হুসাইন আহমদ

  ১০ মে, ২০২২

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ‘মাভাবিপ্রবি’

মনকে সতেজ ও প্রফুল্ল রাখার জন্য আমরা নানা রকম কাজ করে থাকি। তার মধ্যে অন্যতম হলো ভ্রমণ। কারণ ভ্রমণ আমাদের অনেক আনন্দ, অনেক সুন্দর সুন্দর মুহূর্ত এনে দেয়। ভ্রমণ না করলে তা বুঝা যায় না। কিন্তু এই ভ্রমণ করার জন্য প্রয়োজন সময়, সুযোগ, অর্থ, ইচ্ছা ও সঙ্গী। এই জিনিসগুলো একত্র না হলে ভ্রমণ করা হয় না। তাইতো শুক্রবার ছুটির দিনে মামা-ভাগনে সব রকম ব্যস্ততা ছেড়ে মনটাকে প্রফুল্ল দিতে গিয়েছিলাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা মাভাবিপ্রবিতে। মাভাবিপ্রবি মানে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। যা আমাদের দেশের একটি অন্যতম সরকারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

টাঙ্গাইল জেলার সন্তোষে ১৯৯৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি দেশের ১২তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এর নামকরণ করা হয় বাংলাদেশের কিংবদন্তি রাজনৈতিক নেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নামানুসারে। মাওলানা ভাসানীর স্বপ্ন ও আদর্শকে পুঁজি করে পরিচালিত হচ্ছে বিশাল এ বিশ্ববিদ্যালয়টি।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই চোখে পরে শাহ জামান দিঘি। এই দিঘির কোল ঘেঁষেই রয়েছে শিক্ষার্থীদের আড্ডায় মুখরিত হাতির কবর। রং করা সারি সারি গাছ ও মাঝে মধ্যে বসার জন্য টেবিল। আর নানা গাছ ও ফুল দিয়ে আশপাশের বিভিন্ন সড়ক ও ভবনগুলো লাল, সবুজ ও বিভিন্ন রঙের প্রকৃতিতে সাজানো। এ ছাড়া চমৎকার রং ও আলোয় মাভাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয় সব সময় আলো ছড়ায় ক্যাম্পাসজুড়ে। তাইতো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী কিংবা ক্যাম্পাসের রাস্তায় যাতায়াতকারী সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ আলোকসজ্জা। শিক্ষার্থীরা সুন্দর মুহূর্তগুলো ও জায়গাগুলোর সাক্ষী হওয়ার জন্য ছবি তুলে ছড়িয়ে দেয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এখানে রয়েছে প্রশাসনিক ভবন, খেলার মাঠ, শহীদ মিনার, ঐতিহাসিক কাগমারী সম্মেলন চত্বর, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ভবন, অ্যাকাডেমিক ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবন ও বিশালাকার গ্রন্থাগার ভবনসহ নতুন কিছু ভবন নির্মাণ হচ্ছে, যা দেখতে অসম্ভব সুন্দর। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই রয়েছে মাওলানা ভাসানীর মাজার, ঐতিহাসিক দরবার হল, প্রার্থনার জন্য মসজিদ ও বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। যেগুলোকে ঘিরেই শিক্ষার্থীরা তাদের স্বপ্ন বুনে। আর সে স্বপ্ন পূরণে চেষ্টাও করে। তাইতো প্রত্যেক বছর পাশ করে বের হওয়া মাভাবিপ্রবি কৃতী শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে বেশ সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট শেষে শিক্ষার্থীরা পুরো ক্যাম্পাস মাতিয়ে রাখে আড্ডায়, ঝড় তোলে চায়ের কাপে, কখনো বিশাল মাঠের ধ্রুবচত্বরে একসুরে শোনা যায় ‘পুরোনো সেই দিনের কথা’ কলি, দেখা যায় হরেক রকমের খেলাধুলা। আর মাভাবিপ্রবিয়ানদের খুব প্রিয় একটি জায়গা হলো একটি চায়ের দোকান। সারা দিনের ক্লান্তি দূর করতে তাদের কাছে এক কাপ চা অনেকটা কাজ করে। আর এভাবেই হাজারও গল্প, আবেগ, অনুভূতি নিয়ে সামনে অগ্রসর হচ্ছে এই মাভাবিপ্রবি। শুভ কামনা রইল এই মাভাবিপ্রবির সব মাভাবিপ্রবিয়ানের জন্য। অতএব, আমাদের ছোট-বড় সব ভ্রমণগুলো হোক মনকে সতেজ, উৎফুল্ল ও গতিশীল করার পাশাপাশি আনন্দায়ক ও শিক্ষামূলক। আর মাভাবিপ্রবির এমন সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণ আদর্শ, সুশিক্ষা ও ন্যায়-নীতিতে আরো ভরপুর হোক। সর্বোপরি, ভ্রমণের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে উদয় হোক নতুন কিছুর ভাবনা ও উপলব্ধির। জীবনে যোগ হোক নতুন কিছুর অর্জন। তবেই তো আমাদের ভ্রমণের স্বার্থকতা ও উদ্দেশ্য হাসিল হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close