তারানা তানজিনা মিতু, পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
বন্যার্তদের পাশে পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা
ভারতীয় পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যায় দেশের ১১টি জেলার ৭৪টি উপজেলা প্লাবিত। লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। জলমগ্ন থাকায় বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে অধিকাংশ এলাকা। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাও প্রায় ভেঙে পড়েছে। এই বন্যায় এখন পর্যন্ত ৫৩ জন মারা যাওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
‘বানের পানিতে চোখের জল, বিপদের দিনে একতাই বল’- স্লোগান সামনে রেখে বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নেন। চার দিন ধরে চলে এই কার্যক্রম। চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে শিক্ষার্থীরা দুই লক্ষাধিক টাকা সংগ্রহ করেন। শিক্ষার্থীরা নিরলস পরিশ্রম করে খাদ্য সংগ্রহ, ত্রাণ প্যাকেজিং এবং রান্নার কাজ করেছেন।
রবিবার (২৫ আগস্ট) বিভাগের দুটি দল মীরসরাই এবং ফেনীর বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার বিতরণ করে। এর আগে খাগড়াছড়ির দুর্গম বন্যাকবলিত এলাকায় বিভাগের ৮ সদস্যের একটি দল ত্রাণসামগ্রী নিয়ে পৌঁছায় এবং স্থানীয়দের মধ্যে খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করেন। এ ছাড়া বিকেলে ফটিকছড়ির পানিবন্দি এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও রান্না করা খাবার বিতরণ করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও বিভাগটির প্রভাষক তাসলিমা আক্তার ইরিন বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা নিরলসভাবে পরিশ্রম করছে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে। তাদের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার।
এ বিষয়ে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দিলরুবা আক্তার বলেন, এ ধরনের সংকটময় মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ জাতীয় ঐক্যের প্রতিচ্ছবি। ভবিষ্যতে এই শিক্ষার্থীরা মানবিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে বৈষম্যহীন দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ শুধু বন্যার্ত মানুষদের ত্রাণের সেবা দিতে নয়, বরং একত্রভাবে সমাজের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করার একটি উদাহরণ তৈরি করেছে। চট্টগ্রামের বন্যাকবলিত এলাকার বিভিন্ন স্থানে প্রায় সহস্রাধিক পরিবারের মাঝে খাবার সামগ্রী বিতরণের কাজ করছে এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগে পরামর্শ ও বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে পাশে ছিলেন বিভাগটির শিক্ষকরা।
"