘর, রান্নাঘর, একটি টয়লেট ও বারান্দা। এসব ঘর হবে টেকসই, থাকবে সৌরবিদ্যুৎ ও বজ্রপাত নিরোধক ব্যবস্থা। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছে দেশের ৯ লাখ পরিবার। প্রথম ধাপে আজ দেওয়া হচ্ছে ৬৯ হাজার ৯০৪ ভূমিহীন পরিবারকে। এ ছাড়া ২১ জেলার ৩৬ উপজেলার ৪৪ গ্রামে ৭৪৩টি ব্যারাক নির্মাণ করা হচ্ছে। যেখানে ৩ হাজার ৭১৫ পরিবারকে পুনর্বাসন করা যাবে। আসছে ফেব্রুয়ারিতে আরো ১ লাখ পরিবারকে এসব ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে। আর চলতি বছরের মধ্যে বাকি ৭ লাখ ১৫ হাজার ৭১৮ ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে স্বপ্নের নীড়সহ ২ শতাংশ জমির মালিকানা দিয়ে স্থায়ী ঠিকানা গড়ে দেওয়া হবে সরকারিভাবে।

ভালো কাজকে ভালো বলতে মানা নেই। সাদাকে সাদা বলা আর কালোকে কালো বলাই সৎ ও সাহসী মানুষের কাজ। প্রধানমন্ত্রী এ কাজের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করলেন দেশের সাধারণ মানুষের প্রতি তার মমত্ববোধ কতটা প্রবল। তার নেওয়া এই একটি উদ্যোগের মধ্য দিয়ে দেশের প্রায় অর্ধকোটি ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষ একটি স্থায়ী আবাসের মালিকানা পেল। ঠিকানাহীন মানুষ পেল তাদের স্থায়ী ঠিকানা। সম্ভবত মুজিববর্ষে এটাই হবে প্রধানমন্ত্রীর সেরা উদ্যোগ। ২০২০ সালের ৭ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, দেশের একটি মানুষও গৃহহীন বা ভূমিহীন থাকবে না। তিনি তার কথা রেখেছেন। তার সেই ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিটি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার পাচ্ছে দুর্যোগ সহনীয় সেমিপাকা ঘর আর দুই শতাংশ জমির মালিকানা। সেমিপাকা ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। সরকারি হিসাবমতে, সারা দেশে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ৬২২টি ভূমি-গৃহহীন পরিবার রয়েছে। এ তথ্য নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে, তবে প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগ নিয়ে বিতর্ক থাকার কোনো সুযোগ নেই। আমজনতার কল্যাণের পক্ষে যারা, তারা সবাই বলবেন, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত। আগামীতে তিনি যেন দেশের কল্যাণে, সাধারণ মানুষের কল্যাণে এ ধরনের উদ্যোগকে আরো সম্প্রসারিত করেন। আমরা মনে করি, মানুষের কল্যাণে যে নেতৃত্ব সচল থাকে, তার মৃত্যু নেই। আমরা প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করি।

গত ৫০ বছরের বাংলাদেশে এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম। ঘর পোড়া গরুর মতো বলতেই হয়, এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িতদের কেউ যেন নিজেদের আখের গোছানোর চিন্তা থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখেন। আর সে কারণেই এ কাজের প্রতিটি পদক্ষেপের ওপর তীক্ষè নজরদারি দরকার। আশা করি, সরকার নিশ্চয়ই সেদিকে মনোযোগী হবে। পাশাপাশি এ ধরনের একটি মহৎ উদ্যোগের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরাও কোনো মহৎ কর্মের কথা ভাবতে পারি। যার যেটুকু ক্ষমতা আছে, তাই দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের অনুসারী হতে পারি। হতদরিদ্রের দিকে সহানুভূতির হাত বাড়াতে পারি। তবেই দেশ হয়ে উঠতে পারে সোনার বাংলা। এক দিন যে বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close