reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ আগস্ট, ২০২২

বৃক্ষ রক্ষায় উদ্যোমী হতে হবে

নানা কারণে প্রতিদিনই অসংখ্য বৃক্ষ নিধন হচ্ছে। ফলে তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এতে ব্যাহত হচ্ছে খাদ্য উৎপাদন। প্রকৃতি হারাচ্ছে তার ভারসাম্য। তাই অধিকহারে বৃক্ষরোপণে আরো সচেষ্ট হতে হবে। পাশাপাশি সর্বত্র এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে হবে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন মো. নাজমুচ্ছাকিব

বৃক্ষ নিধন বন্ধ করুন

জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে যেভাবে বৃক্ষ নিধন করছি, তাতে এই পৃথিবী মরুভূমিতে পরিণত হতে চলেছে। পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিয়মিত আক্রান্ত হচ্ছি। তাই নিজেদের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের চারপাশকে সবুজায়ন করতে হবে। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ যদি প্রতি বছর নিজ জন্মদিনে একটি করে চারাগাছ রোপণ করে এবং বিভিন্ন উৎসবে যদি চারাগাছ উপহার দেবার প্রথা প্রচলন শুরু হয়, হলফ করে বলতে পারি, অচিরেই পৃথিবীর পুরোনো রূপ আমরা ফিরে পাব।

আখতার হোসেন আজাদ

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।

বৃক্ষের নিধনযজ্ঞ দ্রুত বন্ধ হোক

এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নানা অজুহাতে বৃক্ষ নিধন করছে। বিশেষ করে গ্রামীণ পর্যায় এটি বেশ লক্ষণীয়। তারা গাছের মালিককে টাকার লোভে ফেলে কেটে নিচ্ছে বড় বড় সব গাছ। যা চওড়া দামে বিক্রি করছে। যা দেশের জন্য চরম হুমকির কারণ। অথচ, জাতিসংঘের এসডিজি অর্জনের জন্য প্রতিটি রাষ্ট্রের মোট ভূখণ্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি প্রয়োজন। কিন্তু দেশে তা আছে মাত্র আয়তনের ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। এভাবে চলতে থাকলে অচিরে হারিয়ে যাবে জীবন রক্ষাকারী বন্ধু গাছ। সাথে দেখা দিবে চরম অক্সিজেন সংকট। যার পরোক্ষ প্রভাব পড়বে আগামী প্রজন্মের উপর। এখনই পদক্ষেপ না নিলে কোনো একসময় হয়তো বড় বড় এইসব গাছ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই বৃক্ষের নিধন যজ্ঞ যেকোনো উপায়ে বন্ধ করতে হবে।

মোহাম্মদ নাদের হোসেন ভূঁইয়া

শিক্ষার্থী, ফেনী সরকারি কলেজ।

গড়ে উঠুক বৃক্ষ নিধনবিরোধী মনোভাব

ভৌগলিক অবস্থান ভেদে দেশের বনভূমির পরিমাণ যেখানে ২৫ শতাংশ থাকা উচিত, সেখানে সরকারি তথ্যমতে আছে মাত্র ১৭ শতাংশ। যা প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় মোটেও সন্তোষজনক নয়। একটি গাছ কাটলে, যেখানে দুটো গাছ লাগানো উচিত, কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন নেই। উল্টো তিনটি গাছ কাটলে লাগানো হচ্ছে মাত্র একটি গাছ। অনেক সময় জায়গা স্বল্পতার কারণে একটিও লাগানো হয় না। সাম্প্রতিক সময়ে শহরাঞ্চলের মতো গ্রামেও চলছে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ঘটনা। রেহাই পাচ্ছে না সরকারি প্রতিষ্ঠান ও রাস্তার ধারের গাছপালাগুলোও। এই বৃক্ষ নিধনের কারণে বাংলাদেশের জলবায়ু ও আবহাওয়ার সূচি পরিবর্তন হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা, খরা, ঘন ঘন বন্যা ও বৃষ্টিপাত। ভবিষ্যতে হয়তো এই বৃক্ষ নিধনের ফলাফল আরো মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে। ফলে সংশ্লিষ্ট সবার উচিত বৃক্ষ নিধন নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সেই সাথে জনগণকেও সচেতন হতে হবে। গাছকে ভালোবাসতে হবে। তবেই দেশের সর্বত্র গড়ে উঠবে বৃক্ষ নিধন বিরোধী প্রতিবাদী মনোভাব।

আয়েশা সিদ্দিকা

শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

শুরু হোক সবুজের অভিযান

নিধনের হাত গাছকে রক্ষা করতে হলে কীভাবে কম সময়ে কার্যকরী পদ্ধতি বের করা যায় সেদিকে গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন। অঞ্চলভেদে দেশকে কয়েকটি জোনে ভাগ করে উক্ত জোনে গাছ নিধনের কারণ, নিধন ও রোপণে হার ইত্যাদি সমীক্ষার মাধ্যমে বের করে সেই অনুযায়ী সমাধান খোঁজা প্রয়োজন। একই সাথে যেসব অঞ্চলে যে ধরনের গাছ ভালো জন্মে সেসব অঞ্চলে সেই ধরনের গাছ রোপন করতে সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করা গেলে তারা গাছ লাগাতে তৎপর হবে এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। শহরাঞ্চলের মানুষদের কাছে ছাদবাগানের প্রয়োজনীতা তুলে ধরতে হবে। ছাদবাগান টাটকা ফলমূল ও সবজি উৎপাদনের পাশাপাশি বাসাবাড়ির সৌন্দর্যও বর্ধন করে। সেই সাথে কাঠের তৈরি জিনিসপত্রের বিকল্প ব্যবহারও খোঁজতে হবে, যা কাঠের থেকে সহজলভ্য। ক্ষুদ্র পরিসরের এই চিন্তাভাবনা বৃহদাকারে জনসাধারণের মধ্যে পৌঁছে দিতে পারলেই বৃক্ষ নিধন রোধ হবে এবং দেশ হয়ে উঠবে সবুজময়।

জান্নাতুল ফেরদৌস আঁখি

শিক্ষার্থী, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়।

বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তুলুন

প্রতিনিয়ত আমরা নিজেরাই পরিবেশকে দূষণের সর্বোচ্চ সীমারেখায় নিয়ে যাচ্ছি। নৈসর্গিক উপাদানগুলোকে ধ্বংস করে পরোক্ষভাবে নিজেদের জীবনকে ঠেলে দিচ্ছি অন্ধকারে, মৃত্যুগহ্বরে। আর দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে দ্রুত হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বৃক্ষনিধন, বনভূমি উজাড়, শিল্প কারখানার বর্জ্য, গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়া, প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার, অপরিকল্পিত গৃহনির্মাণ, প্লাস্টিক দ্রব্যের ব্যবহারকে চিহ্নিত করেছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। প্রকৃতির প্রতিশোধ বড়ই নিষ্ঠুর। যার নজির আমরা এরই্যমধ্যে দেখতে পাচ্ছি। পৃথিবী তো একটাই, আর এ পৃথিবীর বাসিন্দা আমরাই। পরিবেশকে রক্ষা করলে, বাঁচবে পৃথিবী। একা কারোর পক্ষেই পরিবেশকে রক্ষা করা সম্ভব না। আমাদের নিজ উদ্যোগে বেশি বেশি গাছ রোপণসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে বন্য প্রাণীও রক্ষা করা উচিত।

রিম্পা খাতুন

শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close