reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ জুন, ২০২২

পদ্মা সেতু নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। ২৫ জুন দেশের কোটি মানুষের কাঙ্ক্ষিত এ সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২৬ জুন সকাল ৬টায় সর্বসাধারণের জন্য এ সেতুর দুয়ার খুলে দেওয়া হয়। এর ফলে ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষের যাতায়াত হবে আরো সহজ ও সময়সাশ্রয়ী। পদ্মা সেতু নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও জগন্নাথ ইউনিভার্সিটি ফিচার, কলাম অ্যান্ড কন্টেন্ট রাইটার্স সংগঠনের সক্রিয় সদস্যদের আশা, আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশা ও অভিব্যক্তি তুলে ধরেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ

কীর্তিনাশার বুক চিরে আশার আলো

কীর্তিনাশা পদ্মা ক্রমবর্ধমান ধেয়ে চলা যার বৈশিষ্ট্য। কেড়ে নেওয়া ও নির্মমতা যার স্বভাব। কত-শত মানুষের স্বপ্ন ও শেষ আশ্রয়স্থল গ্রাস করেছে এই পদ্মা তার কোনো হিসাব নেই। এবার এই পদ্মার বুক চিরে জ্বলে উঠেছে আলো। স্বপ্ন নয় বাস্তবে রূপ নিয়েছে পদ্মা সেতু। পদ্মার বুক চিরে দৃশ্যমান হয়েছে দীর্ঘ ৬.১৫ কিলোমিটার সেতু। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের মানুষের গর্ব। দেশের প্রতিটি মেহনতি মানুষের ঘাম লেগে আছে এই সেতুতে। বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক এই সেতু। এই সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব হবে। ফলে এসব অঞ্চলের মানুষের পরিবহন, অর্থনীতি, শিক্ষা এবং চিকিৎসাসহ সবক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে। সেতুর ওপর দিয়ে চলবে গাড়ি আর নিচ দিয়ে ছুটবে ট্রেন। তাছাড়া পদ্মা সেতুতে বিদ্যুৎ, গ্যাসের লাইনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে তার অন্যতম সাক্ষী এই পদ্মা সেতু। বাংলাদেশের অগ্রগতি দৃশ্যমান হয়েছে এই সেতুর মাধ্যমে। এভাবেই বিশ্বমানচিত্রে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

বরকত উল্লাহ

শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

আশার আলো পদ্মা সেতু

পদ্মা সেতু একসময় ছিল মানুষের কল্পনার মাঝে। কিন্তু নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে দৃশ্যমান স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন বাস্তবে। এতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। কারণ ইতোপূর্বে ঢাকা থেকে দক্ষিণ অঞ্চলে যাতায়াত করতে এক দিন সময় লেগে যেত। কিন্তু এখন মাত্র ছয় ঘণ্টায় যাতায়াত করা সম্ভব। এতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বেড়ে গেল। এ ছাড়া কর্মব্যস্ত মানুষ, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবনে অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প মাওয়া-জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে নির্দিষ্ট পথের মাধ্যমে বাংলাদেশের কেন্দ্রের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের সরাসরি সংযোগ তৈরি করেছে। এই সেতুটি অপেক্ষাকৃত অনুন্নত অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে। ফলে প্রকল্পটি দেশের পরিবহন নেটওয়ার্ক এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সেতুটিতে ভবিষ্যতে রেল, গ্যাস, বৈদ্যুতিক লাইন এবং ফাইবার অপটিক কেবল সম্প্রসারণের ব্যবস্থা রয়েছে। উদ্বোধনের পর আশার আলো ছড়ানোর অপেক্ষায় স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

