reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১১ আগস্ট, ২০২২

তারুণ্যের চোখে বঙ্গবন্ধু

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীদের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম। তবে বিদ্রƒপের বিষয়টি হলো পাকিস্তানিরা যা করতে পারেনি, কিছু দুর্নীতিবাজ সামরিক কর্মকর্তা তা করেছিলেন, স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছর পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। তবে এ হত্যায় শেষ হয়ে যায়নি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। সেদিন তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলেন। শোকের মাসে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা ও মতামত তুলে ধরেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

বাংলার বুকে অটুট থাকুক বঙ্গবন্ধুর নিঃশ্বাস

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করা আজকের স্বাধীন বাংলা পৃথিবীর বুকে লাল-সবুজের ঝলমলে এক আলোকরশ্মি। ইতিহাসে থেকে মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাগুলো যতই পড়ি ততই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতি এক সংজ্ঞাহীন ভালোবাসার জন্ম হয়। তার সম্পর্কে জানার আগ্রহ এবং ঔৎসুক্যও ক্রমেই বাড়তে থাকে। যেমন, সন্তানের জন্মের পর বাবা-মা তাকে গড়ে তোলার চেষ্টা করে। কেউ চায় তাদের সন্তান ডাক্তার হোক, জাজ হোক, ব্যারিস্টার হোক অথবা ইঞ্জনিয়ার হোক। কিন্তু শেখ লুৎফুর রহমান ও সায়েরা বেগমের মতো খুব কম পিতামাতাই চান তাদের সন্তান দেশপ্রেমিক হয়ে গড়ে ওঠুক। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও এই বিষয়টা সত্যি খুব বেদনাদায়ক। বঙ্গবন্ধুর ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে সকল পিতামাতার প্রতি সদয় দৃষ্টি কামনা করছি, সন্তানকে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ কিনে দিয়ে অনলাইন জগতে আসক্ত না করে বরং তাদেরকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বলিয়ান হতে শিক্ষা দিন। গড়ে তুলুন মানুষ হিসাবে। তাবেই বঙ্গবন্ধুর সতেজ নিঃশ্বাস বাংলার বুকে খুঁজে পাওয়া যাবে।

বরকত উল্লাহ

শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

তারা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে হত্যা করতে পারেনি

‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলা কালজয়ী নেতাটি বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সরাসরি চোখে না দেখলেও বঙ্গবন্ধু নামটি শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে উদ্বত তর্জনী উঁচিয়ে স্বপ্নময় চোখের সেই ছবিটি, যা ধারণ করা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চে। বঙ্গবন্ধু শুধু একটি নাম নয়, পুরো জাতির অনুপ্রেরণা। যার হাত ধরে উদিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্য। আমরা পেয়েছি লাল-সবুজ পতাকা। পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর দমন আর নিপীড়নের কাছে হার মানেন নি শেখ মুজিব। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে সমানতালে কাজ করেছেন। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির উন্নয়ন ও অগ্রগতি শুরু হয়েছিল। সেই অগ্রগতিতে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল কিছু বিপথগামী মানুষ। হাতিয়ে নিতে চেয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। হত্যা করতে চেয়েছিল বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে। তবে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করতে পারলেও স্বপ্নগুলোকে হত্যা করতে পারেনি। বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা কালজয়ী এই নেতা সকলের হৃদয়ে, মননে ও মগজে স্বমহিমায় জায়গা করে নিয়েছেন।

মো. আবদুল্লাহ আলমামুন

শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকুক প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে

‘বঙ্গবন্ধু’ যে নামটির সাথে মিশে আছে অবর্ণনীয় ত্যাগ, সাধনা, সংগ্রাম, আর কষ্টক্লেশে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। যে মানুষটি শিল্পীর মতো নিজের স্বপ্নের ক্যানভাসে ফুটিয়ে ছিলেন স্বপ্নের সোনার বাংলা। সেই স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার আগেই প্রেতাত্মারা বাংলার বুক চেপে ধরেছিল এই আগস্টেই, মুছে দিতে চেয়েছিল এই বাংলার মানচিত্র। কিন্তু ওরা জানে না বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। যিনি ছিলেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার। তাছাড়া নিপীড়িত ও মেহনতি বাংলার মানুষের কাছে ছিলেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় থেকে আমাদের অনেক শেখার আছে। তিনিই আমদের অনুপ্রেরণার বাতিঘর। বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন, রাজনৈতিক ঘাত-প্রতিঘাত, বাঙালির সংগ্রাম-সংঘাত, ইতিহাসের নানা বাঁকবদল প্রভৃতি বিষয়ের আবদানে হয়ে উঠেছেন একজন আদর্শ বাঙালি ও মহান নেতা। যে তারুণ্য নিয়ে আমাদের আশার অন্ত নেই, সেই তারুণ্যে মিশে আছে ‘মুজিব’ নামটি। তরুণ হৃদয়ে ভালোবাসার প্রথম অনুসঙ্গ হোক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার আদর্শ ও চিন্তাচেতনা ছড়িয়ে পড়ুক এই বাংলায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।

