কাব্য সাহা, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

  ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

তমালের শৈল্পিকতার গল্প ও প্রাপ্তি

সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন তমাল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যিনি সাখাওয়াত তমাল নামেই পরিচিত। বলা যায়, বর্তমানে তিনি শিল্পী তমাল হিসেবেও জায়গা করে নিয়েছেন। এরই সিগনেচার রেখেছেন তিন হাজারের অধিক সংখ্যক স্কেচ (ছবি) আর্ট করে।

রাজশাহী অঞ্চলে তার জন্ম এবং সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। স্কুল ও কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে দীর্ঘ ১০ বছর সময় ধরে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। মূলত ছবি আঁকার শুরুটা একদম ছোটবেলা থেকেই। ছোটবেলায় চক দিয়ে বাসার মেঝেতে আঁকিবুঁকি ছিল তার অন্যতম কাজ। এটা দেখেই পরিবারের ধারণা হয় আঁকাণ্ডআঁকির প্রতি তমালের ঝোঁক প্রখর। এরপর তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় তমালকে আর্ট স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়। সেই সময় থেকেই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তার হাতেখড়ি। তমাল প্রথম শিক্ষা গুরু হিসেবে পেয়েছেন আবদুস সাত্তার স্যার, পরবর্তীতে শামসুন্নাহার ইভা ম্যামের দিকনির্দেশনায় সে ছবি আঁকার জগৎ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে।

অনেকের দৃষ্টিতে ছবি আঁকাটাই তমালের পেশা এবং নেশায় রূপ নিয়েছে। তমাল ফ্রিল্যান্স আর্টিস্ট হিসেবে বর্তমানে কাজ করছে। ২০১৪ সাল থেকে প্রফেশনাল কাজের যাত্রা শুরু হয় তার। বিভিন্ন কোম্পানি কিংবা ব্যক্তির সঙ্গে কন্ট্রাকচুয়াল কাজ করেছেন তিনি। প্রোর্ট্রেট বা প্রতিকৃতি করাটাই এখন তমালের মূল পেশা। পাশাপাশি ছবি আঁকার সব রকম মাধ্যমেই তার পদচারণা লক্ষণীয়।

তার বিশেষ কিছু অর্জন রয়েছে। যা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অবদান রাখছে। তমাল ছবি এঁকে পলাতক আসামি ধরতে প্রশাসনকে সহোযোগিতা করে আসছেন ২০২০ সাল থেকে। স্কেচ করে আসামি ধরার নজির তার অবদানের ঝুলিতেই যুক্ত হয়েছে। সামনে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে সহযোগিতার করতে পারবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

এছাড়াও, প্রফেশনাল কাজ বাদে তমালের ব্যক্তিগত সংগ্রহে আছে প্রায় ১২০০ এর অধিক প্রতিকৃতি। এমনকি তিনি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করতে চান। সেই চ্যালেঞ্জ থেকেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে আবেদন করেছেন। ‘পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রতিকৃতি সংগ্রাহক (ব্যক্তিগত সংগ্রহে) ক্যাটেগরিতে।’ তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে ছবি আঁকাটা পেশা হিসেবে নেওয়াটা অনেক চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করেন। কারণ তিনি জানান, এখনো এদেশে ছবি আঁকার পেশাটা সর্বক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়। যেখানে অনেক অনিশ্চয়তা আর প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সমাজের নানা শ্রেণির মানুষ নানা ভাবে দেখে, কটু কথা বলে। তিনি আক্ষেপ থেকে জানান, শিল্পীর সঠিক মূল্যায়ন এখনো এদেশে দেওয়া হয় না। তবে তমাল মনে করেন, শিল্পী কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতার কাছে হার মানে না, সব বাধা পেরিয়ে আরো শক্তিশালী হয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছেন তিনি। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে আর্ট শিল্পীদের নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন তমাল। একটা শৈল্পিক রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা আছে তার, যেখানে শিল্পীদের মিলনমেলা ঘটবে। তাছাড়া ছবি আঁকা নিয়ে যাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তবে শখের বসে ছবি আঁকে তাদের নিয়ে একটা প্রাতিষ্ঠানিক সংগঠন করে তাদের শিল্প চর্চার সুযোগ করে দেওয়ার ইচ্ছাও আছে তার।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close