reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৭ জুলাই, ২০২১

নবীনদের চোখে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পড়াশোনার বাইরে যারা লড়াই করেন কাগজ-কলমে, তারাই ক্যাম্পাস সাংবাদিক। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা একদিকে চ্যালেঞ্জিং, অন্যদিকে আনন্দের, থাকে শেখার অবারিত সুযোগ। অম্ল- মধুর সেসব মুহূর্তকে আলিঙ্গন করতে যারা এগিয়ে এসেছেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা শুরু করা এমন কয়েকজন জানালেন তাদের সাংবাদিকতায় আগ্রহের কারণ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। লিখেছেন মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর

‘নিজের আলাদা পরিচয় তৈরি হয়’

সাংবাদিকতার প্রতি আমার আগ্রহটা বেশ আগে থেকেই। আর এই ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার মাধ্যমে নিজের একটা আলাদা পরিচয় তৈরি হয়, যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রার সংবাদ প্রচার করে সামনে এগিয়ে রাখে ক্যাম্পাস সাংবাদিকরাই। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতি ও কল্যাণে ভূমিকা রাখতে পারা সত্যিই ভালো লাগার। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ঘটনাকে একজন ক্যাম্পাস সাংবাদিক যেভাবে দেখেন বা বিশ্লেষণ করেন, অন্যান্য শিক্ষার্থীরা কিন্তু সেভাবে উপলব্ধি করতে পারেন না। সাংবাদিকতা করতে গিয়ে পরিচয় হয়েছে বিচিত্র মানুষের সঙ্গে। তাদের সঙ্গে মিশতে গিয়ে জেনেছি অনেক অজানাকে। শিখেছি কলমের শক্তিকে নতুন করে উপলব্ধি করতে। সততা, বস্তুনিষ্ঠতা, দক্ষতা, সর্বোপরি নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের জন্য ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা সংবাদের অক্লান্তকর্মী।

আর এই ভালো লাগা ও সত্য পরিবেশনের চ্যালেঞ্জ থেকেই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি সাংবাদিকতায় সঙ্গে যুক্ত হয়েছি।

ইফতেখারুল ইসলাম

দ্বিতীয় বর্ষ

ভেটেরিনারি অনুষদ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

‘সাংবাদিক হিসেবে চ্যালেঞ্জ নিতে চাই’

গোয়েন্দা গল্পের শার্লক হোমসের মতো সাংবাদিক চরিত্রটাও রহস্যে মোড়ানো। একজন সাংবাদিক বুদ্ধিদীপ্ত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন কিংবা সংগ্রামী সাফল্যের গল্প লিখে সমাজকে নাড়িয়ে দিতে সক্ষম। ছোটবেলায় যখন সংবাদকর্মীদের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর শুনতাম, তখন থেকেই সাংবাদিকদের প্রতি মোহ কাজ করত। আমারও খুব ইচ্ছে হতো এক দিন তাদের মতো দৃপ্ত কণ্ঠে মানুষের অর্জন, আকাক্সক্ষা কিংবা অধিকারের কথা বলব।

তরুণরা সবসময়ই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। তাদের উজ্জীবিত চিন্তাচেতনাকে বিকশিত করার অন্যতম প্ল্যাটফরম হচ্ছে সাংবাদিকতা। সাংবাদিকতায়

ধারণা না থাকার ফলেও শুধু হাতে-কলমে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে একজন পরিপক্ব সাংবাদিক হিসেবে আবির্ভূত হয়, যেটা শুধু ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা চর্চার মাধ্যমে সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা তুলনামূলক বেশি চ্যালেঞ্জিং। তাই তাদের সুরক্ষায় সাংবাদিকদের নিজেদের মধ্যে ঐক্য প্রয়োজন। তরুণদের সুস্থ সংবাদচর্চার মাধ্যমে সাংবাদিকতায় আবারও সুদিন আসবে বলে আমার বিশ্বাস।

মো. নাঈম উদ্দিন

প্রথম বর্ষ

কৃষি অনুষদ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

‘সাংবাদিকরা ক্যাম্পাসের চেনা মুখ’

ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা বলতেই প্রথমে যেটি মাথায় আসে তা হলো একটি সম্মানজনক পেশা, যেখানে কিছু স্বপ্নবাজ তরুণ তাদের বিচক্ষণতা ও সৃজনশীলতা দিয়ে নিরলস কাজের দ্বারা ক্যাম্পাসের সব ভালো-মন্দ দিক তুলে ধরে। আমরা ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার মাধ্যমে আমাদের সমগ্র ক্যাম্পাসকে তুলে ধরতে পারি। এটি যতটা না ঝুঁকিপূর্ণ তার চেয়েও বেশি সম্মানের। যেখানে আমরা আমাদের নিজের ক্যাম্পাসের ফটক থেকে শুরু করে শেষ সীমানা পর্যন্ত বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরতে পারি। যেমন : শিক্ষক, শিক্ষাথী, প্রশাসনসহ বিভিন্ন কর্মচারীর বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরা। শুধুই কি সমস্যার কথা তুলে ধরা? না, শিক্ষার্থীদের সাফল্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উদ্ভাবন, নতুন ডিগ্রিসহ আরো সামনের দিকে এগিয়ে যেতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া বা ত্যাগ করা উচিত সবই তুলে ধরতে পারব। পাশাপাশি নিজেদের অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ও দক্ষ করে গড়ে তুলতে পারব। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে

মেশার সুযোগ পাব, যা সাধারণত পাওয়া কঠিন। সবচেয়ে বড় কথা ক্যাম্পাসের একজন চেনা মুখ

হতে পারব।

ফাতেমা আকতার

প্রথম বর্ষ

কৃষি অনুষদ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

‘আমার ক্যাম্পাসের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই’

সংবাদপত্র হলো সমাজের দর্পণ আর দর্পণে ফুটে ওঠা ছবি শিল্পীর ছোঁয়ায় এঁকে দেন একজন সাংবাদিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র হিসেবে আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই। আমি চাই আমার ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার মাধ্যমে আমার বিশ্ববিদ্যালয়কে তুলে ধরতে। ছাত্রদের পক্ষ থেকে তাদের দাবিদাওয়া তুলে ধরতে চাই। ক্যাম্পাসের উন্নয়ন অবকাঠামো, রাজনৈতিক পরিবর্তন, ক্যাম্পাসের নতুন উদ্ভাবন, শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল প্রতিভা তুলে ধরতে চাই। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়, এটি জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তারুণ্য হলো পরিবর্তনের নির্মাতা। তাই তারাও জাতীয় পর্যায়ে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কাজ করতে পারবে। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে দায়িত্ববান মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে সমাজের ন্যায়-অন্যায় তার লেখার মাধ্যমে ফুটে উঠে। এই কাজ করে গতিশীল সমাজ তাকে যে শিক্ষা দেবে, সেটা সে কোনো শ্রেণিকক্ষে পাবে না। এখানে একজন শিক্ষার্থী শিখতে পারবে কীভাবে সবার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে এবং পরিচালনার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হয়। ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা যদিও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ, তবু এখানের অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগিয়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় কাজ করতে চাই। অর্জিত জ্ঞান আমার ব্যক্তিগত জীবনেও কাজে লাগাতে চাই।

ফয়েজ আহমেদ

প্রথম বর্ষ, ভেটেরিনারি অনুষদ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close