reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

পর্যালোচনা

ওজোন স্তর রক্ষার গুরুত্ব ও করণীয়

তৌহিদুর রহমান

বায়ুমন্ডলের ওজোন স্তর প্রতিনিয়তই ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মিগুলোকে প্রতিহত করে পৃথিবীর প্রাণিকুলকে রক্ষা করছে। ওজোন স্তর হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের একটি স্তর, যেখানে তুলনামূলকভাবে বেশি মাত্রায় ওজোন গ্যাস থাকে। এই স্তর থাকে প্রধানত স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে, যা ভূপৃষ্ঠ থেকে কমবেশি ২০-৩০ কিমি ওপরে অবস্থিত। ওজোন স্তরে ওজোনের ঘনত্ব কম হলেও প্রাণিজগতের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মধ্যম তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি মানবদেহের ত্বক এমনকি হাড়ের ক্যানসারসহ অন্যান্য মারাত্মক ব্যাধি সৃষ্টি করে। এই ক্ষতিকর রশ্মি পৃথিবীর জীবজগতের সব প্রাণের প্রতি তীব্র হুমকিস্বরূপ।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, আকাশের নীলাভ রং-ই হচ্ছে ওজোন স্তর। ওজোন অক্সিজেনের একটি রূপ। সূর্যের ‘অতিবেগুনি রশ্মি’ এই ওজোন স্তর শোষণ করে নেয়। এর জন্য সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব থেকে পৃথিবীর উদ্ভিদসহ প্রাণিজগতের বেঁচে থাকা সম্ভব হয়। প্রায় ২৫ বছর আগে ড. জো ফারম্যানের নেতৃত্বে একদল আবহাওয়া বিজ্ঞানী যখন অ্যান্টার্কটিকায় গবেষণা চালাচ্ছিলেন, তখনই তাদের সূক্ষ্ম আকাশ পর্যবেক্ষক যন্ত্রের মাধ্যমে ওজোন স্তরে ছিদ্র দেখতে পান। এর আকার দিনে দিনে বাড়ছে। আর এর মাধ্যমেই সূর্যের ‘অতিবেগুনি রশ্মি’ এসে পৌঁছাচ্ছে পৃথিবীতে। যার ফলে আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে পৃথিবীর উষ্ণতা।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ২০০৮ সালে ওজোন স্তরের এই ফাটলের পরিমাণ ছিল ২৭ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার। আর ২০০৬ সালে ছিল ২৫ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার। ২০০৯ সালে এই পরিমাণ ছিল ২৪ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটারে। ২০০৯ সালের এই পরিমাণটি একটু কম হলেও তা কোনোভাবেই আশঙ্কার বাইরে নয়।

প্রতিনিয়ত ক্লোরোফ্লোরোকার্বন (সিএফসি) গ্যাসসহ অন্য ওজোন স্তর ক্ষয়কারী গ্যাস উৎপাদন ও ব্যবহারের ফলে ওজোন স্তর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে বিশ্বব্যাপী উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে। ভূপৃষ্ঠ এতটাই উত্তপ্ত হচ্ছে যে, সামগ্রিকভাবে বদলে গেছে আবহাওয়া, প্রকৃতি ও পরিবেশ। ১৯৮৫ সালে বিশ্বস্তরের সরকারগুলো ওজোন স্তর সংরক্ষণের জন্য ভিয়েনা কনভেনশন গ্রহণ করেছিল। এর দুই বছর পরে ১৯৮৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর কানাডার মন্ট্রিলে ২৪টি দেশ স্বাক্ষর করে ওজোন স্তর ধ্বংসকারী ক্লোরোফ্লোরো কার্বন নিঃসরণ সীমাবদ্ধ রাখার একটি আন্তর্জাতিক চুক্তিতে। চুক্তি অনুযায়ী ১৯৯৪ সালের মধ্যে তা শতকরা ২৯ ভাগ কমানো হবে, ১৯৯৯ সালের মধ্যে ৫০ ভাগ এবং ২০০০ সালের মধ্যে ক্লোরোফ্লোরো কার্বন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হবে। কিন্তু তারপর আরো আটবার চুক্তিটি সংশোধন করা হয়েছে। বর্তমানে ১৯৫ দেশই এই চুক্তি মেনে চলার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ। ২০১৬ সালের অক্টোবরে রুয়ান্ডার কিগলিতে মন্ট্রিল প্রটোকলের ২৮তম সভার সংশোধনে হাইড্রোফ্লোরো কার্বনের ব্যবহার অস্থায়ীভাবে পরিচালিত হবে।

