আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা, জাবি

  ২৩ মে, ২০২৩

গ্রীষ্মে নতুন রূপে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ষড়ঋতুর এক একসময়ে এক এক রূপ ধারণ করে লাল ইটের এই ক্যাম্পাস। তেমনি গ্রীষ্মের আগুনঝরা দিনে বর্ণিল ফুলে বাহারি রূপে সেজেছে জাবি। যেদিকেই তাকানো যায় সে দিকেই রঙিন ফুলের হাতছানি। আবির খেলায় মত্ত এখন ৮০০ একরের এই প্রাঙ্গন। যেন একটুকরো স্বর্গ নেমে এসেছে পৃথিবীর বুকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেই পথের দুধারে নানা বর্ণের ফুল বরণ করে নেবে আগন্তুককে। শহীদ মিনার চত্বর, ছাত্রীদের আবাসিক হলের রাস্তা, ভিসি চত্বর, চৌরঙ্গী, পরিবহন চত্বরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আঙ্গিনা ছেয়ে গেছে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, জারুল, সোনালু, বাগান বিলাস, কাঠগোলাপ, অলকানন্দা, সোনাইল, নয়নতারা, মাধবীলতা, অপরাজিতা, কামিনি, জবা ফুলের বর্ণিল সৌরভে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে যেন রঙের ছড়াছড়ি। শুধু গাছেই নয়, একই সঙ্গে পুকুরেও শোভা ছড়াচ্ছে লাল পদ্ম। পরিবহন চত্বরের সংলগ্ন দুটি পুকুর, চৌরঙ্গীর পদ্মপুকুর, জহির রায়হান মিলনায়তন কেন্দ্রের পুকুর ছেয়ে গেছে লাল পদ্মে। সবাই একই সঙ্গে জানান দিচ্ছে গ্রীষ্মের উপস্থিতি। লাল, হলুদ, গোলাপি, বেগুনি, সাদা রঙে পরিপূর্ণ ক্যাম্পাস দেখলে মনে হয় কোনো চিত্রকর যেন আলতো করে রং তুলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়া দিয়ে গেছে। রঙিন প্রজাপতিরা ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে ফুল থেকে ফুলে। গাছের নিচে ঝরে পড়া রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি দেখলে মনে হয় কেউ যেন মুঠো মুঠো সিঁদুর ছিটিয়ে দিয়ে গেছে। প্রচন্ড তাপ দাহকে উপেক্ষা করে সবাই মেতে উঠেছে এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে। শিক্ষার্থীরাও প্রকৃতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেদের রঙিন করে তুলতে ব্যস্ত। ক্যাম্পাসের দর্শনীয় কেন্দ্রগুলোতে শিক্ষার্থীরা শাড়ি বা পাঞ্জাবি পরে মেতে উঠেছে ছবি তোলার উৎসবে। দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া ইমু বলেন, গ্রীষ্মের এই কাঠফাটা গরমেও একমাত্র স্বস্তির কারণ ক্যম্পাসে ফুটে থাকা বাহারি রঙের ফুল। জানালা দিয়ে দখিনা হাওয়ায় ভেসে আসে একরাশ কামিনি ফুলের সুবাস। খালেদা জিয়া হল থেকে চৌরঙ্গী বরাবর হাঁটার সময় আকাশের দিকে তাকালে মনে হয় মাথার ওপরে কৃষ্ণচূড়ার লাল কার্পেট ঝুলছে। শেখ হাসিনা হলের সামনে সোনালু ফুলগুলোর সৌন্দর্য এবারে জানান দিল কেন তাকে ইংরেজিতে গোল্ডেন শাওয়ার বলা হয়। এদের উপভোগ করতে করতে দিন আমার যাচ্ছে কেটে বেশ!

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরাও দলে দলে আসছে এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে কমে আসে রোদের তীব্রতা। দর্শনার্থীরা ভিড় জমান শহীদ মিনার, ভিসি চত্বর, পরিবহন চত্বরে। তীব্র গরমে সবার মনে নির্মল বায়ুর সুবাস বয়ে দিয়ে যায় এই সুন্দর প্রকৃতি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close