তারুণ্যের চোখে বঙ্গবন্ধু
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষার্থীদের কাছে এক অনুপ্রেরণার নাম। তবে বিদ্রƒপের বিষয়টি হলো পাকিস্তানিরা যা করতে পারেনি, কিছু দুর্নীতিবাজ সামরিক কর্মকর্তা তা করেছিলেন, স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছর পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। তবে এই হত্যায় শেষ হয়ে যায়নি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। সেদিন তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় বেঁচে গিয়েছিলেন। শোকের মাসে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা ও মতামত তুলে ধরেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ।
বঙ্গবন্ধুর বিদায় বাঙালির অপূরণীয় ক্ষতি
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’, এই একটি নামের সাথেই জড়িয়ে আছে বাঙালির শত বছরের আবেগ। ১৯৭৫ সালের ভয়াল সেই ১৫ আগস্ট, ধানমন্ডির বাসভবনে সপরিবারে খুন হওয়া এই নেতার মৃত্যু শুধুই অপূরণীয় ক্ষতিই ছিল না, ছিল সদ্য স্বাধীনতা অর্জিত একটি জাতির শত স্বপ্নের অবসান, ছিল অগ্রমামী জনতার দেশকে এগিয়ে নেওয়ার দৃঢ়প্রত্যয়ের পতন। ইতিহাসের সেই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড, যার মৃত্যুতে বাঙালি হারিয়েছে তার অভিভাবক, সেই কালো অধ্যায় হোক জাতির এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র। ঘাতকরা জানুক, তাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে সেদিন বুলেটের আঘাতে ধানমন্ডির ৩২ নং বাড়িটি স্তব্ধ হয়ে গেলেও, স্তব্ধ হয়নি বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া ১৬ কোটি বাঙালির হৃদয়ে সেই স্বাধীনতার চেতনা। বঙ্গবন্ধুর দ্ব্যর্থহীন বজ্রকণ্ঠ নতুন করে ধ্বনিত হোক কোটি প্রাণে। সূচিত হোক নতুন ভোর, অন্তরে জাগ্রত হোক ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও দুর্নীতিমুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণের দৃঢ় প্রত্যয়।
শিরিন সুলতানা
শিক্ষার্থী, অ্যাকাউন্টিং বিভাগ
ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ গাজীপুর।
বঙ্গবন্ধু আমাদেরই আছে, আমাদেরই থাকবে
মুজিব নামের তরীটি বিপুল বিস্তার ও ত্যাগের সমুদ্রে ভাসমান ছিল, সে তরীর মানুষ ছিল মুক্তিকামী বাংলার মানুষ। সে তরী স্রোতের বিপরীতে হলেও চালিয়ে নিয়েছেন, বিনির্মাণ করেছেন স্বাধীন রাষ্ট্রের। ১৫ আগস্ট সেই ভয়াল কালরাত্রে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন, রাজনৈতিক ঘাত-প্রতিঘাত, বাঙালির সংগ্রাম-সংঘাত, ইতিহাসের নানা বাঁকবদল প্রভৃতি বিষয়ের আবদানে হয়ে উঠেছেন একজন মহান নেতা। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী কয়েকজনের ফাঁসি হয়েছে। কয়েকজন বিদেশে পালিয়ে আছে। তাদেরও অবিলম্বে ফিরিয়ে শাস্তি কার্যকর করতে হবে। সেই ভয়াল রাত্রে আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারালেও তার সততা, দেশপ্রেম, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সাহসী পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে আমরা খুঁজে পাব তার স্বপ্নের বাংলাদেশকে। জাতির পিতাকে হারানোর সেই দুঃসহ স্মৃতি আমাদের মনে যে বেদনার সৃষ্টি করে, আমরা সেটিকে অনুপ্রেরণা হিসেবে উপলব্ধি করি। তিনি বেঁচে আছেন এবং চিরকাল থাকবেন।
ইরা রানী
শিক্ষার্থী, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
তরুণ মনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিফলিত হোক
বাংলাদেশের ইতিহাসে যার নামটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো দীপ্যমান, তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার আদর্শ ও চিন্তাভাবনা তরুণ প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস। তার দূরদর্শী, বিচক্ষণ ও সঠিক নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু নিঃসন্দেহে একজন সেরা দেশপ্রেমিক। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন তরুণ প্রজন্মকে অসীম সাহসিকতায় পথ পাড়ি দিতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে, মানবতার সেবা করতে, মাথা নত না করে ন্যায়ের পথে চলতে আর আত্মবিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হতে শিক্ষা দেয়। বঙ্গবন্ধুর পথচলা তরুণদের অসাম্প্রদায়িকতা ও দুর্নীতিমুক্ত মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়তে তুলতে উৎসাহিত করে। তরুণ প্রজন্মকেই শপথ নিতে হবে এই মহান নেতার নীতি ও আদর্শ ধারণ করে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার। এজন্য স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও তারুণ্যের কাছে বঙ্গবন্ধু শুধুমাত্র একটি নাম নয়, বঙ্গবন্ধু মানে এক আত্নবিশ্বাসের ছোঁয়া, গৌরবের উষ্ণতা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বিশ্বাস মনের মধ্যে আঁকড়ে ধরে রাখলে তরুণ প্রজন্ম কখনোই বিপথে যাবে না- এমনটাই প্রত্যাশা।