ওজোন স্তর ক্ষয় ও তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা সৃষ্টির জন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ১৯৯৪ সালের ১৯ ডিসেম্বরে এক সভায় প্রতি বছর ১৬ সেপ্টেম্বর ‘আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর রক্ষা দিবস’ হিসাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৫ সাল থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে। ওজোন স্তর সুরক্ষার্থে ভিয়েনা কনভেনশনের ৩৫ বছর পূর্ণ হলো। এ ভিয়েনা কনভেনশনের আওতায় মট্রিয়াল প্রটোকল, বিভিন্ন শিল্পপ্রধান দেশের সরকার, বিজ্ঞানীদের উদ্যোগে এ শতাব্দীর মধ্যভাগে ওজোন স্তর ১৯৮০ বা তার পূর্বের অবস্থা পুনর্নির্মিত হবেÑ এমনটি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘ এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউনেপ) এর নির্বাহী পরিচালক ইঙ্গার অ্যান্ডারসন। নাসার গবেষণা মতে, ওজোন হোল টি পুরোপুরি বন্ধ হতে ২০৬০-২০৮০ সাল পর্যন্ত লাগতে পারে তার পরও একটি ছোট গর্ত রয়ে যেতে পারে। তবে সবকিছু নির্ভর করবে মানুষের জীবনযাপনের ওপর।

বর্তমানে মানুষের আয়ু বাড়লেও অল্প বয়সে মানুষ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। যদি ওজোন স্তরের মাত্রাতিরিক্ত ক্ষয় হতে শুরু করে, তাহলে জীবজগতের জন্য ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে চলে আসবে। এটি সমগ্র জীবজগতের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। যেমনÑ প্রাণীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। চোখের ছানি, ত্বকের ক্যানসার এবং অন্যান্য নতুন নতুন রোগের উদ্ভব ঘটবে। ধারণা করা হচ্ছে যে, ওজন স্তরের ক্ষয়ের জন্য সারা বিশ্বে ৫ লাখ লোক স্কিন ক্যানসারে ভুগবে। একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ১ শতাংশ অতিবেগুনি রশ্মি বৃদ্ধির ফলে সাদা চামড়ার লোকদের মধ্যে নন মেলোনোমা ত্বকের ক্যানসার বৃদ্ধি পাবে চার গুণ। প্রাণিজগতের অনেক প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটতে পারে। অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব কোষের ওপর খুবই ক্ষতিকারক। এটা কোষের সৃষ্টি এবং বৃদ্ধিকে ব্যাহত করতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে কোষগুলোকে ভেঙে ফেলতে পারে। প্রাণীর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাবে। নখ ও চুল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গড় আয়ু হ্রাস পাবে। উভচর প্রাণীর সংখ্যা দ্রুত কমবে।

অতিবেগুনি রশ্মি খাদ্যশস্যের ক্ষতি করবে, বৃক্ষাদি এবং অরণ্যসমূহের পরিমাণ ক্রমশ হ্রাস পাবে। উদ্ভিদের পাতাগুলো আকারে ছোট ও হলুদ হয়ে যাবে অর্থাৎ উদ্ভিদ ক্লোরোসিস রোগাক্রান্ত হয়ে পড়বে। বীজের উৎকর্ষতা নষ্ট হবে। ফসলের আগাছা, রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। ক্ষুদ্র মাইক্রো অর্গানিজম, সমুদ্র শৈবাল এবং প্লাংকটন অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে। অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাব উদ্ভিদ কোষের ওপর খুবই ক্ষতিকারক। এটা উদ্ভিদ কোষের সৃষ্টি এবং বৃদ্ধিকে ব্যাহত করতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে কোষগুলোকে ভেঙে ফেলতে পারে। উদ্ভিদের অকালমৃত্যুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে। উদ্ভিদের উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাবে। উদ্ভিদের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাবে। প্রাকৃতিক খাদ্যচক্রের ক্ষতিসাধন করবে। উষ্ণতার বৈপরীত্য ঘটবে ও পৃথিবীর উষ্ণতার ভারসাম্য বিপন্ন হবে। জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হবে, ত্বরান্বিত হবে। ধোঁয়াশা ও অ্যাসিড বৃষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।

