মোছা. জান্নাতী বেগম, জাকানবি
নবীনদের আগমনে মুখরিত নজরুলের আঙিনা
প্রতিবারের মতো এবারও নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন ঘটেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের এ যাত্রা শুরু হয়। আগের দিন অর্থাৎ ৪ সেপ্টেম্বর থেকেই নবীনদের পদচারণ দেখা গিয়েছিল ক্যাম্পাসে। এ যেন বাবা-মা-প্রিয়জনদের ছেড়ে স্বপ্নপূরণের জন্য এক নতুন যাত্রা। ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের দিন সকালে থেকেই নতুন শিক্ষার্থীদের দেখা যায়। কেউ একা এসেছে, কেউ কেউ আবার সঙ্গে নিয়ে এসেছে তাদের অভিভাবককে।
অনুষ্ঠানের শুরু হওয়ার পর ২৪টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে তাদের নিজ নিজ বিভাগ থেকে প্রাতিষ্ঠানিক ক্যালেন্ডার, কলম ও ডায়েরি দিয়ে বরণ করা হয়।
নবীন শিক্ষার্থীদের সবার চোখে ছিল খুশির আমেজ। দীর্ঘ বারো বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং স্বপ্নের পূর্ণতা যেন খুশির আমেজকে শতগুণ বাড়িয়ে তুলেছে।
নবীন শিক্ষার্থীদের আগমন ক্যাম্পাসকে যেন এক নতুন রূপ দান করেছে। বিকেল থেকে দেখা যায় নবীনদের আনাগোনা। ক্যাম্পাসের নজরুল ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য, জয়বাংলা ভাস্কর্য, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে, খেলার মাঠে এবং জয়ধ্বনি মঞ্চের পাশে তাদের আড্ডা দিতে দেখা যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন চায়ের দোকান যেমন- কলাবাগান, জ্ঞানের গলি, চিকনার মোড়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় গেটসহ সর্বত্রই তাদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। আড্ডায় ইমিডিয়েট সিনিয়র এবং জুনিয়রদের মধ্যে পরিচয়পর্ব চলে। পাশাপাশি আড্ডা, গান, গল্প তো আছেই।
ক্যাম্পাসে আসার অনুভূতি জানতে চাইলে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী মারিয়া ভুঁইয়া বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা প্রায় প্রতিটি শিক্ষার্থীরই স্বপ্ন। আমি আমার স্বপ্নপূরণ করতে পেরেছি। প্রথম যেদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করি, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য, নির্মলতা, নির্জনতা আমাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বরাবরই আমার কাছে একটু বেশি আবেগের! কারণ আমার প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি নির্মাণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলটি দেখলেই যেন চোখ জুড়িয়ে যায়! ভবিষ্যতে আমার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়টি শুধু জাতীয় পর্যায়েই নয় আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আরো বেশি খ্যাতি অর্জন করবে বলে আমি আশাবাদী।’
নবীনদের মধ্যে আরেকজন ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আসাদুল্লাহ আল গালিব তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার অনুভূতি জানিয়ে বলেন, ‘ভর্তি যুদ্ধ পার করার পর যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলাম, আমার মনে হয়েছে আমি এখন সবচেয়ে সুখী মানুষ। তারপর ক্যাম্পাসে এসে নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশ, নতুন বন্ধু-বান্ধব, বড় ভাই আপুদের সঙ্গে সময় কাটানো সবকিছু মিলিয়ে অসাধারণ অভিজ্ঞতা। ভালো লাগার পাশাপাশি বাসা ছেড়ে এত দূরে আসার বিষাদও কাজ করছে। সব মিলিয়ে এ এক অন্য অনুভূতি যা লিখে প্রকাশ করা অনেক কষ্টসাধ্য।’
"