অনিরুদ্ধ সাজ্জাদ, জাককানইবি
বিশ্বসেরা গবেষকের সঙ্গে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটিং বিভাগ
গবেষণা এমন এক জ্ঞানযাত্রা, যা কেবল নিজের দক্ষতা ও সৃজনশীলতাকে প্রসারিত করে না, বরং সমাজ ও বিশ্বের কল্যাণেও ব্যাপক অবদান রাখতে পারে। এই জ্ঞানযাত্রার এক অনন্য পথিক প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান। সম্প্রতি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে তার উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের মাঝে গবেষণার নতুন অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্ক্যাস্টার ইউনিভার্সিটি ও মালয়েশিয়ার সানওয়ে ইউনিভার্সিটির এই প্রখ্যাত গবেষক, আন্তর্জাতিক গবেষণায় শীর্ষ ১ শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন। গবেষণার হাতেখড়ি বিষয়ক সেমিনারে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময় করেন এবং ভবিষ্যৎ গবেষকদের জন্য সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
সেমিনারে প্রফেসর রহমান গবেষণার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনা করেন। ইংরেজির ওপর দক্ষতা অর্জনের ওপর তিনি বিশেষ গুরুত্ব দেন, কারণ আন্তর্জাতিক গবেষণার ক্ষেত্রে এটি মূল মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। তিনি বলেন, ‘ভালো গবেষক হতে হলে ইংরেজিতে পারদর্শী হতে হবে, কারণ এটাই শেখার প্রথম এবং প্রধান চ্যালেঞ্জ।’ তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, নিজের ভাষাগত দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কোনো তাড়াহুড়া না করে প্রতিনিয়ত অনুশীলন করতে হবে।
ড. রহমান তার জীবনের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হিসেবে কঠিন বিষয়গুলোতে অতিরিক্ত মনোযোগ দেওয়ার অভ্যাসকে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘অনেকেই কঠিন বিষয়গুলো এড়িয়ে যায়, কিন্তু আমি সবসময় সেসবের মোকাবিলা করতে চাইতাম।’ এই মানসিকতা গড়ে তোলার গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করেন, যাতে তারা জীবনের বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করতে পারে।
প্রফেসর রহমানের মতে, গবেষণায় সফল হতে কেবল একাডেমিক দক্ষতাই নয়, বরং যোগাযোগের দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন, ‘কমিউনিকেশন স্কিল এবং আত্মবিশ্বাস অর্জন করতে হবে। কারণ গবেষণার ফলাফল কেবল কাগজেই সীমাবদ্ধ থাকলে তা মূল্যহীন, তাই গবেষণার তথ্য সহজভাবে প্রকাশ করা শিখতে হবে।’ তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারে, একাডেমিক এবং সফট স্কিলের এই মেলবন্ধনই একজন ভালো গবেষক হয়ে ওঠার মূল চাবিকাঠি।
প্রফেসর রহমান বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগের বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেন। তিনি জানান, ভালো একাডেমিক ফলাফল ও গবেষণায় আগ্রহী মনোভাব থাকলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুযোগের দরজা খুলে যায়। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই নিজেকে গবেষণার জন্য প্রস্তুত করতে হবে, এবং একাধিক স্কিল গড়ে তুলতে হবে।’
সেমিনারের পর প্রফেসর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে গবেষণা কাঠামো উন্নত করার পরামর্শ দেন। প্রফেসর ড. সাইদুর রহমানকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানায় মার্কেটিং বিচাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বসেরা গবেষকের অনুপ্রেরণাদায়ক সফর আমাদের একাডেমিক উৎকর্ষতা এবং গবেষণায় নতুন দিগন্ত অর্জনে সহায়ক হবে।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ও হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন সরকার। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক কুমার বিশ্বজিৎ সাহা ও মাহমুদা আক্তারসহ বিভাগের তিন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। ড. সাইদুর রহমানের উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের কাছে গবেষণায় আত্মপ্রত্যয় ও অদম্য আগ্রহের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।
"