‘তরুণরাই দেশি-বিদেশি পর্যটক আকৃষ্টে কাজ করবে’
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের আয়োজনে এবং মিশন গ্রিন বাংলাদেশের সহযোগিতায় কর্মশালা, মানববন্ধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান, বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লা জেলায়। গত রবিবার (১৩ অক্টোবর) দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, ‘তরুণরাই পর্যটন খাতের অগ্রগতি ও উন্নয়নে প্রধান শক্তি। তরুণরাই ট্যুরিজম রক্ষা করবে এবং তারা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করবে। কুমিল্লার পর্যটন স্থানগুলোকে সারা পৃথিবীর কাছে পরিচিত করে দিতে ও পর্যটকরা কুমিল্লায় আসলে তাদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিতে হবে তরুণ ভলান্টিয়ারদের।’
কুমিল্লা আইডিয়াল কলেজে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় অনলাইনে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশের পর্যটন খাতের উন্নতির জন্য তরুণদের আগ্রহ এবং তাদের উদ্যম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশ সুরক্ষা এবং পর্যটন আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য তরুণ প্রজন্মকে আরো বেশি সংযুক্ত করতে হবে। পরিবেশের জন্য কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিতে পারবে তরুণরাই।’
দিনব্যাপী এই আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন, মিশন গ্রিন বাংলাদেশের আহ্বায়ক আহসান রনি, প্রজেক্ট ডিরেক্টার কৃষিবিদ আবুল বাশার মিরাজসহ কুমিল্লা গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ও অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘পর্যটনবান্ধব বাংলাদেশ গড়তে ট্যুরিজম বোর্ড নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য শুধু দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরা নয়, বরং টেকসই পর্যটনশিল্প গড়ে তোলা। এর অংশ হিসেবে, সবুজায়ন ও পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে পর্যটন এলাকাগুলো আকর্ষণীয় ও সুস্থির করা হচ্ছে। বিশেষভাবে তরুণদের অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে তারা পর্যটনশিল্পের উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারে। পর্যটন বোর্ড বিশ্বাস করে, তরুণদের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া পর্যটনশিল্পের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
অনুষ্ঠানে মিশন গ্রিন বাংলাদেশের আহ্বায়ক আহসান রনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, স্থানীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে হবে। তরুণদের সম্পৃক্ত করে পর্যটন খাতে নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে আমরা সব সময় প্রস্তুত। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সহায়তায় দেশের তরুণদের নিয়েই এ রকম কাজ করতে চাই আমরা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা পর্যটন এলাকার পরিবেশবান্ধব অবস্থা নিশ্চিত করতে চাই।’
মিশন গ্রিন বাংলাদেশের প্রজেক্ট ডিরেক্টর আবুল বাশার মিরাজ বলেন, ‘সবুজায়ন পর্যটনবান্ধব এলাকার উন্নয়নে অপরিহার্য ভূমিকা রাখে। এটি শুধু পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে না, বরং বায়ুর মান উন্নয়ন এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের মাধ্যমে পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। পাশাপাশি, স্থানীয় জনগণের জীবিকা নির্বাহের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং টেকসই পর্যটনশিল্পের ভিত্তি স্থাপন করে। ‘মিশন গ্রিন বাংলাদেশ’ এই লক্ষ্যে কাজ করছে যাতে আমাদের পর্যটনশিল্প আরো পরিবেশবান্ধব ও সমৃদ্ধ হয়।’
কর্মশালা শেষে তরুণরা শহরের টাউন হল ময়দানে ক্লাইমেট স্ট্রাইক ও মানববন্ধনের আয়োজন করে। শুরুতে টাউন হলের সব দোকানদারকে পরিবেশ বিষয়ে সচেতন করা হয় ও তাদের ডাস্টবিন ব্যবহার ও আশপাশে স্থান পরিষ্কার করার জন্য বলা হয়। মানববন্ধনে বক্তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পর্যটন স্থানের দাবি জানান এবং একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সবুজ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান। দিনের শেষ ভাগে তরুণরা টাউন হল ময়দানে অবস্থিত শহীদ মিনার চত্বর পরিষ্কার করেন এবং এর সমানে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপণ করেন ও তরুণদের মাঝে গাছ বিতরণ করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
"