তথ্যমতে, পৃথিবীতে এক-পঞ্চমাংশ অন্ধ রোগী ও নব্বই শতাংশ কর্কট রোগের কারণের জন্য দায়ী অতিবেগুনি রশ্মি। এই রশ্মির প্রভাবে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সন্তানের জন্ম হয়ে থাকে। আর এত সব রোগ বেশি হয়ে থাকে পৃথিবীর উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলে। এক কথায়, এই রশ্মির প্রভাবে প্রাণিজগতের অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাবে। যদিও এর জন্য দায়ী পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো। পরিবেশের বিরূপ প্রতিক্রিয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে এই ওজোন স্তর। ওজোন স্তরের ক্ষয় সামুদ্রিক শৈবাল, প্লাংকটনসহ সামগ্রিক উদ্ভিদ ও প্রাণীর ওপর ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলছে। মনে রাখতে হবে, উদ্ভিদ ও প্রাণিজগতে বসবাসকারী সবারই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস করতে ওজোন স্তরের ক্ষয় কমবেশি নেতিবাচক ভূমিকা রাখছে। ক্লোরোফ্লোরো কার্বন প্রধানত আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রপাতি, রেফ্রিজারেটর, অ্যারোসল, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র, কম্পিউটার ও অন্যান্য যন্ত্রের সার্কিটে পরিষ্কারক হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

পৃথিবীর প্রায় ৬০ ভাগ কার্বন নিঃসরণ করে থাকে আমেরিকা, চীন, রাশিয়া, ভারত, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। ওজোন স্তর রক্ষায় এসব দেশকে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে এনে বিকল্প জ্বালানির সন্ধান করতে হবে। জীবাশ্ম জ্বালানির প্রয়োগ কমিয়ে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। যেমন হতে পারে সূর্যশক্তি, বায়ুশক্তি, পানিশক্তির মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার। পৃথিবীতে আজ সর্বত্রই প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে চলেছে। দৃশ্যমান হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। তাই আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ও বাসযোগ্য সবুজ পৃথিবী রেখে যেতে হলে ওজোন স্তর রক্ষায় শিল্পোন্নত দেশসমূহকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। এ ব্যাপারে পৃথিবীর সব স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওজোন স্তর রক্ষায় ও সামগ্রিক পরিবেশ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

ওজোন স্তর রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (সিএফসি), বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় হ্যালোজেনেটেড হাইড্রো কার্বন, মিথাইল ব্রোমাইড এবং নাইট্রাস অক্সাইডের মতো ক্ষতিকারক গ্যাসগুলোর ব্যবহার রোধ করা। কার্বন মনোক্সাইড এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড মুক্ত করে এমন ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার হ্রাস করা। ওজোন স্তর সংরক্ষণের অন্য উপায় হলো এয়ার কন্ডিশনার সঠিকভাবে বজায় রাখা। যদি এসিগুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা হয়, তবে সিএফসি গ্যাস বায়ুুমন্ডলে ছেড়ে যাওয়ার উচ্চ সম্ভাবনা থাকে। আমাদের চুল স্প্রে, রুম ফ্রেশনার ব্যবহার এড়ানো উচিত; কারণ এই পণ্যগুলো ক্লোরোফ্লোরো কার্বন (সিএফসি) ছড়িয়ে থাকে। রাসায়নিক সার তৈরির সময় বেশ কয়েকটি গ্রিনহাউস গ্যাস তৈরি হয়। সুতরাং, আমাদের কৃষিতে সারের ব্যবহার এড়ানো উচিত এবং জৈব পদার্থের ব্যবহার বাড়ানো উচিত।

বাসযোগ্য পৃথিবীর আকাক্সক্ষায় আমাদের অবশ্যই আরো বেশি সতর্ক হতে হবে এবং মনে রাখতে হবে, মানবসৃষ্ট দূষণ ও বনাঞ্চল ধ্বংসের ফলে প্রকৃতি প্রদত্ত নিরাপত্তাবেষ্টনী ওজোন স্তর দিন দিন ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। নির্বিচারে বনভূমি উজাড় করার ফলে অতিরিক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষিত হচ্ছে না। ফলে ওজোন স্তরের ক্ষয়জনিত কারণে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি মাত্রাতিরিক্ত পৃথিবীতে পৌঁছাচ্ছে। এভাবে পৃথিবী হয়ে উঠছে উত্তপ্ত। ওজোন স্তরে ক্ষয়ের সাম্প্রতিক কয়েক বছরের তথ্য সবাইকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলছে। ভয়াবহ এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে জনসচেনতার কোনো বিকল্প নেই। ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি এগিয়ে আসতে হবে প্রতিটি দেশের সরকারকে। আমাদের উচিত এক হয়ে ওজোন স্তর রক্ষায় এগিয়ে আসা। প্রাণিকুলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ওজোন স্তর রক্ষা করা জরুরি। মন্ট্রিল প্রটোকল প্রতিটি রাষ্ট্র মেনে চলছে কি না, তা জাতিসংঘের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং কোনোভাবেই যেন চুক্তির ব্যত্যয় না ঘটে, তা খেয়াল রাখতে হবে। আর তা করতে হবে আমাদের স্বার্থেই, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যই।

লেখক : শিক্ষার্থী

এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close