বিথী রানী মন্ডল

শিক্ষার্থী, নাট্যকলা বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

তারুণ্যের চেতনায় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একে অপরের পরিপূরক। তরুণ সমাজের কাছে শেখ মুজিবুর রহমান এক অনুপ্রেরণার নাম। তিনি এই তরুণ সমাজের কাছে একাধারে জীবন সংগ্রামের, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ও আদর্শের প্রতীক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কারিগর, উদার ব্যক্তিত্ব এবং একজন সফল রাজনীতিবিদ। বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠেই মানুষের মনে স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা স্বাধীন দেশ পেয়েছি। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি তরুণদের কাছে জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি প্রায় তার বক্তব্যে বলতেন, একটি দেশের সমস্যা এবং সম্ভাবনা দুটিই তরুণ সমাজের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ছাত্রজীবন থেকে দেশ ও জাতির স্বার্থে সংগ্রাম করতে গিয়ে বারবার কারাভোগ করেছেন। তারপরও বঙ্গবন্ধুকে কেউ থামিয়ে রাখতে পারেননি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশের জন্য লড়াই করে গেছেন। তরুণরাই পারে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালিত করে এই বাংলাকে ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা’ গড়তে।

আবু সুফিয়ান সরকার শুভ

শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

আগস্টের শোক হোক বাঙালির শক্তি

‘যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা গৌরী যমনা বহমান/ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীরা বাঙালির জাতির জনক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে সপরিবারে হত্যা করে। ১৯৭১ এ যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তাকে পাকিস্তানি জান্তা কারাগারে বন্দি করে রেখেছিলেন, কিন্ত হত্যা করার সাহস পায়নি। দুর্ভাগ্য, স্বাধীন বাংলার মাটিতে সুপরিকল্পিতভাবে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে ঘাতকচক্র। এরপর ১৯৯৬ সালে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে এবং বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে। এনিয়েও হয়েছে অনেক টালবাহানা। শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার প্রক্রিয়ায় অধিকাংশ হত্যাকারীর ফাঁসির রায় কার্যকর হলেও এখনো অনেকে পলাতক রয়েছে। আমরা চাই, যতদ্রুত সম্ভব সেসব হত্যাকারীদেরও ধরা হোক। এবং তাদের বিরুদ্ধে দেওয়া রায় কার্যকর করা হোক। শোকের মাসে মুজিব আদর্শের সৈনিকদের নতুন করে শপথ নিতে হবে। শোক কে শক্তিতে রূপান্তরিত করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।

ইকরা ফুরকান ড্যাফোডিল

শিক্ষার্থী, আইন বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

তরুণ প্রজন্মের কিংবদন্তি বঙ্গবন্ধু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন দূরদর্শী এবং ক্যারিশম্যাটিক নেতা যিনি আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে আখ্যায়িত। তার দূরদর্শীতায় একটি পরাধীন জাতি বহু বছরের শোষণ, দুঃশাসনের অবসান ঘটিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ পায়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড শুধু একটি হত্যাকান্ডই নয়, বাঙালি জাতিকে আবারও পরাধীন ও অভিভাবক শূন্য করার ষড়যন্ত্র। এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডে বাঙালির জীবনে শোকের ছায়া নেমে আসে। দুঃখে কাতর বাঙালি হয়ে যায় বাকরুদ্ধ ও কিংকর্তব্যবিমুঢ়। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রায় অর্ধশতাব্দী পরও তরুণ প্রজন্ম সেই শোকের গাম্ভীর্য ধরে রেখে জাতীয় শোক দিবস পালন করছে। কিন্তু অতীতের সাথে বর্তমানের কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ্যণীয়। জাতীয় শোকদিবসের তাৎপর্য তখনই ফলপ্রসূ হবে যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমে তরুণসমাজ এর সদ্ব্যবহার করবে। বঙ্গবন্ধুকে সঠিকভাবে বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করাই শোক দিবসের মূল লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধু ও তার আদর্শ, চিন্তাধারা সম্পর্কে সবাইকে সঠিক ধারণা দিতে হবে এবং সেই চেতনাকেই শক্তি হিসেবে ধারণ করে বাঙালি জাতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই সাথে তরুণদের উচিত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য উদার রাজনৈতিক, শোষণহীন ও সাম্যবাদী সমাজ গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশেকে আগামীর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

শিউলী আক্তার

শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close