
তারুণ্যের চোখে বঙ্গবন্ধু

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই জাতিকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ার এক অজপাড়াগাঁয়ে সম্ভ্রান্ত বাপ-দাদার টিনের ঘরে জন্ম নেওয়া ‘রাখাল বালক’ অকুতোভয় শেখ মুজিব অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে জীবনের মূল্যবান সময় জেলহাজতে থেকে, পাকিস্তানি শাসক-শোষকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। মহান এ পুরুষকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন, তার আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ করা, প্রজন্মের কাছে তার নীতি-আদর্শ সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া সবার একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মদিন উপলক্ষে মহান নেতাকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কয়েকজন তরুণ শিক্ষার্থীর ভাবনা তুলে ধরেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ
তারুণ্যের মুজিব, তারুণ্যের বাংলাদেশ
যে তারুণ্য আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার, আমাদের স্বপ্নপূরণের অদম্য মনোবল সৃষ্টি করে, সেই তারুণ্যে মিশে আছে ‘বঙ্গবন্ধু’ নামটি। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সাহসী পররাষ্ট্রনীতি, সততা আর দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা তরুণরা গড়ব নতুন সোনার বাংলা। বঙ্গবন্ধুর মূল আদর্শ ছিল দুর্নীতির বিরুদ্ধে ন্যায়নীতির সমাজ প্রতিষ্ঠা, সামাজিক সাম্যভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। বাঙালির চেতনাবোধ, সচেতনতার অহঙ্কবোধ, বিবেচনাবোধ প্রতিষ্ঠিত হোক দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার শপথ গ্রহণের মাধ্যমে। মুজিব আদর্শে তরুণ একাত্ম দেশপ্রেমীদের এটাই হোক প্রত্যাশা।
মো. মুরাদ হোসেন
শিক্ষার্থী, রসায়ন বিভাগ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিনাজপুর
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক অবিচ্ছেদ্য নাম
বাংলাদেশের সৃষ্টির শুরু থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বঙ্গবন্ধুর সুদক্ষ নেতৃত্ব ও সুনিপুণ সিদ্ধান্ত বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে বেগবান করেছে। বঙ্গবন্ধু আজ বেঁচে না থাকলেও তার দেখানো পথ ধরে সোনার বাংলার পথে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক মুক্তি, বাকস্বাধীনতা, নারী-পুরুষ সমণ্ডঅধিকারের মতো বিষয়গুলো অনেকাংশেই বাস্তবায়ন হয়েছে। শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তিতে বঙ্গবন্ধুর দেখানো স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২-এর উৎক্ষেপণের পথে বাংলাদেশ। যুদ্ধ-পরবর্তী একটি বিধ্বস্ত দেশ দৃঢ় নেতৃত্বে গড়ে তুলেছেন। স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে ৪ হাজার ৬৮২ দিন কারাভোগ দেশের ও দেশের মানুষের প্রতি তার ভালোবাসার একটি অনন্য বহিঃপ্রকাশ। যত দিন বাঙালির ইতিহাস থাকবে, তত দিন বঙ্গবন্ধু থাকবেন অমর-অবিনশ্বর।
সাদমান সাদিক
শিক্ষার্থী, লেদার প্রকৌশল বিভাগ
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
রাজনীতির মঞ্চে কিংবদন্তি শেখ মুজিব
বাংলার রাখাল রাজা, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার রূপরেখা ঘোষণা করে দেশের মানুষকে আলোর মুখ দেখিয়েছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অগ্নিঝরা ৭ মার্চের ভাষণে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনে। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের মধ্যেই শেখ মুজিবুর রহমান নামটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাংলাদেশের মানুষকে শোষণ-নিপীড়নের হাত থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে সামনে এগিয়ে নিয়েছেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা, ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তিনি অসামান্য ভূমিকা পালন করেন। বর্তমানে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি করেছে। সামনেও সব অপশক্তিকে চ্যালেঞ্জ ও মোকাবিলা করে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে এই প্রত্যাশা করি।
আবুল বাশার
শিক্ষার্থী, কৃষি অনুষদ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিনাজপুর
বাঙালির পথপ্রদর্শক বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান এ দেশের জন্য অসামান্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির নামের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক অবিচ্ছেদ্য নাম। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের পথপ্রদর্শক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর অমর কীর্তি। বাঙালি জাতির জন্ম যদিও হয়েছে হাজারো বছর পূর্বে; কিন্তু জাতি হিসেবে বাঙালির কোনো স্বীকৃতি ছিল না, পৃথক জাতিসত্তা হিসেবে কোনো পরিচিতি ছিল না, বাঙালি জাতির স্বাধীন কোনো ভূখণ্ডও ছিল না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিকে পৃথক জাতি হিসেবে বিশ্বে পরিচিত করেছেন, পৃথক জাতিসত্তা হিসেবে বাঙালি পরিচিতি পেয়েছে, বাঙালি জাতি রাষ্ট্রও বঙ্গবন্ধুর মাধ্যমে হয়েছে। তাই তো তিনি বাঙালি জাতির পিতা।
