reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আইন : মানবাধিকারের লড়াই জেতার মোক্ষম অস্ত্র

‘আইন’ ও ‘বটতলার উকিল’ শব্দ দুটি যেন একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবেই জড়িত। আইনে পড়া নিয়ে কটুবাক্য শোনেনি, দেশে এমন আইনপড়ুয়া শিক্ষার্থী পাওয়া প্রায় অসম্ভব! তার ওপর আইন মানেই কঠিন কঠিন ব্যাপার, মোটা মোটা বইপত্র আর কী সব প্যাঁচাল ধারা! আইন পেশা নিয়েও মানুষের রয়েছে নেতিবাচক চিন্তাভাবনা। এত কিছুর পরও মানুষ আইন বিষয়ে পড়ে। কারণ আইন একটি গতিশীল বিষয় আর নিঃসন্দেহে অতি সম্মানিত পেশা। সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) আইনপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ভাবনা তুলে ধরেছেন সানজিদা জান্নাত পিংকি

ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য তুলে ধরতে চাই

আমার জীবনে নেওয়া সেরা সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে আইনে পড়া। ছোট থেকেই আইনশাস্ত্রের প্রতি আমার অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করত। কারণ আমি মানুষকে সাহায্য করতে এবং সমাজে ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য তুলে ধরতে চাই। এটি মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করতে এবং তাদের সুখী, পরিপূর্ণ জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু নিশ্চিত করতে পারে। আইন এমন একটি আকর্ষণীয় বিষয় যার মাধ্যমে সমাজের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া বুঝতে পারা যায়। বিষয়টি জটিল তত্ত্ব ও নীতির সমন্বয়ে পূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও অবিশ্বাস্যভাবে খুবই চমকপ্রদ এবং জীবনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা বজায় রেখে অধ্যয়নের পথকে প্রশস্ত করে। চতুর যুক্তি এবং কার্যকর সমাধান দিয়ে জটিল আইনি সমস্যা সমাধানের দক্ষতাগুলোকে উপভোগ করতাম বলেই আইন নিয়ে পড়ার সিদ্ধান্ত নিই। আইন শাস্ত্র আমাকে আমার আগ্রহের নতুন ক্ষেত্রগুলো অন্বেষণ, নতুন দক্ষতা অর্জন এবং সমাজের স্তর বিভাজিত লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ দিয়েছে। আমি মনে প্রাণে একজন আইনজীবী হতে চাই।

কাফি খান মেজর

অষ্টম সেমিস্টার, আইন বিভাগ।

আদর্শ দেশ গঠনে আইন সহায়ক

ল’ পড়ে যেখানে আমাদের ল ইয়ার হওয়ার কথা, সেখানে অনেকেই বলে ফেলে ল ইয়ার (মিথ্যাবাদী)। এরই সঙ্গে অনিবার্য একটি প্রশ্ন তো আছেই, ‘আইন পড়ছো কি মিথ্যা শেখার জন্য?’ আইনপড়ুয়া একজন শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ার পরিধি কতটা বিস্তৃত, সে সম্পর্কে জানাশোনা না থাকার ফলেই অনেকের ধারণা ‘বটতলার উকিল’ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। নামের আগে বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, ব্যারিস্টার, অধ্যাপক, অ্যাডভোকেট পদবীগুলো দেখতে কার না ভালো লাগে! বৈচিত্র্যময় এই বিষয়ে পড়ে স্বাস্থ্য, প্রকৌশল ও আইটিসহ আরো অনেক ক্ষেত্রে কাজের সুবিধা পাওয়া যায়। বর্তমান সমাজব্যবস্থায় দুর্নীতি, জালিয়াতি, প্রতারণা দিন দিন বেড়েই চলেছে কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না কোনো প্রতিকার। বরং প্রতিনিয়ত আইনের নামে বেআইনি কাজ ঘটে। ভবিষ্যতে জনকল্যাণমূলক রাজনীতি করতে চাই, যেখানে আইন হবে সহায়ক। আইনের সঠিক প্রয়োগের মধ্য দিয়ে মানুষের অধিকার নিশ্চিতকরণের মধ্য দিয়ে আদর্শ দেশ গঠনে অংশগ্রহণ করতে চাই।

রাশেদুল কবির রবিন

সপ্তম সেমিস্টার, আইন বিভাগ।

পেশা নয়, আইন হলো দায়িত্ব

বাবা আইন পেশায় যুক্ত ছিলেন বলেই ছোট থেকেই আইনে পড়ার ঝোঁক ছিল। কেননা দেশের বিচার বিভাগের প্রাণ হচ্ছেন বিচারক ও আইনজীবীরা। আইনের মতো মহৎ পেশায় যুক্ত থেকে তারা মেধা ও শ্রম খাটিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যান শোষিতের পক্ষে। আমিও চাই ন্যায়ের পক্ষে লড়তে। আত্মনিয়োগ করতে চাই রাষ্ট্রের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়। আইনে পড়াশোনা করেই আমি দেশ ও দশের সেবায়, সুবিচার নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখতে পারব। এছাড়া এই বিষয়ে ক্যারিয়ারের পরিধি ব্যাপক। আইনজীবী, বিচারক ও আইনের শিক্ষক হওয়ার সংকীর্ণ ধারণাটি এখন আর নেই। তবে আইনকে শুধু ‘পেশা’ চিন্তা করা নিতান্তই অনুচিত। বৈধ অনুশীলনের মাধ্যমে সত্যকে সত্য আর মিথ্যাকে মিথ্যা প্রমাণ করে সাধারণ মানুষের কাছে সত্যকে তুলে ধরা একজন আইনজীবীর দায়িত্ব আর দায়িত্ব কখনো পেশা হতে পারে না।

আরাফাতুন্নেছা সোনালী

সপ্তম সেমিস্টার, আইন বিভাগ।

ন্যায়ের পূজারি হতে চাই

আমাদের সমাজ ও দেশের আনাচে-কানাচে প্রতিনিয়ত যত অন্যায়, অপরাধ সংঘটিত হয় আইনজীবীরা সেসব অন্যায়কে নির্মূল করে আদর্শ জাতি ও সোনার বাংলা গড়তে নিরলস লড়াই করেন। তবু আমাদের সমাজে আইন বিষয়/পেশা নিয়ে নেতিবাচক সমালোচনাই প্রচলিত। নাগরিক হিসেবে দেশের কাছে আমাদের অনেক অধিকার রয়েছে যা থেকে অনেক সময় আমরা বঞ্চিত হই। আর আইনজীবীরা সর্বস্তরের মানুষের কাছে তাদের হারানো অধিকার অক্ষতভাবে পৌঁছে দিতে আপোষহীন। আমি আইনে পড়ে ন্যায়ের পূজারি হতে চাই। সাধারণ মানুষের কথা ফুটিয়ে তুলতে চাই আমার কণ্ঠে। পেশা হিসেবে নিজেকে একজন সফল আইনজীবী করার লক্ষ্যে, সুন্দর সমাজ গড়ে তোলার স্বপ্ন চোখে রেখে আইন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করছি।

শারমিন আক্তার শান্তা

চতুর্থ সেমিস্টার, আইন বিভাগ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close