মো. তারিকুল ইসলাম
ইবিতে মেয়েদের কারাতে প্রশিক্ষণ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) শুরু হয়েছে মেয়ে শিক্ষার্থীদের কারাতে প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মার্শাল আর্ট এন্ড সাইন্স এসোসিয়েশন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা জান্নাতুল ফেরদৌস তানজিনা। তিনি মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। ১৯ জুন ২০২২ তারিখে মাত্র ২০ জন সদস্য নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে সংগঠনটি। বর্তমানে সদস্য সংখ্যা ৫০ এর অধিক। ধীরে ধীরে এ সংখ্যা বাড়ছে। সপ্তাহে পাঁচ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমন্যাসিয়ামে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত চলে সংগঠনটির কর্মশালা। কর্মশালার শুরতে প্রশিক্ষণার্থীরা ওয়ার্ম আপ করে। পরবর্তীতে ফিটনেস ট্রেনিং, দাচী, পান্চ, কিক, ব্লক, কাতা, কুমিতে, ইত্যাদি কারাতের কৌশলগুলোর চর্চা করে এবং শেষে কুল ডাউন।
সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা জান্নাতুল ফেরদৌস তানজিনা বলেন, কারাতে শেখার মাধ্যমে মেয়েরা আত্মারক্ষার কৌশল রপ্ত করতে পারবে। তাছাড়া দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কারাতে প্রতিযোগীতাগুলোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেকে ও বিশ্ববিদ্যালয়কে উপস্থাপন করতে পারবে। শুধু তাই নয়, কারাতে প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মসংস্থানও তৈরি করতে পারবে।
মূলত নারীর প্রতি সহিংসতা রোধের উদ্দেশ্যেই এই উদ্যোগ। দেশে নারীরা আজ চরম নিরাপত্তাহীন। এ পরিস্থিতিতে নারীদের আত্মসচেতনতা বাড়ানো ও আত্মরক্ষার কৌশল শেখা জরুরি। আর এক্ষেত্রে কারাতের মতো শারীরিক কৌশল হতে পারে সুরক্ষার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার।
তার এই উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কারাতে ফাউন্ডেশন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিভাগের সহায়তায় সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ক্রীড়া বিভাগ আমাদেরকে জিমন্যাশিয়ামে প্রশিক্ষণের জন্য আলাদাভাবে সময় দিয়েছে। আশ্বাস দিয়েছে ম্যাচের সময় ড্রেস, সিংগার্ড, টিথ গার্ড ও গ্লাভস ইত্যাদি অতি প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো দিবে। তবে কর্মশালা চলাকালীন সময় নিয়ে আমাদের কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, আশা করি খুব দ্রুত এর সমাধান হয়ে যাবে।
অবশেষে তানজিনা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সংগঠনটির দিকে সুনজর দিলে সংগঠনটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কৃতিত্ব বয়ে আনতে সক্ষম হবে। যা দেখে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও এ ধরনের সংগঠন গড়ে তুলবে এবং এর ফলশ্রুতিতে দেশের সব অঞ্চলের নারীরা নিজেদের সুরক্ষা ও স্বনির্ভরতার স্বার্থে এ ধরনের সংগঠনে অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত হবে। যা দেশের নারীদের ব্যক্তিগত ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
"