মো. ইসরাফিল আলম রাফিল
বন্ধুদের মিলনমেলা
সাত বছর পর সেই স্কুলজীবনের বন্ধুদের সঙ্গে দেখা। এসএসসি ব্যাচণ্ড১৫ সেই চিরচেনা সহপাঠীদের মুখগুলো কত বছর দেখা হয়নি। কে কোথায় আছে? কেমন আছে? শুনবার, জানবার ও দেখবার আগ্রহের কমতি ছিল না কারো। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ ‘আলহেরা একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়’ এসএসসি-২০১৫ ব্যাচের হয়ে গেল জাঁকজমকপূর্ণ মিলনমেলা।
এসএসসি-২০১৫ এই ব্যাচটিতে বুয়েট, মেডিকেল, ঢাবি, জবি, রাবি, সাস্ট, রুয়েট, কুয়েট, বুটেক্স, বাকৃবি, ব্যবসায়ী, প্রবাসীসহ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজেপি, ফায়ার সার্ভিস কী নেই এই ব্যাচটিতে। সফলতম এই ব্যাচটির শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলভাবে নিজেদের অবস্থান করে নিয়েছে।
ঈদের চতুর্থ দিন আলহেরা একাডেমি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে হয়ে গেল স্কুলের প্রথম কোনো ব্যাচের রিইউনিয়ন। হুটহাট রোজায় যেমন প্ল্যান, তেমনি কাজ। বিভিন্নভাবে সব পুরোনো বন্ধু একত্রিত করার কাজটা ভাগাভাগি করে কমিটি গঠন করা হয়। কাজের শুরুটা করল বুয়েট পড়ুয়া মুইন, সাস্ট পড়ুয়া হাসান, ঢাকা কলেজ পড়ুয়া প্রণব, জবি পড়ুয়া রাফিল, ঢাবি পড়ুয়া নাঈমসহ হাসিব, সানি, আনোয়ার, মারুফ, জাহিদ, রামিম, মুন্জুরুল ও জুয়েলরা।
ডেকোরেশন থেকে শুরু করে পুরো আয়োজনটি সুন্দরভাবে করতে প্ল্যানিংয়ের পর সবাইকে একত্রিত করতে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কাজটিও বাকি রাখেননি আয়োজকরা। সবার কাজের প্রতি অগ্রগতির ফলে খুব সহজে রিইউনিয়নের খবরটি বন্ধুদের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। ব্যাচের প্রতিটি বন্ধুর মিলনমেলায় আসার আগ্রহের ফলে অনুষ্ঠানটি গোছাতে আরো সহজ হয়ে যায়।
দিনের শুরুতে সেইম কালো কালার টি-শার্ট বিতরণ। অনুষ্ঠানের পরবর্তীতে শুরু হয় স্মৃতিচারণ। সেই সাত বছর আগের সহপাঠীদের সুন্দর ও মজার স্মৃতি চোখ বন্ধ করেই ভেসে উঠে। জানা-অজানা অনেক স্মৃতিচারণ পুরো আয়োজনটিকে ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। স্যারের দেওয়া ‘বাবা সৌরভ’ ডাকনাম ভুলতে পারেনি কেউ। স্যারদের কড়া শাসন আশীর্বাদের মতো কাজে লেগেছে স্মৃতিচারণে বলছিল সৌরভ। বন্ধুদের নিয়ে লেখা কবিতা আবৃত্তি করল মুঈন, জাহিদ। মোনায়েমের স্মৃতিচারণে সবার হাসি যেন থামতেই চাচ্ছিল না। মুঞ্জরুল, নাছিরদের স্মৃতিচারণ আবার সেই পুরোনো দিনে সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
নানা আয়োজনে রিইউনিয়ন অনুষ্ঠানটি এগোচ্ছিল তার মধ্যে ইনডোর গেম লুডু, ডার্ক সবার অংশগ্রহণ সেই সঙ্গে বন্ধুদের খুনসুটিতে মেতে উঠেছিল সবাই। রিইউনিয়নের অন্যতম শেষ আকর্ষণ ছিল র্যাফল ড্র। যার দায়িত্ব ছিল রাফিল ও মারুফ। অনুষ্ঠানের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবার কাছে গিয়ে লটারির টিকিট বিক্রির আনন্দ ছিল অন্যরকম। তেমনি যখন মাইকে লটারি কোড মিলাতে সবাই চাতক পাখির মতো মনোযোগ দিয়ে শুনছিল, তখন সেই আনন্দ ছিল চোখে পড়ার মতো।
ফেলা আসা স্কুলজীবন আর ফিরে পাওয়া যাবে না। কিন্তু সেই সময়ের বন্ধুদের ভুলে থাকা যায় না। সাত বছর পর আবার সবার সঙ্গে দেখা এতে আন্তরিকতার বিন্দুমাত্র ঘাটতি ছিল না। সবাই হাতে হাত মিলিয়ে মুখে হাসি নিয়ে কোলাকুলি করছিল। যেন একরাশ ভালোবাসার ফুল ফুটছিল। সবার সর্বাত্মক সহযোগিতায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রিইউনিয়নের সমাপ্তি হয়।
"