রুনা লায়লা, ইবি

  ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সেশন উৎসব ও বন্ধনের গল্প

খেলাধুলা মন গড়ার কারিগর। খেলাধুলা মানুষকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে খেলাধুলার বিকল্প নেই। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মনোযোগ ধরে রাখতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা আন্তঃ বিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে আন্তঃ সেশন টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকে। রবিবার (২৬ জানুয়ারি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিরিনা খাতুনসহ সব শিক্ষকের উপস্থিতিতে উদ্বোধনী ম্যাচ সম্পন্ন হয়েছিল। ওইদিন প্রথম ম্যাচে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ এবং মাষ্টার্সের খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

২০১৮-২০১৯ সেশনের বিপরীতে মাঠে ছিল ২০২২-২০২৩ সেশন। এর মাধ্যমে যেমন শারীরিক ও মানসিক প্রফুল্লতা এসেছিল তেমনি দুই সেশনের মধ্যে যোগাযোগ দক্ষতাও বেড়ে গিয়েছিল। চেয়ারম্যান ম্যাম লটারির মাধ্যমে প্রথম বেটিং করার জন্য নির্বাচন করেছিলেন ২০১৮-২০১৯ সেশনকে। দুই দলের মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল। বিজয় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন দুই দলই। যার যার সেশনকে উৎসাহিত করতে মাঠের চারদিকে ভিড় জমিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সবচেয়ে বেশি উৎসাহ পেয়েছিলেন ২০২২-২০২৩ সেশনের খেলোয়াড়রা। কেননা এ সেশনের ছেলেমেয়েদের তাদের দলের খেলোয়াড়দের হাততালি, শান্ত থাকার আশ্বাস, বাঁশি বাজানোসহ বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়েছেন শেষ পর্যন্ত। খেলায় সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় ছিল আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক রিপন স্যার ২০১৮-২০১৯ সেশনের দলে ২০২২-২০২৩’র বিপরীতে মাঠে নেমেছিলেন?। এই বিষয়টাই ইঙ্গিত দেয় রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিবারে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বন্ধন কত গভীর! রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকগণ কতটা বন্ধুসুলভ। খেলার মাঝখানে স্যার ম্যামরা দুই দলকেই সমর্থন করেছিলেন এবং উৎসাহ দিয়েছেন। তারপর দুই দলের অসাধারণ পারফরম্যান্সে ৭ উইকেটে ২০১৮-২০১৯ সেশনকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন ২০২২-২০২৩ সেশনের শিক্ষার্থীরা। ২০১৮-২০১৯ অনেক ভালো খেলেছিল। একটি খেলায় হারজিত থাকবেই তবে আমার মনে হয় ২০১৮-২০১৯কে হারানোর পেছনে উৎসাহ ছিল বড় অবদান। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি উৎসাহ পেয়েছিলেন এবং মনের জোরে বিজয় অর্জন করতে পেরেছে। প্রত্যেকটা মানুষই জিততে চায়। হোক সেটা খেলাধুলা, কল্পনা, বাস্তবতায় কিংবা জীবন সংগ্রামে। কিন্তু সবাই জিততে চায় এবং বিজয়ের স্বাদ গভীরভাবে অনুভব করে মানুষ। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা বিজয়ী ঘোষণা হওয়ার পর পর সব শিক্ষার্থী একসঙ্গে মাঠে নেমে অনেক আনন্দ করেছিল। শুধু তাই নয় একসাথে অনেকগুলো ভ্যান ভাড়া করে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে বিজয় মিছিল করেছে।

ইবির ক্রিকেট মাঠ থেকে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের সব ছাত্র-ছাত্রী মিলে ভ্যানে চড়ে ফুটবল মাঠের দিক দিয়ে ডাইনা চত্বর, প্যারাডাইস রোড থেকে মেডিকেল সামনে হয়ে প্রতিটি হলের সামনে দিয়ে বিজয়ের স্লোগান দিতে দিতে ঘুরে বেড়িয়েছে। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের আনন্দ দেখে শিক্ষকরা অনেক খুশি হয়েছিলেন এবং মুচকি হেসে বুঝিয়ে দিয়েছেন- তোমরা খুশি থাকলেই আমরা খুশি। সারাদিন খুবই আনন্দ করেছিলাম। ম্যাম সবাইকে বাদাম কিনে দিয়েছিল আমরা সবাই আনন্দের সাথে বাদাম খেয়েছিলাম। সবাই একসাথে ছবি তুলে পরবর্তীতে ভালো করার আশ্বাস ও উৎসাহ দিয়েছিলাম খেলোয়াড়দের। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জিহাদ অনেক ভালো খেলেছিল এবং সে উক্ত ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। স্যার ম্যামরা অনেক খুশি ছিলেন এবং আমরাও খুব খুশি হয়েছিলাম। আমাদের মাঝে যে একঘেয়েমি ছিল তাও কেটে গিয়েছে। মনকে প্রফুল্ল করতে ও পড়াশোনায় মনোযোগ ধরে রাখতে নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন করা হতে পারে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য এক বিশেষ উপহার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close