ক্যাম্পাস নিয়ে তাদের প্রত্যাশা
ফেলে আসা বছরের স্মৃতি, অভিজ্ঞতা আর একরাশ নতুন প্রত্যাশায় শুরু হয় নতুন বছরে সবার পথ চলা। বছরের শুরুতেই বিদেশি শব্দ বাকেট লিস্টে আমরা জমা করতে থাকি আমাদের নতুন বছরের সব স্বপ্ন আর চাওয়াকে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরাও তালিকা করে রেখেছে নতুন বছরে তাদের প্রত্যাশাগুলোর। ক্যাম্পাস নিয়ে তাদের সেই প্রত্যাশা তুলে ধরেছেন ইসরাত জাহান জীম
চার মাসে সেমিস্টার চাই
করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘ দেড় বছর আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় অচল ছিল। সেই সময়ের ঘাটতি পূরণ করতে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চার মাসে সেমিস্টার সম্পন্ন করার প্রস্তাবনা দিলেও তার বাস্তবায়নে তেমন জোর পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে সেমিস্টারের শুরুর সপ্তাহগুলোতে বেশ ঢিলেঢালাভাবেই চলে শিক্ষা কার্যক্রম। একই সেশনের হওয়া সত্ত্বেও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শীক্ষার্থীরা আমাদের থেকে এগিয়ে আছে। তাই নতুন বছরে চার মাসে সেমিস্টারগুলো শেষ করা হলে আমাদের পিছিয়ে যাওয়া সময়টা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারব।
ওয়াহিদা সুলতানা দ্যুতি
দ্বিতীয় বর্ষ, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ
স্বাস্থ্যকর খাবার চাই
খাদ্য আমাদের মৌলিক অধিকার। সময়ের প্রয়োজনে এটি এখন নিরাপদ খাদ্য। আরো চাই ক্যাম্পাসে যেন অন্তত হলে স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। ক্যাম্পাসের নিম্নমানের খাবার খেয়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এসিডিটি, আলসার, ডায়েরিয়াসহ আরো দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যার শিকার। যারা দেশে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করবে তারা নিজেরাই নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টিহীনতার শিকার, যা দেশসেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী হিসেবে আমাকে লজ্জা দেয়। শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে নতুন বছরে ক্যাম্পাসে স্বাস্থ্যকর খাদ্য নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানাচ্ছি।
মো. সোহান আহমেদ
দ্বিতীয় বর্ষ, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ
হাতে-কলমে সরাসরি লেখাপড়ার ব্যবস্থা চাই
টেকনিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে নতুন বছরে আমি চাই হাতে-কলমে পড়াশোনার ব্যবস্থা। ক্লাসে আমরা যখন একটি ইঞ্জিন বা মেশিনারি বা এর কোনো পার্টস নিয়ে পড়ি তখন সাধারণত আমরা ছবি বা অ্যানিমেশন দেখে ধারণা নিই। এক্ষেত্রে আমর যদি সরাসরি ক্লাসে বসেই ইঞ্জিন বাস্তবিক দেখতে পারি তাহলে সেটা বেশি ফলপ্রসূ হবে আমাদের জন্য। আমরা বিষয়টি বেশি সময় মনে রাখতে পারব। মুখস্থ করার থেকে বুঝে পড়ার আগ্রহ এবং প্রবণতা দুটোই বাড়বে। জ্ঞান বৃদ্ধির পাশাপাশি দক্ষতা বাড়ানোরও সুযোগ পাব। হাতে কলমে কাজ না করলে হয়তো জ্ঞান অর্জন করতে পারব কিন্তু টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষতাটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
আয়েশা সিদ্দীকা
দ্বিতীয় বর্ষ, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ
নতুন বছরে নিরাপদ ক্যাম্পাসের প্রত্যাশা
১২০০ একরের আমার প্রিয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) দিন দিন শিক্ষার্থীদের কাছে অনিরাপদ হয়ে যাচ্ছে। বাড়ছে বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য এবং ক্যাম্পাসে চুরির হার। নেই কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা। মেয়েদের হলে ফেরারও নেই কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম বা থাকলেও তা মানা হয় না। বহিরাগতের উৎপাতে রাতে মেয়েদের হলের বাইরে থাকা দুশ্চিন্তার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় চলছে অবাধে মাদক সেবন। এসব বিষয়ে প্রশাসনের নেই তেমন কার্যকরী পদক্ষেপ। আবার অপরাধ করলে নেই বিচার ব্যবস্থা। তাই বাড়ছে অপরাধ প্রবণতা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করে নতুন বছরে সবার জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তুলবে এমনটাই
প্রত্যাশা।
তানিউল করিম জীম
চতুর্থ বর্ষ, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ
"