আবু হাসনাত তুহিন, পবিপ্রবি

  ৩০ মে, ২০২৩

পবিপ্রবির সফল উদ্যোক্তা যোবায়ের আহম্মেদ নীল

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) একজন সফল উদ্যোক্তা কৃষি অনুষদের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী নওগাঁর যোবায়ের আহমেদ নীল। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি এখন কাজ করছেন ফলের রাজা আম নিয়ে।

শুরুটা কীভাবে হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুরুটা বলতে গেলে করোনার সময় যখন চারদিকের পথ বন্ধ। বাবাও একটা প্রাইভেট স্কুলে জব করত বেতন পেত না। ঠিক সেই মুহূর্তে ভাবা নিজের কিছু একটা করা উচিত। তারপর সেই ২০২০ সাল থেকে শুরু করলাম। আসলে ফ্যামিলি ক্রাইসিসই মূলত শুরুর কারণ। তবে নিজের আর্থিক সচ্ছলতা আর বাংলাদেশের চাকরির বাজারে ভয়াবহ অবস্থা দেখে মনে হয়েছে নিজে একজন উদ্যোক্তা হই। মূলত সেই কারণেই শুরু করা। আর মার্ক জাকারবার্গ থেকে শুরু করে ইলন মাস্ক এসব মানুষগুলো আমাকে বিজনেসের দিকে মোটিভেট করেছে।’

আপনি যেহেতু শিক্ষার্থী ব্যবসার ফান্ড জোগাড় করলেন কীভাবে এটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথমে একদমই ফান্ড ছিল না। জাস্ট আইডিয়াটা মাথায় এলো এবং ফেসবুকে মার্কেটিং করলাম। সেই থেকে শুরু। তবে ফেসবুকের মার্কেটিং থেকে কিছু আম বিক্রি হতো, যা থেকে কিছু লাভ হতো। এই লাভ থেকেই ফান্ড আসতে থাকল। লাভের সম্পূর্ণ অংশ ইনভেস্ট করে দিনে দিনে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়েছি।’

আপনার ক্রেতা কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় শুধু অনলাইনে কুরিয়ার করতাম তো সেভাবে তেমন একটা সাফল্য আসছিল না। তারপর অফলাইন-অনলাইনে সরবারহ শুরু করলাম। পাইকারি কেনাবেচা শুরু করলাম। বর্তমানে mango fusion নামে একটা পেজ খুলেছি অনলাইনের জন্য আর অফলাইনে তো চালিয়ে যাচ্ছি কার্যক্রম। কুরিয়ারের মাধ্যমে সারা দেশে নিজস্ব বাগান থেকে কার্বাইডমুক্ত আম সরবারহ করে থাকি। আমাদের নওগাঁর সাপাহার বাজারেই আমার সব কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকি। বর্তমানে আড়তও নিয়েছি।’

লাভ-ক্ষতি কেমন হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে খুব একটা লাভ না হলেও ধীরে ধীরে পরিচিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লাভের গ্রাফও ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। গত বছর আমের মৌসুমে ২ টন আম সারা দেশে সরবরাহ করি। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো লাভ করি। বর্তমান মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা পাইকারি ও খুচরা মিলিয়ে ৮ টন আম সরবরাহ করা। এ ছাড়া এই সেক্টরে কাজ করছেন অনেক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বেকার যুবক, যারা সারা বছরই আমের বাগান দেখাশোনা ও পরিচর্যা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের ছাত্র বলে আমি একটি অপরচুনিটি পেয়েছিলাম, তাই এটিকে আমি সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।’

তার স্বপ্ন কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি জেলায় এক দিন আমার আম সরবরাহ হবে। সরাসরি বাগান থেকে যেকোনো ধরনের মেডিসিনমুক্ত নিরাপদ স্বাস্থ্যসম্মত আম দেশের স্বাস্থ্যসচেতনদের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। কাজ নিয়ে আরো বেশি জ্ঞান আহরণ করে দক্ষ হতে চাই, যাতে করে সব ধরনের বাধা মোকাবিলা করে নিজের একটি অবস্থান তৈরি করতে পারি।’

নতুনদের জন্য তিনি বলেন, ‘এই সেক্টরটি খুব ঝুঁকিপূর্ণ। সচেতন থাকতে হবে যথেষ্ট পরিমাণে। আম সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান ছাড়া এই সেক্টরে আসা অনুচিত। সব সময় ক্রেতার স্যাটিসফেকশনের চিন্তা মাথায় রাখতে হবে। পর্যাপ্ত জ্ঞান ছাড়া এই সম্ভাবনাময় সেক্টরে এলে হোঁচট খাওয়ার শঙ্কাই বেশি বলে মনে করি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close