ক্যাম্পাস ডেস্ক
মসলিনের পুনর্জন্ম নিয়ে রাবি সায়েন্স ক্লাবের ওয়েবিনার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাবের উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী মসলিন কাপড়ের পুনর্জন্মের ওপর ওয়েবিনার হয়েছে।
গত বুধবার রাতে এই ওয়েবিনার হয়। উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলাম।
এ সময় উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মসলিনের ইতিহাস মোটামুটি সবারই জানা। দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. মনজুর হোসেনসহ সাত সদস্যের একটি টিম করা হয়। বেশ কয়েক বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম আর গবেষণার ফসল হিসেবে দেশে সেই মসলিনের আবারও পুনর্জন্ম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
মসলিন সুতা ও কাপড়কে পুনরায় ফিরিয়ে আনার ভেতরের গল্প সবাইকে জানাতে সায়েন্স ক্লাবের ওয়েবিনারে প্রধান বক্তা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এম মনজুর হোসেন। তিনি তার আলোচনায় বলেন, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে হারিয়ে যাওয়া মসলিনকে ফিরিয়ে আনতে কাজ শুরু হয়। আমি প্রথমে মসলিন সম্পর্কে স্টাডি করি এবং জানতে পারি ঢাকাই মসলিন তৈরি হতো কটন থেকে। এরপর গবেষকদল সারা দেশে সেসব কটন উদ্ভিদের খোঁজ শুরু করি এবং বেশ কিছু উদ্ভিদের সন্ধান পাই। সেসব উদ্ভিদের থেকে প্রাপ্ত কটনের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে ভিক্টোরিয়া ও আলবার্ট মিউজিয়াম (ব্রিটেন) থেকে সংগৃহীত মসলিনের নমুনার সঙ্গে মিল দেখতে পাই। এরপর শুরু হয় কটন থেকে সুতা তৈরি এবং আরো সব চ্যালেঞ্জিং ধাপ সম্পন্ন করে মিউজিয়াম কর্তৃক সংগৃহীত নমুনার প্রায় ৯৮ শতাংশ মিল সম্পন্ন মসলিন কাপড় তৈরি সম্ভব হয়।
মসলিনের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তিনি বলেন, শীতলক্ষ্যার তীরে মসলিন সুতা ও কাপড় তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব ইন্ডাস্ট্রি থেকে পরবর্তী সময়ে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।
ওয়েবিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন জিন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. আবু রেজা, প্রাণ রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর তানজিমা ইয়াসমিন।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সায়েন্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও স্থায়ী কমিটির প্রধান জহুরুল ইসলাম মুন, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আজীবন সদস্যরা। মসলিনের ওপর একটি কুইজ প্রতিযোগিতা হয়। সেখানে প্রায় ২৫০ জন পার্টিসিপ্যান্ট অংশগ্রহণ করেন।
ওয়েবিনারে সমাপণী বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাবের সভাপতি ইসতেহার আলী। তিনি বলেন, সূচনালগ্ন থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্স ক্লাব বিজ্ঞানের প্রচার ও প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে। মসলিনের পুনর্জন্মের জন্য গবেষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও মসলিনের সফলতা কামনা করেন তিনি।
"