মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর

  ১৫ মার্চ, ২০২৩

বাকৃবির হলে শিক্ষার্থীর গায়ে হলুদ

বিয়ে হয়েছে প্রায় মাস সাতেক আগে। গায়ে হলুদ, বউভাতের অনুষ্ঠানের পালাও হয়েছে সারা। জীবন চলছিল তার আপন গতিতে। এরই মাঝে হঠাৎ করে আবারও ঘটা করে হলুদের আয়োজন, সাজানো স্টেজ, লাইটিং, ছবি তোলা, হলুদের সাজে আনন্দণ্ডহুল্লোড়। প্রথম দেখায় যে কেউ ভড়কে যেতে পারেন ফাগুনের কোনো অনুষ্ঠান ভেবে। তবে সত্যি সত্যি গায়ে হলুদের এমনই ব্যতিক্রমী আয়োজন হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলে। সম্প্রতি হলের ‘ক’ ব্লকের নিঝুম দ্বীপ ফ্লোরে বাকৃবি শিক্ষার্থী মো. মোরাদুজ্জামানের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হয়।

সাম্প্রতিক সময়ে প্রায়ই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর গায়ে হলুদের এমন ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান দেখা যাচ্ছে। তবে বিবাহিত বন্ধুর জন্য ছেলেদের হলের ফ্লোরে এমন আয়োজন বাকৃবিতে এটাই প্রথম। ফাগুনের মাঝে হলুদ ছোঁয়ায় রঙিন সন্ধ্যায় আয়োজনের কোনো কমতি ছিল না। মোরাদের বন্ধু ও হলের জুনিয়ররা মিলেই সমস্ত ব্যবস্থা করেন। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে অনুষ্ঠান চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।

মোরাদ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন যথাক্রমে পশু পালন অনুষদ ও পোলট্্ির বিজ্ঞান বিভাগ থেকে। জামালপুর সদরের তিতপল্লা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। বিয়ে করেছেন গত বছরের ২৯ জুলাই। বিয়ের অনুষ্ঠানে সব বন্ধুরা উপস্থিত থাকতে পারেননি বলেই ক্যাম্পাস এমন ভিন্নধর্মী এ গায়ে হলুদের আয়োজন করেন তাদের হলের বন্ধু ও জুনিয়ররা। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী গায়ে হলুদের নিয়মের মতোই হলুদ মাখিয়ে সব আনুষ্ঠানিকতা করা হয়েছে। হলুদে তার বন্ধুরাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। নাচে-গানে আনন্দে মাতেন সবাই। ক্যাম্পাস জীবনে এমন স্মরণীয় ঘটনায় সাক্ষী হতে পেরে উচ্ছ্বসিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হলের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীর হলুদ সন্ধ্যার অনুষ্ঠান আমাদের হলে এই প্রথম। সিনিয়র জুনিয়র সকলের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় এটা হচ্ছে। ভাইয়ের বিয়েতে অংশ নিতে পারিনি, তবে আজকে বিয়ে বাড়ির মতো একটা আনন্দমুখর পরিবেশে খুব ভালো লাগছে।

এ ভিন্নধর্মী আয়োজন নিয়ে বরের বন্ধু মোনায়েম জানান, পরীক্ষা, ব্যস্ততাসহ বিভিন্ন কারণে অনেকেরই বিয়েতে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই বিয়ের যে মজা সেটি সবাই মিলে উদযাপন করার জন্য ক্যাম্পাসের হলে এই হলুদ সন্ধ্যার ব্যতিক্রমী আয়োজন। এই হলুদ সন্ধ্যার কারণে, সবাই মিলে আনন্দ করতে পারলাম। এটি সবার জন্যই স্মৃতি হয়ে থাকবে।

ক্যাম্পাসে ব্যতিক্রমী এই হলুদ সন্ধ্যার বর মোরাদও অবাক হয়েছেন বন্ধুদের এমন আয়োজনে। তিনি বলেন, খুবই ভালো লাগছে। নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। কখনো ভাবিনি ক্যাম্পাসে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হবে। বেকার অবস্থায় বিয়ে করার কারণে সবাইকে দাওয়াত দিতে পারিনি। আর বিয়েতেও সেভাবে হলুদের অনুষ্ঠান হয়নি। সেই অপূর্ণতা পূরণ হয়ে গেল। সবাই মিলে এভাবে আমাকে সারপ্রাইজ দিবে তা আমার কল্পনাতেও ছিল না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close