আল মাসুম হোসেন, কুবি

  ২৮ মে, ২০২৩

আঠারোতে পৌঁছাল কুবি

মায়া জুড়ানো, স্নিগ্ধতার পরশ ছোঁয়ানো ছোট-বড় লালমাটির পাহাড় ও গাছপালার ছায়ায় ঘেরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। যেখানে ১৯টি ডিপার্টমেন্টে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আাসা প্রায় সাত হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। ফলে জাতিগোষ্ঠী, ধর্ম ও আঞ্চলিকতার মিশ্রণ ঘটে খুব সহজে। ক্যাম্পাসে প্রবেশের জন্য প্রথমে পেরোতে হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় খোদাই করা বড় গেট। কিছুটা এগোতে সামনে পড়ে গোল চত্বর, যার হাতের ডানে অবস্থান করে প্রশাসন ভবন ও ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি। গোল চত্বর থেকে সোজা পাহাড় বেয়ে উঠলে হাতের ডান পাশে ব্যবসা শাখার ভবন ও বাম পাশে মানবিক শাখার ভবন আর পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান করে বিজ্ঞান শাখা ও প্রকৌশল শাখার ভবন। বাম পাশে দিয়ে যেতে সবার প্রথমে চোখে পড়ে মুক্তমঞ্চ যেখানে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন ধরনের কালচারাল প্রোগ্রাম।

জারুলগাছে ঘেরা রাস্তা দিয়ে সামনে গেলে প্রথমে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া, দ্বিতীয়ত, বঙ্গবন্ধু হল তারপর হাতের ডান পাশে কেন্দ্রীয় মসজিদ। সবশেষে লাল সবুজে ভরা কৃষ্ণচূড়া রোড শহীদ মিনারে নিয়ে যায়, যার সামনে অবস্থান করে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে ৫টি হলের ব্যবস্থা যার মধ্যে বঙ্গবন্ধু হল, দত্ত হল, কাজী নজরুল হল ছাত্রদের জন্য ও শেখ হাসিনা হল, নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ। শিক্ষকদের থাকার জন্য রয়েছে ডর্মেটরি এবং যাতায়াতের জন্য রয়েছে বাস। পড়ালেখার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তদাতা সংগঠন বন্ধু, সায়েন্স ক্লাব, ডিবেটিং সোসাইটি, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম, বিএনসিসি ইত্যাদি সব সংগঠন শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার সমৃদ্ধিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য রয়েছে নিজস্ব নীল বাস ও ভাড়ায়চালিত লাল বিআরটিসি বাস যেগুলো কুমিল্লা শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়া করে। কুবি ক্যাম্পাসে বর্তমানে মাত্র ৫০ একরে সব কার্যক্রম চলমান থাকলেও আরো ২০০ একরের নতুন ক্যাম্পাসের কাজ চলমান।

নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে কুবিতে শিক্ষার্থীদের তুলনায় শিক্ষকদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। আবার ভবনের সংখ্যা কম হওয়ায় ডিপার্টমেন্টগুলোর শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা খুবই কম। যে কারণে পাঠদান, পরীক্ষা ইত্যাদি বিঘিœত হয়। এই অবস্থায় শ্রেণিকক্ষের পাশাপাশি ল্যাব ফ্যাসিলিটি ও গবেষণার জন্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে যত সিট রয়েছে তা যথেষ্ট নয়। বাসের সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে কম, যার ফলে শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে যাতায়াত করতে হয়।

কৈশোর থেকে যুবক অর্থাৎ আঠারোতম বর্ষে পদার্পণ করল কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। নানা ধরনের প্রতিকূলতা কাটিয়ে ২০০৬ সালের ২৮ কোটবাড়ির সালমানপুরে শিক্ষাই শক্তি এই মোটো নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। অন্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয় নতুন। তাই শিক্ষার মান ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন ইত্যাদি সবকিছুতেই পিছিয়ে রয়েছে কুবি। উপরোক্ত উন্নয়নসমূহ সময়ের দাবি এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব দরবারে এগিয়ে যাবে এটাই শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close