মো. আশরাফুল ইসলাম সুমন

  ৩১ মে, ২০২৩

হাজারো মানুষের বিশ্বাসে তিন বন্ধুর ‘ট্রাস্ট আস’

‘সফলতা’ একটা চার বর্ণের ছোট শব্দ। কিন্তু এর পেছনে মানুষের যে শ্রম, ত্যাগ, সাধনা থাকে তার বিশালত্ব আমরা কম-বেশি সবাই উপলব্ধি করতে পারি। মন থেকে মানুষ কিছু করার তাড়না অনুভব করলে স্রষ্টা তাকে কখনো নিরাশ করেন না। অস্তিত্বের মিছিলে আমরা সবাই সংগ্রামী। কিন্তু হাল ছেড়ে দিলে চলে না। জয়ের জন্য সবচেয়ে আগে প্রয়োজন পরাজয় মেনে নেওয়ার মানসিকতা। শুরুটাই তো আজকের মতো ছিল না। একটি ছোট স্বপ্ন আর একরাশ ইচ্ছে- গল্প বললে গল্পের শুরু এখানেই। কথাগুলো বলছিলেন ‘ট্রাস্ট আস’-এর ফাউন্ডার জাওয়াদ আরাফ খান।

করোনাকালে যখন বিশ্ব ধুঁকছে, চারদিকে শুধু হতাশা, ঠিক সে সময় ট্রাস্ট আস শুরুর পরিকল্পনা করেন জাওয়াদ ও তার বন্ধুরা। ২০২০-এর জুনে শুরু এই পথচলা আজ যা হাজার হাজার মানুষের এক ভরসার নাম। এই পথচলার পেছনে রয়েছে ৩ কারিগর। জাওয়াদ আরাফ খান, রাইয়ান আযমী ও মারজান আযমী। জাওয়াদ আরাফ খান পড়ছেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি বিবিএ ৩য় বর্ষে। রাইয়ান ও মারজান যমজ দুই বোন। তারা পড়াশোনা করছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এ ফার্মেসি বিভাগে ৩য় বর্ষে। এমন উদ্যোগের কথা জানতে চাইলে তারা বলেন, অন্য ৫টা শিক্ষার্থীর মতো তারা হতে চান না। শুধু পাঠ্যপুস্তকে নয়, সবদিক থেকেই হতে চান অনন্য। নিজেদের অবস্থান তৈরি করার ইচ্ছায়, নিজেদের স্কিল নিজেদের বিকাশের জন্য তাদের এই উদ্যোগ। তাদের এই কাজগুলো বিভিন সেক্টরে ভাগ করা। অপারেশনাল কাজে রয়েছেন জাওয়াদ, মার্কেটিং এবং সেলস-এ রাইয়ান ও মারজান। ট্রাস্ট আস মূলত একটি লাইফস্টাইল ও হোম ডেকর শপ। এখানে আপনি পাবেন আপনার মন ভালো করার মতো শখের জিনিস, যা আপনার প্রতিদিনকার লাইফস্টাইল কিংবা চারপাশকে করবে তুলনাহীন ও মনোমুগ্ধকর। তারা এখন পর্যন্ত প্রায় দশ হাজারের অধিক ক্রেতার দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন তাদের পণ্য। এই উদ্যোগের সঙ্গে আছে তাদের অগাধ পরিশ্রম, রাত জেগে জেগে নিত্যনতুন পণ্যর ভাবনা এবং তা পৌঁছে দেওয়া কাস্টমারের দোরগোড়ায়। জাওয়াদ বলেন, ‘এই ব্যবসা তাকে চাপের সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে। বিবিএতে যা পাঠ্যক্রমে শেখা হয় তার হাতে কলমে প্রয়োগ হয় এবং বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশে নিজেদের প্রমাণের সুযোগ মেলে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা মূলত চায়না, থাইল্যান্ড, ইউকে এবং আমেরিকার বিভিন্ন ফ্যাক্টরি থেকে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে পণ্য আমদানি করে থাকি। আমাদের রিসার্চ এবং ডেভেলপমেন্ট টিম সব সময় এমাজন কিংবা টিকটকের ট্রেন্ডি বিভিন্ন প্রোডাক্ট লিস্ট করে থাকে। এ ছাড়া যেসব পণ্য আমরা নিজেরাও মনে করি বাংলাদেশের মার্কেটে ভালো সাড়া পাবে সেগুলো ফ্যাক্টরি থেকে সরাসরি আমদানি করে থাকি। যেহেতু আমরা থার্ড পার্টি কোনো সাপ্লাইয়ার থেকে নেই না, তাই সর্বনিম্ন মূল্যে আমরা আমাদের কনজ্যুমারদের সার্ভ করতে পারি।’ তিনি বলেন, অনেক ফ্যাক্টরির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে এবং ট্রাস্ট আস টিমকে তারা বেশ কয়েকটি ইভেন্টেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

রাইয়ান বলেন, ‘ট্রাস্ট আস-কে গড়ে তুলতে গিয়ে জীবনে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ জয় করার মানসিকতা তৈরি হয়েছে। সেগুলোকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। মানুষকে সাহায্য করতে চাই ও তরুণদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই। বর্তমানে আমাদের টিম খুব একটা বড় না হলেও বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীদের পার্টটাইম কাজ শেখার এবং স্বনির্ভরশীল হওয়ার সুযোগ দিয়ে আসছি।’

মারজান বলেন, ‘এ ছাড়া যারা হয়তো ছোট পরিসরে অনলাইন প্ল্যাটফরমগুলোতে আসছে নিজের মতো কিছু করতে তাদেরও আমরা আমাদের পণ্য হোলসেল রেটে সীমিত লাভে দিচ্ছি, যাতে তারা নিজেদের ব্যবসাকে দাঁড় করাতে পারে। সেই সঙ্গে তাদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা এবং গাইডেন্স দিয়ে থাকি যাতে তারা সফলতা অর্জন করতে পারে।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close