মো. আবদুল্লাহ আল মামুন

শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

স্বপ্নের সেতুর বাস্তব রূপ

বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের এক চোখ ধাঁধানো স্বপ্নের নাম পদ্মা সেতু। বছরের পর বছর এ অঞ্চলের মানুষ অপেক্ষা করেছে একটা সুন্দর যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য। ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছেন গণমানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সমাপ্তি ঘটেছে অজস্র দীর্ঘশ্বাস, কষ্ট এবং দুঃসময়ের যেগুলো পদ্মা নদী পারাপারে যাত্রীরা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করত। কখনো কখনো উৎসব অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাড়িগামী যাত্রীরা ফেরিঘাট থেকে কখন মুক্তি পাবে, সেটা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ত। এমনকি যাত্রীদের ফেরি পারাপারের জন্য বাসের সারিতে বসে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত কাটিয়ে দিতে হতো। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে ফেরিতে মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যুর সাক্ষীও আমরা হয়েছি। অবশেষে পদ্মা সেতু পূর্ণাঙ্গ নির্মিত হওয়ায় মানুষ এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ার ফলে মানুষের সময় বাঁচবে, নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হবে এবং মানুষ অধিক কর্মমুখী হবে। পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের জিডিপি ১.২% পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। দুই স্তর বিশিষ্ট সেতুটি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার এক অনন্য প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হবে।

তাজুল ইসলাম তাসিন

শিক্ষার্থী, সমাজকর্ম বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

আত্মমর্যাদায় মহীয়ান

পৃথিবীর অন্যতম খরস্রোতা পদ্মা নদীতে এত দীর্ঘায়তনের ও আধুনিক মানের সেতু নির্মাণ, তাও আবার বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে, কথাটা ভাবতেই এক অন্যরকম ভালো লাগা ও গর্ববোধ কাজ করে। বাংলাদেশের জন্য এটি ছিল বিরাট চ্যালেঞ্জ। পুরো বিশ্ব যেখানে এই সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সক্ষমতা নিয়ে সন্দিহান ছিল, সেখানে তাদের বাঁ হাত দেখিয়ে তা নির্মাণ করে নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। কারো কাছে মস্তক অবনত না করে আত্মমর্যাদায় মহীয়ান হয়ে এত বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সত্যই মর্যাদা ও সফলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই খরস্রোতা পদ্মা পাড়ি দেওয়ার জন্য এত দিন দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। ফেরি পারাপারের জটিলতার কারণে অসুস্থ রোগীদের রোগের যন্ত্রণায় ছটফট করতে হয়েছে, অসংখ্য চাকরিপ্রত্যাশী পরীক্ষার হলে সময়মতো পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে এবং অসংখ্য মানুষের মূল্যবান সময়ের অপচয় হয়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের দীর্ঘদিনের এই ভোগান্তি, দুঃখ, দুর্দশাকে অনেকাংশেই লাঘব করবে এ সেতু। যোগাযোগের পথ হবে সহজ ও সুগম। দেশের অর্থনীতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে স্বপ্নের এই পদ্মা সেতু। এই সেতু একই সঙ্গে আমাদের আত্মমর্যাদা, সম্মান ও উন্নয়নের প্রতীক এবং দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের পূর্বের দুঃখণ্ডদুর্দশা ও ভোগান্তিপূর্ণ জটিল যোগাযোগব্যবস্থার বিপরীতে উন্নয়ন ও অগ্রগতির সোপান।

