reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৬ নভেম্বর, ২০২৩

৪৫-এ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রভাতের ঘন কুয়াশার মাঝে হেমন্তের আগমনের মাঝে ৪৪ বছর পেরিয়ে ৪৫ বছরে পা দিতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ইসলামী শিক্ষার সঙ্গে আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের উচ্চশিক্ষায় ভূমিকা রাখতে উন্নত জাতি গঠনের লক্ষ্যে বিশ্বমানের দক্ষ নাগরিক গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ৪৫তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তি সম্পর্কে তুলে ধরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রুহুল আমিন

রোল মডেল হোক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবেগ ও ভালোবাসার জায়গা। চির সবুজ ১৭৫ একরে আছে মনভোলানো সুর। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭৯ সালে ২২ নভেম্বর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি স্থাপন করা হয়। আর সূচিত হয় হাজারো শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার স্বপ্ন। দীর্ঘ সময়ের পরিক্রমায় প্রিয় ক্যাম্পাসে হয়েছে ব্যাপক পরিবর্তন। সার্বিক উন্নতিসহ প্রাতিষ্ঠানিক ইমেইল, অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রটোকলের ব্যবস্থা সবকিছু প্রশংসার দাবিদার। তবু শিক্ষার্থীদের আরো প্রত্যাশা থেকেই যায়। চাই উন্নতমানের প্রযুক্তি, গবেষণামূলক প্রতিযোগিতা, বন্ধুত্বপূর্ণ ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক, আবাসন সংকট মুক্ত, বাসের অপ্রতুলতা, অবকাঠামোমূলক উন্নতি, কালো রাজনীতিসহ সব অপ্রতিরোধ্য বিষয় থেকে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আরো সমৃদ্ধ হোক ইবি। প্রত্যাশার সঙ্গে প্রাপ্তির সমন্বয় ঘটুক। রোল মডেল হোক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এমনটাই প্রত্যাশা।

মাহমুদা টুম্পা

শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

সেশনজট শূন্যের কোঠায় আসুক

উন্নত ও দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটির সুবিশাল লাইব্রেরি, সংস্কৃতিমনা ও পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাসসহ যেমন রয়েছে, নানা গৌরব তেমনি রয়েছে নানা প্রতিবন্ধকতা।

প্রতিষ্ঠার এত বছরেও কিছু অপূর্ণতা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। আবাসন সংকট, সেশনজট, মাত্রাতিরিক্ত ভর্তি ফি ও বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিশ্বমানের শিক্ষা ও গবেষণা নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়টি। শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, লাইব্রেরিতে প্রবেশের নীতিমালা ও বিভিন্ন ফি প্রদানে সনাতন পদ্ধতিই বলে দেয় প্রাপ্তির চেয়ে প্রত্যাশার ভাণ্ডার অনেক ভারী। আগামীর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখতে চাই রাজনীতি মুক্ত, যেখানে ছাত্ররা ভিন্নমত লালন করবে, শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি বন্ধ হবে, সেশনজট শূন্যের কোঠায় নিয়ে এসে শিক্ষা ও গবেষণার মান বাড়িয়ে বিশ্ব মানচিত্রে তুলে ধরবে উজ্জ্বলভাবে। এই প্রত্যাশায় শুভ জন্মদিন প্রিয়তমা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

আশিকুর রহমান

শিক্ষার্থী, আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রত্যাশাপ্রাপ্তির মাপকাঠিতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

অপ্রত্যাশিতভাবে সুযোগ করে নেওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭৫ একরে শুরুতেই যে অনেক রকম প্রত্যাশা ছিল তা বলব না। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির তালিকা ক্রমেই বেড়েছে। প্রাপ্তির কথা বললে প্রথমেই বলতে হয় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হতে পারাটাই আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। তবে আমি চাই সাংস্কৃতিক এবং শিক্ষাগত উভয় দিক থেকেই আরো উন্নত হোক এবং দক্ষ জনবল গড়ে তুলুক। বিশ্বমঞ্চে একটি দুর্নীতিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নজির স্থাপন করুক।

তনিমা খাতুন

শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

সাফল্যের পথে এগিয়ে যাক

সমাজের সর্বস্তরে মুক্তবুদ্ধির চিন্তা ছড়িয়ে দেওয়াই হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। ঠিক এমনই উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ৪৫ বছরে পা দিচ্ছে আবেগের এই বিদ্যাপীঠ। বিগত ৪৪ বছরে অসংখ্য সমস্যায় জর্জরিত থেকেও স্বমহিমায় ঔজ্জ্বল্য ছড়িয়েছে প্রিয় ক্যাম্পাস। দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি, আধুনিক শিক্ষার বিস্তার, শিক্ষা সহায়ক কার্যক্রমসহ দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৪৫ বছরে প্রাপ্তির খাতায় পূর্ণতার চেয়ে অপূর্ণতার পাল্লাটাই যেন বেশি ভারী! গবেষণা হীনতা, আবাসন সংকট, পরিবহন সমস্যা, অপ্রতুল চিকিৎসাসেবা, অপরাজনীতি, মাদকের বিস্তার, ইন্টারনেট সমস্যাসহ নানান সমস্যায় জর্জরিত প্রতিষ্ঠানটি। ইতিহাস-ঐতিহ্য ও গৌরবের আরেকটি অধ্যায়ের সূচনায় অতীতের সব অপ্রাপ্তি, অপূর্ণতা আর বাধা কাটিয়ে সাফল্যের সঙ্গে সামনের দিকে এগিয়ে যাক ভালোবাসার প্রিয় ক্যাম্পাস- এটাই প্রত্যাশা।

জিহাদুল ইসলাম

শিক্ষার্থী, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রাপ্তিতে আমার বিশ্ববিদ্যালয়

বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডিতে এসে আমার প্রত্যাশার থেকে প্রাপ্তি বেশি। বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে দিয়েছে নিজস্ব পরিচয়, দিয়েছে নিজেকে সুন্দর মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অবাধ স্বাধীনতা, দিয়েছে উচ্চমাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় সুযোগ করে দিয়েছে জ্ঞানচর্চা করার। স্কুল কিংবা কলেজে ইচ্ছে করলেই যেমন সমাজের মানুষদের জন্য কিছু করার সুযোগ পেতাম না বিশ্ববিদ্যালয়ে তা অনায়াসেই পেয়েছি। পেয়েছি সমাজের জন্য কিছু করার অনুপ্রেরণা। প্রত্যাশার থেকে প্রাপ্তি যখন বেশি হয়ে যায় তখন আবার প্রাপ্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রত্যাশাও বেড়ে যায়। ঠিক তেমনটিই ঘটেছে আমার ক্ষেত্রেও, এই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রত্যাশা বেড়ে গেছে দ্বিগুণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এই প্রত্যাশা যে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য আরো বেশি অনুপ্রেরণামূলক হয়ে উঠবে, শিক্ষার্থীদের তৈরি করে দেবে সেই পরিবেশ, যে পরিবেশ থেকে একজন শিক্ষার্থী প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে এবং রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদে পরিণত হবে। শিক্ষার্থীদের মুক্তবুদ্ধি চর্চার কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটাবে বিশ্ববিদ্যালয়।

সামিয়া জামান

শিক্ষার্থী, আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close