মোতালেব বিশ্বাস লিখন, ইবি

  ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

ক্যাম্পাসের হিম উৎসব

‘হিম’ শব্দটি আমাদের কাছে খুব একটা প্রচলিত শব্দ না। কিন্তু শীতের সমার্থক শব্দ হিসেবে এটি ব্যবহার করা হয়। আর এই উৎসবের নাম ‘হিম উৎসব’ দেওয়ার কারণ হতে পারে উৎসবটাকে আরো আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা। তবে যায় হোক ‘হিম উৎসব’ মানে শীতেরই উৎসব এটা সবাই মোটামুটি আঁচ করতে পারে। জানতে পারি, হিমশীতল ঋতুকে বরণ ও হারিয়ে যাওয়া লোকসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনতে এ উৎসবের আয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে লোকজ সংস্কৃতিকে অন্যভাবে তুলে ধরতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরপাড় জুড়ে এই আয়োজন করেছে বুনন নামের একটি সংগঠন। এবার বলছি কীভাবে ক্যাম্পাসে ‘হিম উৎসব’ উপভোগ করলাম। হঠাৎ টুং শব্দ করে ফেসবুক মেসেনজার গ্রুপে একটা মেসেজ আসল ‘এবার বুননের পক্ষ থেকে ক্যাম্পাসেই একটা হিম উৎসবের আয়োজন করা হবে।’ যদিও প্রথমে আমি বুঝতে পারিনি আসলে হিম উৎসব কেমন হতে পারে। কী কী থাকতে পারে আয়োজনে। কিন্তু পরে বিস্তারিত দেখে বুঝতে পারলাম হিম উৎসবের বিষয়বস্তু। যদিও আমি বুনন সংগঠনের সক্রিয় সদস্য না, তারপরও ভাবলাম সরাসরি কাজের মাধ্যমে উপস্থিত না হতে পারলেও দেখতে যাব হিম উৎসব। হিম উৎসব ছিল তিন দিনব্যাপী কিন্তু বিভিন্ন কারণে প্রথম দিন যেতে পারলাম না। কিন্তু দ্বিতীয় দিন যাওয়ার জন্য রাতেই প্ল্যান করে রাখলাম কাল আমাকে যে করেই হোক হিম উৎসবে উপস্থিত হতে হবে। তেমনি ভাবনা থেকে পরদিন ক্লাস শেষে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়েই চলে এলাম কাঙ্ক্ষিত হিম উৎসবে। সেখানে গিয়ে যা দেখলাম আসলেই মনোমুগ্ধকর এক পরিবেশ। হিম উৎসবটি হয়েছিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট মাঠ সংলগ্ন পুকুর পাড়ের বট তলায়। ইতিপূর্বে যে স্থানটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত জায়গা। সেখানে পরিচ্ছন্ন ও সৌন্দর্য বর্ধনের মাধ্যমে চমৎকার করে সাজানো হয়েছিল। আঁকা হয়েছিল গাছে ও আশপাশে বিভিন্ন ধরনের আল্পনা। সময়টা বিকেলে হওয়ায় উৎসব যেন জমে উঠেছিল সবাইকে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে নিমগ্ন আছে বলে মনে হচ্ছিল। কেউ অদৃশ্য কারো উদ্দেশ্যে লাল-নীল চিরকুটে উড়ো চিঠিতে নিজের মনের কথা লিখে টানিয়ে দিচ্ছে, কেউ আবার এর সঙ্গে দাঁড়িয়ে নানা ভঙ্গিমায় ছবি তুলছে। কেউ কেউ গাছের সঙ্গে লাগানো দোলনায় চড়ে মনের সুখে দোল খাচ্ছে। আরো একটি চমকপ্রদ বিষয় হচ্ছে এখানেই প্রদর্শন করা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন পিঠা এবং ছিল খাওয়ারও সুব্যবস্থা। দেখতে পাচ্ছিলাম পিঠা খাওয়ার জন্য ভিড় করছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আমিও মনে মনে ভাবছিলাম কিছু শীতকালীন পিঠা খাওয়া যায়। যেমন ভাবনা তেমনটাই হলো, দেখা হলো ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে তারাও এখানে আমন্ত্রিত ছিল। তো আর কী করার সভাপতি সিরাজুল ভাইয়ের থেকে অফার পেলাম যে কী পিঠা খেতে চাই। তাই আর কালক্ষেপণ না করেই কয়েক ধরনের পিঠা খেলাম সবাই একসঙ্গে। এরপর আইটি সোসাইটি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম বুনন চত্বরে এবং আমরা খড়ের তৈরি ফ্রেম ও চালা ঘরের প্রতিবিম্বের সঙ্গে কয়েকটা সেলফি তুললাম। এগুলো ছাড়াও হিম উৎসবে আরো ছিল আলোকচিত্র প্রদর্শনী, কুঁড়েঘর, সাংস্কৃতিক আড্ডা, গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা- লাটিম, মারবেল, বল নিক্ষেপসহ বেশ কিছু কর্মসূচি। জানতে পারি সন্ধার পর সর্বশেষ ক্যাম্প-ফায়ার ও গান আড্ডার মধ্য দিয়ে এই হিম উৎসবের ইতি টানা হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close