প্রার্থী মন্ডল, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনা
গ্রামীণ সম্প্রচারের নতুন দিগন্তে একদিন
মেঘলা আকাশ, মাঝেমধ্যে এক পশলা বৃষ্টির আনাগোনা। আমরা সবাই সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়েছি। গন্তব্য আমাদের সাতক্ষীরা রেডিও নলতা ভিজিট। বলছিলাম নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি খুলনার সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের মিডিয়া এথিক্স অ্যান্ড ল’স কোর্সের শিক্ষার্থীদের কথা। বিভাগের শিক্ষক শ্রদ্ধেয় এম এম মুজাহিদ উদ্দীন স্যারের উদ্যোগে এই ভ্রমণের আয়োজন। এই ভ্রমণে আরো উপস্থিত ছিলেন বিভাগের প্রধান মুস্তাফিজুর রহমান ও প্রভাষক মতিউর রহমান। খুলনা শিববাড়ি থেকে ৮৬ কিমি দূরে সাতক্ষীরায় অবস্থিত রেডিও নলতা এফএম ৯৯.২। ১১টা নাগাদ আমরা সেখানে উপস্থিত হলাম। আমাদের উপস্থিতিতে রেডিও নলতায় কর্মরত কর্মকর্তারা সন্তুষ্ট হলেন। প্রথমেই আমরা তাদের স্টুডিও এবং অন্যান্য কক্ষ পরিদর্শন করলাম। এ ছাড়া স্মৃতি হিসেবে রেখে দিতে তাদের সঙ্গে স্টুডিওতে কিছু ছবি তুললাম। এরপর রেডিও নলতার স্টেশন ম্যানেজার সেলিম শাহরিয়ার আমাদের তাদের রেডিও স্টেশনের বিভিন্ন কার্যক্রম, প্রোগ্রাম, সুবিধা-অসুবিধাসহ আয়-ব্যয় খাত সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন এবং আমাদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরগুলো খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন। তারপর আমাদের শিক্ষকদের নিয়ে রেডিওতে একটি সুন্দর লাইভ প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়।
রেডিও স্টেশন ভিজিট শেষে জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করে এবার আমাদের পেট জানিয়ে দিচ্ছে দুপুরের ভোজনের কথা। তাই মুজাহিদ স্যারের পরিকল্পনা অনুযায়ী পাশেই একটি সুপরিচিত রেস্টুরেন্টে সবাই খেলাম। খাবারের আইটেমগুলোর মধ্যে মাছ ভর্তা এতটাই লোভনীয় ছিল যে মনে পড়তেই জিভে জল চলে আসে। যাই হোক, খাওয়ার পর্ব শেষ করে এবার চললাম দেবহাটা রূপসী বাংলা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রের উদ্দেশে। কিন্তু পথিমধ্যে দেখতে পেলাম নলতা খান বাহাদুর আহসান উল্লাহর মাজার। তাই সেখানে না দাঁড়ালেই নয়। ১০ মিনিটের জন্য সবাই গাড়ি থেকে নেমে উপভোগ করলাম এই মাজার প্রাকৃতিক অতুলনীয় সৌন্দর্য। আবার যাত্রা শুরু।
অবশেষে পৌঁছে গেলাম প্রকৃতির সেই অপরূপ সৌন্দর্যে বেষ্টিত দেবহাটা ম্যানগ্রাভ পর্যটন কেন্দ্র, যা মিনি সুন্দরবন নামে খ্যাত। মনে হলো কোনো এক কল্পনার জগতে হারিয়ে গেছি। মনের মধ্যে বেজে উঠল- ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি’।
যাই হোক, সমস্ত জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পর্যটন কেন্দ্রের গা ঘেঁষে বয়ে চলা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত, ইছামতী নদীতে নৌকা ভ্রমণে উঠে পড়লাম। নদীর সরলতায় নিজেদের ভাসিয়ে দিলাম ১ ঘণ্টার জন্য। এরপর পশ্চিমের আকাশ জানিয়ে দিল এবার আমাদের ফিরে যাওয়ার সময় উপস্থিত। অবশেষে এক ঝুলি স্মৃতি নিয়ে রওনা দিই আপন গন্তব্যে।
"