জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক খো. লুৎফুল এলাহীর ‘রোহিঙ্গা সমস্যা ও বাংলাদেশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি রবিবার সকাল ১১টার দিকে ইতিহাস বিভাগের ড. এ আর মল্লিক লেকচার হলে এই মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদা পারভীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বইটির লেখক অধ্যাপক খো. লুৎফুল এলাহী বলেন, ‘আমার গবেষণার হাতেখড়ি অধ্যাপক শিরীন আখতারকে আমি বইটি উৎসর্গ করেছি। বইটি পাঠকমহলে ও বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক ফল এনে দিলেই আমার এ প্রচেষ্টা সার্থকতা লাভ করবে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, রোহিঙ্গারা শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে আছেন, যার কারণে তাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরার মতো কোনো অ্যাকাডেমিশিয়ান নেই। লুৎফুল যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তার সাফল্য কামনা করছি।

এ সময় ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক নূরুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা পুরো বিশ্বব্যাপী আলোচিত একটি সমস্যা, এমন সময় তিনি বইটি রচনা করেছেন। যেটি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখছি। অনুষ্ঠানে বইটি নিয়ে আলোচনা করেন অধ্যাপক মো. এমরান জাহান। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন গবেষণার পর অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী এ বইটি রচনা করেছেন। বইটিতে তিনি রোহিঙ্গাদের নিয়ে আন্তর্জাতিক সমস্যার কথা তুলে এনেছেন। তিনি পাঁচটি অধ্যায়ে বইটি রচনা করেছেন। প্রতিটি অধ্যায়ে তিনি নিখুঁতভাবে রোহিঙ্গাদের উৎপত্তি, ঔপনিবেশিক আমলে রোহিঙ্গাদের অবস্থান, স্বাধীনতা-উত্তরকালে রোহিঙ্গাদের অবস্থান, বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ও রোহিঙ্গা সমস্যা, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যার প্রভাব ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেছেন। এ রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশ যে ভীষণ বিপদে আছে সেটাও বইটিতে আলোকপাত করা হয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে ইতিহাস বিভগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হলো দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে গবেষণা করা, পরামর্শ দেওয়া। কিন্তু বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণার অবস্থা নাজুক। এ অবস্থায় অধ্যাপক লুৎফুল গবেষণা করে রোহিঙ্গাদের যে সমস্যাগুলো তুলে ধরেছেন তা আমাদের দেশের বিভিন্ন গবেষকের কিংবা পলিসি মেকারদের গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স বুক হিসেবে কাজ করবে। অধ্যাপক মো. লুৎফুল এলাহীর জন্ম মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার টুপিপাড়া গ্রামে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। পরে একই বিভাগ থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক। এরই মধ্যে তার গবেষণাধর্মী ১৮টি প্রবন্ধ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

"