আনতাজ হেনা আঁখি
শিক্ষার্থী, মনোবিজ্ঞান বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
বাঙালির চিন্তা জগতে সদা জাগ্রত বঙ্গবন্ধু
বাঙালি, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শব্দ তিনটি একই সূত্রে গাঁথা। বঙ্গবন্ধুর বজ্রকণ্ঠেই মানুষের মনে স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ যেমন গুরুত্ব পেয়েছে, তেমনি বাঙালির চিন্তার জগতে সদা জাগ্রত রয়েছে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জন খুব একটা কম নয়, হয়তো আরো বেশিও হতে পারত যদি বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকতেন। তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় থেকে আমাদের শেখার আছে অনেক। তিনিই আমদের অনুপ্রেরণার বাতিঘর। তার সততা, দেশপ্রেম, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, সাহসী পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে আমাদের তরুণরা খুঁজে পাবে আগামীর বাংলাদেশকে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে সম্মানজনক দেশ ও রাষ্ট্র হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। পরিশেষে এটাই বলব, এই শোকের মাসে প্রতিটি বাঙালির অঙ্গীকার হোক- মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা।
ফারজানা ইয়াসমিন জীবন
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
স্বাধীনতা, আদর্শ ও চেতনায় বঙ্গবন্ধু
যে নামটিকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ কে কল্পনা করা যায় না তা হলো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শত্রুমুক্ত স্বাধীন দেশে জাতির পিতার শত্রু হয়ে উঠলো নিজভূমির কিছু কুলাঙ্গার সন্তান। বাঙালির সোনালি ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যা একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। জাতির এ ক্ষতি কখনো পূরণ সম্ভব নয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে মাত্র কয়েক বছরে যে অবস্থানে নিয়ে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু তা ছিল স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রথম ধাপ। ঘাতকদের ভয়াল থাবায় অপূরণীয় রয়ে গেল জাতির পিতার অনেক স্বপ্ল। স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক দুরদর্শিতা, অন্যায়ের সাথে আপোষহীন মনোভাব, বৈষম্যমুক্ত একটি স্বাধীন দেশের স্বপ্নের ফসল হচ্ছে আমাদের আজকের বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি মর্যাদাসম্পন্ন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার, যে রাষ্ট্রের কোনো মানুষ না খেয়ে থাকবে না, বেকারত্বের সমস্যা থাকবে না। আমরা চাই তার এ স্বপ্ন পূর্ণতা পাক অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের স্বাধীনতা সার্থক হবে। তার আর্দশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে গড়ে ওঠবে স্বপ্নের বাংলাদেশ- এমনটাই কাম্য।
মো. মেহেদী হাসান
শিক্ষার্থী, গণিত বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ভিত্তিতে হোক দেশপ্রেমের শিক্ষা
বাংলাদেশের ইতিহাসে যার নামটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো দীপ্যমান তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার দূরদর্শী, বিচক্ষণ ও সঠিক নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু নিঃসন্দেহে একজন সেরা দেশপ্রেমিক। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন থেকে তরুণ প্রজন্ম অসীম সাহসিকতায় পথ পাড়ি দিতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে, মানবতার সেবা করতে, মাথা নত না করে ন্যায়ের পথে চলতে আর আত্মপ্রত্যয়ী হতে শিখে। তরুণ প্রজন্মের প্রতি বঙ্গবন্ধু সবসময় ছিলেন উদার। কারণ তিনি জানতেন তরুণরাই তাদের সৃষ্টিশীল মেধা ও প্রচেষ্টায় দেশকে এগিয়ে নিতে সক্ষম। বঙ্গবন্ধুর নাম নিলেই মনের অকপটে ভেসে ওঠে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র। শুনতে পাই বঙ্গবন্ধুর সেই বজ্রধ্বনি ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ বঙ্গবন্ধু তরুণদের কাছে চিরকালই আদর্শের প্রতীক। যিনি নিজের স্বার্থকে কখনোই প্রাধান্য দেননি, জাতির কল্যাণের কথা ভেবেছেন সবসময়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বিশ্বাস মনের মধ্যে আঁকড়ে ধরে রাখলে তরুণ প্রজন্ম কখনোই বিপথগামী হবে না- এমনটাই প্রত্যাশা।
জান্নাতুল ফেরদৌস জীম
শিক্ষার্থী, ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
কবি নজরুল সরকারি কলেজ।
"