ক্যাম্পাস ডেস্ক
ত্রাণ নিয়ে বন্যাকবলিত এলাকায় পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা
ভারত থেকে আসা উজানের ঢলে দেশের কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। নানা সমস্যায় জর্জরিত এসব মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। অন্তত ১ হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে বন্যাকবলিত এলাকায় গেছেন তারা।
বুধবার (২৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টায় ট্রাকভর্তি ত্রাণসামগ্রী নিয়ে ফেনীর উদ্দেশে রওনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় সদস্যের একটি দল। বর্তমানে তারা কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালীর বিভিন্ন পয়েন্টে ত্রাণ পৌঁছে দিয়ে লক্ষ্মীপুরে অবস্থান করছেন।
উপহার হিসেবে তারা প্রত্যেক পরিবারের হতে তুলে দিচ্ছেন চাল, ডাল, তেল, সুজি, বিস্কুট, খেজুর, গুড়, চিনি, মুড়ি, চিড়া, পর্যাপ্ত শুকনো জামা-কাপড়, বিশুদ্ধ পানি, মোমবাতি, লাইটার ও লবণ। এ ছাড়া কয়েক প্রকারের ওষুধ ও স্যানিটারি ন্যাপকিনও রয়েছে তাতে।
প্রথমবারের মতো এত বড় উদ্যোগ নেওয়ায় পাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের সাধুবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা। তাদের এ কার্যক্রমে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবাই অংশ নিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
এ উদ্যোগকে পাবিপ্রবির জন্য বড় অর্জন আখ্যা দিয়ে অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মীর খালেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, আমাদের ছেলেরা নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন এলাকায় উপহারসামগ্রী বিতরণ করবে। আমরা শুনেছি ওই এলাকার মানুষদের রান্না করে খাওয়ার মতো অবস্থা নেই। তাই আমাদের শিক্ষার্থীরা শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করেছে, যা প্রায় ১ হাজার পরিবারকে দিতে সক্ষম হব বলে আশা করছি। বিষয়টি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আমাদের এই ছেলেগুলোর জন্য গর্ব হচ্ছে। আমি চাই এমন ভালো কাজের ধারা তারা যেন অব্যাহত রাখে।
এ উদ্যোগের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মামুন বলেন, সবার কাছে আমরা অনেক কৃতজ্ঞ। অনলাইন-অফলাইন মিলে কয়েক দিনে আপনারা প্রায় ১০ লাখ টাকা আমাদের দিয়েছেন। আমাদের দায়িত্ব এখন আমানতগুলো বন্যায় দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সবাই বন্যার সময়টুকুই নিয়ে ভাবেন। আমরা বন্যার পরবর্তী সময় নিয়েও ভাবছি। সেই খারাপ সময়ও আমরা কাটিয়ে উঠব আশা করছি।
তিনি বলেন, আমাদের একটি টিম ইতিমধ্যে বন্যাদুর্গত এলাকায় পৌঁছেছে। আমাদের কাজ শেষ হয়নি, চলমান রয়েছে। আমাদের কাছে এখনো ফান্ডিং রয়েছে, যা বন্যা-পরবর্তী পুনর্বাসন, উত্তরাঞ্চলের বন্যাকবলিত এলাকার জন্য ব্যয় করা হবে। পাবিপ্রবিতে এই প্রথম সবার অংশগ্রহণে একটি গঠনমূলক কাজে অংশ নিতে পেরে আনন্দ অনুভব করছি।
পাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা সবাই এক হয়ে কাজ করছেন। একটি টিমের সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে গণত্রাণ সংগ্রহ করছেন এবং বাকি টিমের সদস্যরা ফেনী, খাগড়াছড়ি ও পাইকগাছার পানিবন্দি মানুষেরের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন।
"