মো. লিমন আহমেদ
শিক্ষার্থী, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
বঙ্গবন্ধুর অপূর্ণ স্বপ্নপূরণই লক্ষ্য
১৯২০ সালের ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়। প্রতিটি দেশেরই একজন ন্যাশনাল আইকন প্রয়োজন। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে সব জাতীয় নেতা সব দেশে সমানভাবে সমাদৃত হয় না। দেশভেদে তাকে পড়তে হয় নানা কঠোর সমালোচনায়। একমাত্র বঙ্গবন্ধুই এমন একজন নেতা ছিলেন যার প্রশংসায় ফিদেল কাস্ট্রো থেকে এডওয়ার্ড হিথ পর্যন্ত পঞ্চমুখ ছিলেন। ঘোর রাজনৈতিক বিরোধীরা পর্যন্ত কখনো তার সমালোচনা করতে পারেননি। বর্তমানের রাজনীতিকরা তার ত্যাগ, বিচক্ষণতা, মানবদরদি সর্বোপরি ব্যক্তিত্বের আদর্শ ধারণ করতে পারলে তারাও হবেন বঙ্গবন্ধুর মতো অবিসংবাদিত। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে পড়াশোনার মাধ্যমে তার আদর্শ নিজেদের মধ্যে লালন করে এই মহান নেতার অপূর্ণ স্বপ্নপূরণের সারথী হতে হবে আমাদেরই।
কাবির আবদুল্লাহ্
শিক্ষার্থী, গণিত বিভাগ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
তরুণদের হাত ধরে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ
বঙ্গবন্ধু শুধু কোনো নাম নয়, তিনি ছিলেন বাংলার জনমানুষের বন্ধু। যে মানুষটি স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলার, যার হাত ধরে এসেছিল কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা, এখনো আমরা সেই মানুষটির স্বপ্নের বাংলা গড়তে পারিনি। এই না পারার ব্যর্থতার দায় আপামর জনতার, প্রশ্নটি চিন্তাশীল মানুষজনের। একটি জাতি কতটুকু উন্নতি করতে পারে, তার পুরোটা নির্ভর করবে সেই জাতিসত্তার ওপর। আর এই আমাদের মধ্যে যারা একটি জাতি গঠনে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে পারে, তারা হলো সে দেশের তরুণসমাজ। তাই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হলে, আমাদের নিজ দেশকে সবটা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তরুণদের নিজ গুণে একটি আধুনিক স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারে। প্রয়োজন শুধু একটি তরুণবান্ধব সমাজের।
সাখাওয়াত হোসাইন রিফাত
শিক্ষার্থী, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বঙ্গবন্ধু হোক আদর্শ
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, যিনি শ্মশান বাংলা থেকে সোনার বাংলার রূপকার, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর চারিত্রিক গুণাবলি মুগ্ধ করে শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধ প্রতিটি স্তরের মানুষকে। এমনকি প্রধানমন্ত্রিত্বের চরম ক্ষমতার লোভও আর আদর্শ ও নৈতিকতাকে বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর এমন আদর্শিক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের ওপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখেই ৭ কোটি জনতা এক তর্জনীর ইশারাতে অনুপ্রাণিত হয়ে ছিনিয়ে আনে বাংলার স্বাধীনতা, বাঙালির স্বাধীনতা। শেখ মুজিবুর রহমান মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু বেড়ে উঠবে বাধাহীনভাবে, মুক্তবিহঙ্গের মতো উড়ে বেড়াবে জ্ঞানের প্রতিটি শাখায়। নতুন প্রজন্মের প্রতিটি শিশুই যেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নৈতিকতা বুকে ধারণ করে বেড়ে উঠতে পারে এমন চিন্তা ধারা থেকেই জাতির পিতার জন্মদিনকে উৎসর্গ করা হয়েছে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শই হোক নতুন প্রজন্মের, নতুন পথ চলার অনুপ্রেরণা।
আঁখি আক্তার বন্যা
শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা
তরুণ মনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিফলিত হোক
স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাসে যার নামটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো দীপ্যমান, তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার আদর্শ ও চিন্তাভাবনা তরুণ প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস। তার দূরদর্শী, বিচক্ষণ
ও সঠিক নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল।
তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু নিঃসন্দেহে একজন
সেরা দেশপ্রেমিক। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন থেকে তরুণ প্রজন্ম অসীম সাহসিকতায় পথ পাড়ি দিতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে, মানবতার সেবা করতে, মাথা নত না করে ন্যায়ের পথে চলতে আর আত্মবিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হতে শিখে। বঙ্গবন্ধুর পথচলা তরুণদের অসাম্প্রদায়িকতা ও দুর্নীতিমুক্ত
মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে উৎসাহিত করে। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে হোক দেশপ্রেমের শিক্ষা। এই
মহান নেতার নীতি ও আদর্শ ধারণ করে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য তরুণ প্রজন্মকেই শপথ
নিতে হবে।
সাফা আক্তার নোলক
শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
"