মুরাদ হোসেন, হাবিপ্রবি

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

হাবিপ্রবির মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য চারটি অ্যাওয়ার্ড

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রমে উৎসাহিত করতে মেধার স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চারটি অ্যাওয়ার্ড দেবে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) প্রশাসন।

পূর্ব থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ডিন’স লিস্ট অ্যাওয়ার্ড চালু থাকলেও ৫৪তম রিজেন্ট বোর্ডে নতুন তিনটি অ্যাওয়ার্ড চালু করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সভায় প্রবর্তিত নতুন তিনটি অ্যাওয়ার্ড হলো, ডিন’স মেরিট অ্যাওয়ার্ড, ভাইস-চ্যান্সেলর্স মেরিট অ্যাওয়ার্ড এবং চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড। উল্লেখিত চারটিতেই মনোনীত শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে।

কোনো শিক্ষার্থী একটি একাডেমিক বর্ষে পরপর দুটি সেমিস্টারে কোনো কোর্সে এফ গ্রেড ছাড়া গড় সিজিপিএ ৩.৭৫ (৪ এর মধ্যে) বা এর বেশি পেলে সে শিক্ষার্থী ডিন’স লিস্ট অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হবে। এর আগে এ অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বছরে বারোশত টাকার মেধাবৃত্তি পেত; রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেটাকে বাড়িয়ে দশ হাজার টাকা করা হয়েছে।

তবে, একই একাডেমিক বর্ষে ডিন’স মেরিট অ্যাওয়ার্ড পাওয়া শিক্ষার্থী ডিন’স লিস্ট অ্যাওয়ার্ডের জন্য মনোনীত হবে না। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম না মানায় শাস্তিপ্রাপ্ত কিংবা কারণ দর্শানো নোটিশ পাওয়া শিক্ষার্থীরা এই পুরস্কার পাবেন না।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রবর্তিত নতুন অ্যাওয়ার্ডগুলোর মধ্যে ডিন’স মেরিট অ্যাওয়ার্ড পেতে হলে শিক্ষার্থীদেরকে একটি একাডেমিক বর্ষে পরপর দুটি সেমিস্টারের প্রতিটিতে কোনো এফ গ্রেড ছাড়া সর্বোচ্চ গড় সিজিপিএ অর্জন করতে হবে। তবে এই পুরস্কার পেতে হলে শিক্ষার্থীদেরকে পরপর দুটি সেমিস্টারেই সিজিপিএ ৩.৭৫ বা এর বেশি পেতে হবে। এবং দুটি সেমিস্টারের সিজিপিএ এর যোগফল টিসিজিপিএ ৭.৫ বা এর বেশি হতে হবে। এর বেশি টিসিজিপিএ অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে সর্বোচ্চ টিসিজিপিএ অর্জনকারী শিক্ষার্থী এই পুরস্কার পাবেন। তবে এতে একাধিক শিক্ষার্থীর টিসিজিপিএ সমান হলে শতকরা অনুপাতে বেশি মার্কস পাওয়া শিক্ষার্থী এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হবেন। এ অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা পনেরো হাজার টাকার মেধাবৃত্তি পাবেন।

একটি অনুষদের একটি ব্যাচের সব সেমিস্টারের ফলাফলে কোনো এফ গ্রেড ছাড়া সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনকারী শিক্ষার্থী পাবেন ভাইস-চ্যান্সেলর্স মেরিট অ্যাওয়ার্ড। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবনের প্রতিটি সেমিস্টারে শিক্ষার্থীদেরকে ন্যূনতম ৩.৭৫ সিজিপিএ পেতে হবে। সর্বোচ্চ সিজিপিএ (অনুষদের সর্বোচ্চ সিজিপিএ) অর্জনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা একাধিক হলে শতকরা মার্কসে এগিয়ে থাকা শিক্ষার্থীরা এ পুরস্কার পাবেন। ভাইস-চ্যান্সেলর্স মেরিট অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বিশ হাজার টাকার মেধাবৃত্তি পাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ব্যাচের মধ্যে সব অনুষদের সব সেমিস্টারের ফলাফলে কোনো এফ গ্রেড ছাড়া সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনকারী শিক্ষার্থী পাবেন চ্যান্সেলর্স গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড। তবে এই পুরস্কার পেতে হলে প্রতিটি সেমিস্টারেই শিক্ষার্থীদেরকে নূন্যতম সিজিপিএ ৩.৭৫ করে পেতে হবে।

এ অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা একুশ ক্যারেটের পাঁচ গ্রাম সোনাসহ নগদ ৫০ হাজার টাকার মেধাবৃত্তি পাবেন। সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা একাধিক হলে শিক্ষার্থী শতকরা অনুপাতে বেশি মার্কস পাওয়া শিক্ষার্থী এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হবেন। এরপরও দুজন শিক্ষার্থী সমান স্থান অর্জন করলে দুজনই এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হবেন।

নতুন তিনটি অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সেমিস্টারে কোনো ‘এফ’ গ্রেড থাকলে এবং রিপিট সেমিস্টার থাকা শিক্ষার্থীরা এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হবেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে শাস্তিপ্রাপ্ত, লিখিত সর্তকতা পাওয়া শিক্ষার্থীরাও এই পুরস্কারের জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। এছাড়া এসব পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হতে হলে শিক্ষার্থীদেরকে প্রতিটি একাডেমিক বর্ষের একটি সেমিস্টারে কমপক্ষে একটি ক্লাবে বা কো-কারিকুলার কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশোনায় উৎসাহিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগে আমরা পড়াশোনায় আরো উৎসাহিত হচ্ছি। এমন দারুন উদ্যোগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রশাসনের শিক্ষার্থীবান্ধব চিন্তার এমন প্রতিফলনের ধারা অব্যাহত থাকুক এ প্রত্যাশা করি।

এ বিষয়ে বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. ইয়াছিন প্রধান বলেন, এধরনের পুরস্কারের প্রচলন অত্যন্ত যুগোপযোগী ও আনন্দের। এতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় উৎসাহিত হবে এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়বে।

এর ফলশ্রুতিতে শিক্ষার মান বাড়বে। সেই সঙ্গে মেধাবীদের জন্য এটি ভালো অর্থনৈতিক সহযোগিতা হিসেবে থাকবে।

শিক্ষার্থীদের জন্য এধরনের পুরস্কারের প্রচলন করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়কে অসংখ্য ধন্যবাদ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close