আসিফ ইকবাল
চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য দেশের প্রথম দক্ষতামূলক শিক্ষার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম আমার ই-স্কুল
তুমুল প্রতিযোগিতাপূর্ণ চাকরির বাজারে বাংলাদেশি চাকরিপ্রার্থীদের আকাঙ্ক্ষিত চাকরিপ্রাপ্তিতে সহায়তার জন্য সম্প্রতি আনুষ্ঠানিক যাত্রা করেছে দেশের প্রথম দক্ষতাভিত্তিক অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্ম আমার ই-স্কুল। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্মের ভিড়ে ব্যতিক্রমি এই প্ল্যাটফর্মটি গতানুগতিক ধারায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সহায়ক হিসেবে কাজ করে না। বাংলাদেশের মোটামুটিভাবে গৎবাঁধা শিক্ষাব্যবস্থায় উপযুক্ত চাকরি লাভে অর্জিত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ খুব সামান্যই ভূমিকা রাখতে পারে। সে চক্র থেকে বের হতেই উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে সম্পূর্ন নতুন আঙ্গিকের আমার ই-স্কুল পেশাগত দক্ষতার বিভিন্ন শিক্ষামূলক কোর্স নিয়ে এসেছে। চাকরিপ্রত্যাশীরা ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এমনকি কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও গতানুগতিক ধারার বাহিরে গিয়ে ভবিতব্য চাকরির জন্য প্ল্যাটফর্মটির যুগোপযোগী প্রায়োগিক শিক্ষা অর্জন করতে পারবেন। উন্নত বিশ্বে চলমান চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের নিরিখে দেশি-বিদেশি চাকরির বাজারে যে আমূল পরিবর্তন আসন্ন তার জন্য বাংলাদেশের তুলনামূলকভাবে কম দক্ষ চাকরিপ্রার্থীদের প্রস্তুত করে গড়ে তোলাই এটির মূল উদ্দেশ্য। আর সেজন্য প্ল্যাটফর্মটি অভিজ্ঞ শিক্ষকমণ্ডলীর সাহায্যে উন্নত বিশ্বের ন্যায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সম্পূরক হিসেবে পেশাগত জীবনে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন জ্ঞানমূলক ও দক্ষতাভিত্তিক কোর্স সুনির্দিষ্ট পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে সুলভ মূল্যে প্রদান করছে। আমার ই-স্কুল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত একাধিক চাকরিভিত্তিক প্ল্যাটফর্মের আলোকে বাহুল্য পরিহারপূর্বক স্বাভাবিক পাঠ্যক্রম প্রণয়নের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বাংলায় কোর্সগুলো উপস্থাপনের ব্যবস্থা করেছে। চাকরি-উপযোগী কোর্সগুলোতে প্রায়োগিক শিক্ষণের সাথে সাথে বাস্তবতার আলোকে মূল্যায়ন পরীক্ষা আর দক্ষতামূলক প্রজেক্ট ছাড়াও প্ল্যাটফর্মটিতে চাকরি লাভে আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তুলতে মক ইন্টারভিউ, মেন্টরশিপ, এবং ওয়েবিনার-এর বিশেষ সুবিধা আছে। এছাড়াও নির্দিষ্ট কোর্সে অংশগ্রহণের পাশাপাশি আমার ই-স্কুলের একজন শিক্ষার্থী নির্দিষ্ট শিক্ষকের সাথে ব্যাক্তিগত পর্যায়ে সাহায্যের জন্য আলাদাভাবে যোগাযোগ করার সুবিধা লাভ করবেন। ২০১৯ সালে অনানুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলেও আমার ই-স্কুল মূলত ২০২২ সালে এসে পূর্ণাঙ্গ রূপে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে আমার ই-স্কুল নিজস্ব ওয়েবসাইটে বিভিন্ন কারিগরি কোর্স বিস্তারিত পাঠ্যক্রমসহ উপস্থাপনের পাশাপাশি প্ল্যাটফর্মটিকে আরো আকর্ষনীয় করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো দৃশ্যমান করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত অভিজ্ঞ ব্যাক্তিবর্গের দ্বারা তৈরিকৃত পাঠ্যক্রম, প্রজেক্ট, আর পরীক্ষার মাধ্যমে খুব সহজেই একজন চাকরিপ্রার্থী নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে উপযুক্ত চাকরি লাভে সহায়ক দক্ষতামূলক বিষয়াদি আয়ত্ত করে নিজেকে অন্যদের থেকে এগিয়ে নিতে পারবেন। বর্তমানে বিদ্যমান কোর্সগুলোর সাথে নিত্যনতুন কোর্স অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি আমার ই-স্কুল ওয়েবসাইট এবং তাদের নিজস্ব স্মার্টফোন অ্যাপের জন্য আরো বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া চলমান। প্ল্যাটফর্মটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত সকলেই এখন স্থিরকৃত উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো প্রচলনের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্ল্যাটফর্মটিতে অধিকাংশ কোর্স এখন পর্যন্ত মূলত কম্পিউটার প্রকৌশল-ভিত্তিক হলেও দ্রুততম সময়ের মধ্যেই প্রকৌশলের অন্যান্য মূল শাখার সাথে সাথে চাকরিপ্রাপ্তিতে ভূমিকা রাখে এরকম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়-সম্পর্কিত বিভিন্ন কোর্স অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অনেকটাই গৎবাঁধা আর নূন্যতম দক্ষতাভিত্তিক কারিগরি শিক্ষার অভাব অনেক অসংখ্য বাংলাদেশি চাকরিপ্রার্থীকে বিভিন্ন স্বনামধন্য দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত চাকরি থেকে বঞ্চিত করে। আর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ব্যাক্তিগত পর্যায়ে সম্মুখীন হওয়া সমস্যা থেকেই এই নতুন ধরনের প্ল্যাটফর্মটির ধারনা তৈরি করেন আমার ই-স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী মোঃ আব্দুল্লাহ আল নাসিম। আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার প্রকৌশলে ২০১৯ সালে স্নাতক সম্পন্নের পরপরেই তিনি আমার ই-স্কুল প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেন। তার এই প্ল্যাটফর্মটির প্রাথমিক ধারনা ২০২০ সালে গ্রামীনফোন অ্যাকসিলারেটর কর্তৃক আয়োজিত প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার লাভ করে। “নতুন আঙ্গিকের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আমার ই-স্কুল দিশাহীন চাকরিপ্রার্থীদের আলোকবর্তিকা হয়ে কাজ করতে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে কাজ করার লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছে। প্রচলিত বিভিন্ন অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্মগুলোর মত সরাসরি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সহায়ক না হয়ে বরং বাংলাদেশি উচ্চশিক্ষার একটি সম্পূরক মাধ্যম হিসেবে আমরা শিক্ষার্থী এবং চাকরিপ্রার্থীদের মাঝে দক্ষতামূলক জ্ঞানের প্রসার ঘটাতে বদ্ধপরিকর। আমাদের এই নতুন আঙ্গিকের শিক্ষামূলক ব্যবস্থা বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে দক্ষতাজনিত বেকারত্ব দূরীকরনের পাশাপাশি তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার ভিত্তিতে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উপযুক্ত চাকরি লাভে সহায়ক হবে।
"