মো. জাহিদ হাসান

শিক্ষার্থী, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

স্বপ্ন যখন দৃষ্টির সম্মুখে

স্বপ্ন তো স্বপ্ন তা আবার বাস্তব হয় নাকি, এমন ধারণাকেই বাস্তবে রূপ দিল বাংলাদেশের পদ্মা সেতু। অন্যান্য দেশের সাধারণ সেতুর গুণাগুণের তুলনায় পাঁচটি বিশেষ গুণসম্পন্ন ৬.১৫ কিলোমিটারের এই সেতু ২৫ জুন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পর ২৬ জুন সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত হয় প্রমত্তা পদ্মার ওপর নির্মিত এ দীঘল দোতলা সেতুটি। এই সেতু নির্মাণের জন্য নির্মাণাধীন সময়ে মাওয়া জাজিরা পয়েন্টে বসবাসরত জনগণকে পোহাতে হয়েছে নানা ভোগান্তি। এই ভোগান্তির অবসান হিসেবেই আজকের পদ্মা সেতু মাওয়া জাজিরা পয়েন্টে বসবাসরত মানুষের চোখের সামনে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে বাস্তবে। ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষের যাতায়াতকে আরো সহজ ও সময়সাশ্রয়ী করার লক্ষ্যে এই সেতুটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। সেতুটিকে কেন্দ্র করে এখন সেতুর আশপাশে বসবাসরত জনগণের মনে যেন নান্দনিক নতুন নতুন স্বপ্নের আশা জেগেছে। এখন আর চিকিৎসার জন্য ফেরিঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামের মধ্যে অসুস্থ রোগীকে নিয়ে রোগীর পরিবারকে কষ্ট করতে হবে না। বেকার ছেলেটিকে ভাইভা বোর্ডে দেরিতে উপস্থিত হওয়ার জন্য আর মিথ্যে ছলনাময়ী যুক্তির আশ্রয় নিতে হবে না। শুধু এই সময় বাঁচানোই নয়, বরং দেশের আর্থিক অগ্রগতিতে পদ্মা সেতু বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে দেশের জনগণ আশা করছে।

সানজিদা মাহমুদ মিষ্টি

শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতু

পদ্মা সেতু সাহসী নেতৃত্বের, বহু ত্যাগ ও তিতিক্ষার এক কালজয়ী সোনালি ফসল। কোটি কোটি বাঙালির স্বপ্নের অবকাঠামো। পদ্মা সেতু আমাদের আবেগের নাম। সেতুটি এখন আর স্বপ্ন নয়। একসময়ের স্বপ্নের সেতু এখন পূর্ণরূপে বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে। বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা নদী পদ্মা। এর তলদেশে মাটির স্তরের গঠনও জটিল। নিজস্ব অর্থায়নে এই নদীতে এমন একটি সেতু নির্মাণ করতে যাওয়ার কাজটি সহজ ছিল না। বহু রাজনৈতিক, কারিগরি ও আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটির ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। এ অঞ্চলের একুশ জেলার অর্থনীতি ও সমাজে আসবে অকল্পনীয় পরিবর্তন। অর্থনীতিতে যুক্ত হবে বহুমুখিতা। বাড়বে মানুষের আয়-রোজগার, জীবনযাত্রার মান ও কর্মসংস্থান। প্রথমবারের মতো পুরো দেশ একটি সমন্বিত যোগাযোগ কাঠামোতে আসবে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরের পণ্যসেবার পরিমাণ বাড়বে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। দক্ষিণাঞ্চলে শিল্প-কারখানা, পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠবে, বড় বড় মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। কৃষি, শিল্প, অর্থনীতি, শিক্ষা, বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই এই সেতুর বিশাল ভূমিকা থাকবে। পদ্মা সেতুর কল্যাণে অর্থনীতির সেতুবন্ধ ও নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে, তেমনটিই আশা করছি।

আফরোজা আক্তার

শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

দক্ষিণাঞ্চলের বৈপ্লবিক পরিবর্তনে পদ্মা সেতু

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ হিসেবে পদ্মা সেতু চালু হওয়া যেন স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো একটি বিষয়। আগে ঢাকা এবং দক্ষিণ অঞ্চলের মধ্যে যাতায়াত ব্যবস্থা ছিল অনিশ্চিত। ঘাটে অপেক্ষা করতে হতো প্রায় ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা। ছুটির দিন উপলক্ষে, প্রতিকূল পরিবেশের কারণে যেমন ঘন কুয়াশা বা বৃষ্টির কারণে এবং অপর্যাপ্ত ফেরির কারণে এই অপেক্ষা বেড়ে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা লেগে যেত। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এ অনিশ্চয়তা আর থাকবে না। কারণ মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘণ্টার ভিতরে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের ফলে চিকিৎসকরাই দক্ষিণাঞ্চলে গিয়ে সেবা প্রদান করতে পারবেন। আর ঢাকায় থেকে পড়াশোনা করা ছাত্রছাত্রীদের জন্য যাতায়াত হবে সহজ ও সময়সাশ্রয়ী। আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে এই প্রকল্পটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী নেতৃত্বের কারণে পদ্মাসেতু আজ দৃশ্যমান। সেতুটি দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষের ব্যবসা, চাকরি, শিক্ষা, চিকিৎসা, শিল্পক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সঙ্গী হয়ে থাকবে।

