reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৯ অক্টোবর, ২০২১

‘আগামী প্রজন্ম যেন একটি সুন্দর পরিবেশ পায়’

মনের স্কুলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী ফাইরুজ ফাইজা বিথার। সম্প্রতি মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে মাঠপর্যায়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখায় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি জাতিসংঘের গোলকিপারস গ্লোবাল গোলস চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। প্রতিদিনের সংবাদের সঙ্গে একটি একান্ত সাক্ষাৎকারে মনের স্কুল, বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক সমস্যা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ আরো বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন প্রতিদিনের সংবাদের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি অনিরুদ্ধ বিশ্বাস

মনের স্কুলের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?

আমরা ব্রাক ইউথ প্ল্যাটফরমের ‘আমরা নতুন নেটওয়ার্ক’ নামক একটি প্রকল্পে অংশ নিয়েছিলাম। ওই প্রকল্পে আমরা সাতজন মিলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কাজ করব বলে সিদ্ধান্ত নেই। প্রাথমিকভাবে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করেছি যেখানে মানুষ কোনো রকম ভয়ভীতি ছাড়াই তার কথাগুলো আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারবে। কাজ শুরু করার পর থেকেই বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছিলাম। তাই কিছুদিন বাদে ওই প্রকল্পটি শেষ হয়ে গেলেও আমাদের মনে হয়েছিল এই কাজটা আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। সেখান থেকেই মনের স্কুল তিন বছর ধরে কাজ করছে।

বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তিন বছর ধরে কাজ করেছেন। এই তিন বছরের পথচলায় কী কী প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছেন?

বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করাই একটা চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে আমরা যখন শুরু করেছিলাম, তখন আদর্শ হিসেবে মেনে এগোতে পারি এমন কেউ ছিল না। আমার মনে আছে, শুরুতে আমরা যখন জরিপ করতে যাই তখন আমাদের সঙ্গে কেউ কথাই বলতে চাননি। এই সমস্যাটা এখনো আছে। মানসিক স্বাস্থ্য বা মানসিক অবসাদ নিয়ে বাংলাদেশে এখনো অনেকেই কথা বলতে চান না।

কখন জানতে পেরেছিলেন আপনি গোলকিপারস গ্লোবাল গোলস চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন? তখন অনুভূতি কেমন ছিল?

(একটু ভেবে...) নির্দিষ্ট করে দিন-তারিখ মনে নেই। এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য পোর্টফোলিও অনেক দিন আগে জমা দিয়েছিলাম। হঠাৎ একদিন ব্রাক ইউথ প্ল্যাটফরম থেকে আমাকে কল করে ডাকা হলো। আমি ভেবেছিলাম হয়তো কোনো মিটিংয়ের জন্য ডাকা হয়েছে। এরপর ওরাই আমাকে জানায় আমি এই অ্যাওয়ার্ডটি জিতেছি। অবশ্যই জেনে ভালো লেগেছিল। তবে আমার কাছে ব্যাপারটা তার চেয়েও বেশি বিস্ময়কর (সারপ্রাইজিং) ছিল।

আবারও মনের স্কুল প্রসঙ্গে ফিরি। মনের স্কুল নিয়ে যদি যেকোনো একটা ঘটনা শোনাতে বলি, কী বলবেন?

ব্রাক ইউথ প্ল্যাটফরমের ওই প্রকল্পে আমাদের একটি সাদা কাগজে মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক মূল সমস্যাগুলো লিখতে বলা হয়েছিল। আমার এখনো মনে আছে, আমরা ওই সাদা কাগজটি ধরে দাঁড়িয়ে আছি, প্রেজেন্টেশন দিচ্ছি। ওই দিনের কথাই বেশি মনে পড়ে।

মনের স্কুলকে নিয়ে আগামী দিনে কীভাবে এগোতে চান? মানে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

আগামী প্রজন্ম যেন শুরু থেকে একটি সুন্দর পরিবেশ পায় এ লক্ষ্যেই মনের স্কুল কাজ করে যাবে। আমরা শহরে-গ্রামে স্কুলপর্যায়ে বাচ্চাদের ও তাদের অভিভাবকদের নিয়ে কাজ করতে চাই। বুলিং, বডি শেমিং এগুলো যেন বন্ধ হয়। পাশাপাশি, অভিভাবকরা যেন ভালো প্যারেন্টিংয়ের মাধ্যমে এসব সমস্যা দূরীকরণে ভূমিকা রাখতে পারেন সে বিষয়েও তাদের সচেতন করব।

বাংলাদেশের তরুণ সমাজের উদ্দেশে কী বার্তা দিতে চাইবেন?

If you believe in your dreams, you must go on. চেষ্টা করলে সবাই নিজের স্বপ্নটাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আমাদের শুধু পরিশ্রম করে যেতে হবে। আর খেয়াল রাখতে হবে, আমরা যা করছি তা যেন সমাজের কল্যাণে অবদান রাখতে পারে। তাহলে গোটা সমাজটা সুন্দর হয়ে উঠবে।

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জাতিসংঘের চেঞ্জমেকার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। আপনাকে অভিনন্দন ও শুভকামনা।

আপনাকেও ধন্যবাদ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close