reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

বাজার স্থির রাখতে কৌশল পাল্টাতে হবে

বন্যা ঠেকাতে বাঁধের প্রয়োজন। বাঁধ দিতে না পারলে প্লাবিত হবে জনপদ। ক্ষতি হবে ফসলের। কঠিন হয়ে পড়বে বেঁচে থাকা। আর এ কারণেই বাঁধের জন্ম। প্লাবন ঠেকাতে পৃথিবীর সর্বত্রই এখন বাঁধের ওপর নির্ভরশীল। তবু দেশে দেশে বন্যা হচ্ছে। প্রতিরোধের ব্যবস্থাও নিচ্ছে। এর মাঝে কিছু কিছু ব্যবস্থা সাময়িক। আবার কিছু ব্যবস্থা স্থায়ী। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কোন পথে যাব। এ প্রশ্নের জবাবে সবাই হয়তো বলবেন, স্থায়ী সমাধানই ভালো। আমরাও মনে করি, স্থায়ী সমাধানই উত্তম।

আমাদের দেশে বন্যা এবং বাজার যেন একই সমান্তরালে চলছে। বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে বন্যা হবেই। আবার নির্দিষ্ট একটি সময়ে বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। বিষয়টি আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে। এবং তা ফি বছর। সরকার চেষ্টা করেনি, এ কথা বলা যাবে না। তবে কোথায় যেন একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে। আর সেই ফাঁক দিয়ে দুর্বৃত্তরা ঢুকে পড়ছে ঘরে, তছনছ করে দিচ্ছে স্বাভাবিক জীবন। সম্প্রি পেঁয়াজ নিয়ে তোলপাড় শেষ হতে না হতেই অস্থির হয়ে উঠেছে ভোজ্য তেলের বাজার। দেশের বৃহৎ পাইকারি আড়ত খাতুনগঞ্জে তেলের বাজারে প্রতিদিন বাড়ছে এই নিত্যপণ্যটির দাম। পাঁচ দিন আগে পাম অয়েল (সিটি পাম) প্রতি মণ ২ হাজার ৮৮০ টাকায় (প্রতি কেজি ৭৭.১৭ টাকা) বিক্রি হলেও দাম বেড়ে প্রতি প্রতি মণ ২ হাজার ৯৬০ টাকায় (কেজি প্রতি ৮০ টাকা) বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য ভোজ্য তেলও বসে নেই। বেড়েছে মূল্য। অভিযোগ উঠেছে, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ানো হলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পেঁয়াজের প্রশ্নেও একই অভিযোগ ছিল।

সরকার যে চেষ্টা করছে না, তাও নয়। কিন্তু সে চেষ্টায় কোনো ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়নি। সরকারের নেওয়া ব্যবস্থাকে অনেকেই সাময়িক ব্যবস্থাপত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন। দরকার স্থায়ী ব্যবস্থার। তা না হলে প্রতি বছরই এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে। বাজার ব্যবস্থাপনাকে ঠিক রাখার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্য ঠিক রাখা। চাহিদায় কোনো সমস্যা নেই। বিষয়টি স্থির। কিন্তু জোগানে রয়েছে একটি বিশাল ফাঁক। আর সেই ফাঁকটির নাম সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের হাতে জোগানের সবকিছুই গৃহবন্দি থাকায় বাজারের এই অস্থিরতা। তাদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে বাজারের ওঠানামা। এই ইচ্ছার শেকল ভাঙতে পারলেই এই অস্থিরতা সরতে পারে বলেই অনেকের বিশ্বাস। তাই সরকারকে নতুন করে ভাবতে হবে। নিতে হবে নতুন কৌশল। অস্থিরতা শুরু হলেই সরকার টিসিবির মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে; যা একটি সাময়িক ব্যবস্থাপনা এবং জোগানের পরিমাণও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মতো নয়। আমরা মনে করি, ব্যবস্থাটিকে স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তোলা দরকার। সিন্ডিকেটের লাগাম টেনে ধরার জন্য এটাই হতে পারে একটি উন্নত কৌশল। বাজার নিয়ন্ত্রণের একচেটিয়া ক্ষমতাকে গুঁড়িয়ে দেওয়া গেলেই বাজার স্থির থাকবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। আর এর জন্য টিসিবির সম্প্রসারণ জরুরি এবং তা একটি চেইনশপের মধ্য দিয়েই। পরিচালনায় থাকতে হবে সরকারকেই। তৈরি হবে জোগানের মাঝে একটি প্রতিযোগিতা। অন্যথায় একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ গিলে খাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের নান্দনিক ব্যবস্থাসমূহকে। যা কখনোই কোনো দেশপ্রেমিক নাগরিকের কাম্য

হতে পারে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close