শান্ত মালো
নিটারের শিক্ষার্থীদের ডিজাইনে তৈরি হচ্ছে পোশাক
ইতিহাস নতুনদের হাত ধরেই লেখা হয়। আবার সেসব ইতিহাস বইয়ের পাতা, ভাস্কর্য আর স্মৃতিস্তম্ভ থেকে নতুনরাই তুলে আনছেন পোশাকেও। রাজধানীর ঢাকার অদূরে সাভারের নয়ারহাটে নিজস্ব ১৩ দশমিক ৪ একর জমির ওপর ছায়া সুনিবিড় ক্যাম্পাসে গড়ে উঠেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ (নিটার)। এখানে ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু হয় ২০১৮ সালে। বিভাগের নামটি অপরিচিত মনে হচ্ছে কি? হতেই পারে। বাংলাদেশে বিষয়টি প্রথম চালু হয়েছে নিটারেই। এখানে একাধারে হতে পারবেন একজন দক্ষ ডিজাইনার এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। নতুন এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমের লেকচার খাতায় টুকে পরীক্ষা দিয়ে হল থেকে বের হয়েই দায়িত্ব শেষ করেননি। নিজেদের ডিজাইনে প্রতিনিয়ত তৈরি করছে দেশি ও বিদেশি মোটিফে তৈরি করছে নানা ধরনের পোশাক।
সম্প্রতি নিটারের ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড এপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিজস্ব ডিজাইনে দেশীয় মোটিফে ডিজাইন করেছেন পোশাক। পোশাক ডিজাইন কাজে যুক্ত আছেন পূজন দে, কানিজ ফাতেমা এমি এবং মুমিনুন সিদ্দিকা।
তারা তিনজনেই দেশীয় মোটিফে পোশাক তৈরি করে ডিপার্টমেন্টে বেশ সাড়া জাগান। অনুজরা অনুপ্রাণিত হচ্ছেন তাদের এই কাজ দেখে। এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকা পূজন দে বলেন, আমার পছন্দের বিষয় ছিল মন্দির। আমার ডিজাইন করা পোশাকটির নাম হচ্ছে ‘দেবদাসী’। মন্দির মূলত আমাদের দেশের ধর্মীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বহন করে। আমার ডিজাইন করা পোশাকে ভেলভেট, সিলিকন এবং টিস্যু কাটান ফেব্রিক ব্যবহার করেছি। আমি ভবিষ্যতে নারীদের জন্য দেশীয় পোশাক তৈরি করতে চাই। এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত অপর শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা এমি জানান, আমার পছন্দের বিষয় ছিল পালকি। আমার ডিজাইন করা পোশাকের নাম হচ্ছে পার্ল অন স্ট্রিং। পালকি মূলত গ্রাম বাংলার বিবাহের ঐতিহ্যবহন করে। আমি ভেলভেট ও টিস্যু পেপার ব্যবহার করেছি। ভবিষ্যতে আরো সুন্দর কাজ করতে চাই। আমার সঙ্গে কাজ করেছে শুভ্র সাহা।
এই প্রকল্পের অপর শিক্ষার্থী মমিনুন সিদ্দিকি জানান, আমি সাধারণ দেশীয় সংস্কৃতি পছন্দ করি। সেই ধারবাহিকতায় ব্রাইডাল পোশাক তৈরি করি। তৈরি করতে গিয়ে আমি নানা সমস্যার সম্মুখীন হই, তবে সে সময় আমার শিক্ষকরা আমাকে অনেক হেল্প করেছে। ভবিষ্যতেও আমি দেশীয় সংস্কৃতি সম্পর্কিত পোশাক তৈরি করব। ফ্যাশন ডিজাইন অ্যান্ড অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকরা তাদের সবার কাজের প্রশংসা করেন এবং তাদের পোশাকগুলো আপাতত ইনস্টিটিউটেই সংরক্ষণ করা হবে। অনুপ্রেরণা দেবে এই বিভাগের অনুজদের।
"