শ্রুতিলেখা বিশ্বাস

শিক্ষার্থী, নৃবিজ্ঞান বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

পদ্মা সেতু বাংলার গর্বের প্রতীক

একসময়ের স্বপ্ন পদ্মা সেতু আজ একটি বাস্তবতা। শত বাধা পেরিয়ে আজ পদ্মার এক অহংকার হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে এই পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। বাংলাদেশের সম্ভাব্য ও দীর্ঘতম সেতু এটি। দেশের নিজ অর্থায়নে সৃষ্ট এই সেতু সবাইকে আবার নতুন স্বপ্ন দেখাতে ব্যস্ত। এটি যেন দেশকে আরো এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। নিজেদের ওপর ভরসা করতে শেখাচ্ছে এই অর্জন। স্বপ্ন পূরণের এ যাত্রাটি ছিল অনেক বাধাবিপত্তির, ছিল নানা রকম দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র। কিন্তু আজ আমরা সফল। আর এই সফলতার প্রতিচ্ছবি এই সেতু। এই সেতুটি মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আসবে আমূল পরিবর্তন। এই সেতুক ঘিরে অনেক আবেগ জড়িত। যখনই এই সেতুটির কথা আসে, তখনই এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশের ছবি সামনে ভেসে আসে। আর চোখে ভাসতে থাকে বাংলাদেশকে ঘিরে অপার সম্ভাবনা। এই অর্জনটি আশাবাদী হতে শিখিয়েছে আমাদের নিজেদের প্রতি। সত্যিই এটি আমাদের এক ভালোবাসার অনুভূতি, এটি আমাদের সক্ষমতার প্রতীক।

সাফা আক্তার নোলক

শিক্ষার্থী, দর্শন বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

বঞ্চনা দিয়ে শুরু, জবাব দিয়ে শেষ

বাংলাদেশের কেন্দ্র ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সরাসরি সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের মধ্য দিয়ে অর্থনীতির গতি বাড়াবে পদ্মা সেতু। এ সেতুটি মূলত অপেক্ষাকৃত অনুন্নত অঞ্চলের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও শিল্প বিকাশে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে। এই সেতুর জন্যে দেশের আঞ্চলিক বাণিজ্যের সমৃদ্ধি যেমন ঘটবে, তেমনি দরিদ্রতাও ঘুচবে, পাশাপাশি দেশের উন্নয়ন ও সাফল্যের গতিও ত্বরান্মিত্ব হবে। এখন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনসহ জনগণের যাতায়াত অনেকটা অর্থ ও সময়সাশ্রয়ী হবে। এই সেতুর মাধ্যমে দেশের শিল্পায়ন বাড়বে, বাড়বে স্থানীয় জনগণের জন্য অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ। এ সেতু দেশের অর্থনীতিতে নতুন এক মাত্রা যোগ করবে। এটি দেশের পরিবহন নেটওয়ার্কের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো হিসেবে বিবেচিত হবে। বাংলাদেশের গর্বের আরেক নাম পদ্মা বহুমুখী সেতু। নিজ অর্থে সেতু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে পৃথিবীর কাছে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোনো প্রকার বৈদেশিক সাহায্য ছাড়াই বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত সর্ববৃহৎ প্রকল্প এই স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

মোছা. রুমানা আক্তার রনি

শিক্ষার্থী, রসায়ন বিভাগ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close