আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৫

ফিলিস্তিনের ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শহরে গত শনিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৬ বছরের এক কিশোরসহ পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জেনিনে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বড় ধরনের অভিযান চালাচ্ছে। গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার মাত্র দুই দিন পর ২১ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান তৃতীয় সপ্তাহ ধরেও চলবে বলে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা সামরিক অস্ত্রশস্ত্র ও সরঞ্জামের খোঁজে জেনিনে অভিযান চালাচ্ছে। শত শত ইসরায়েলি সেনা বিমান বাহিনীর সমর্থন নিয়ে এই অভিযানে নেমেছে। জেনিনে তাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের বন্দুক লড়াইও হচ্ছে। তাদের বিমান হামলায় একজন কিশোর ছেলে নিহত হয়েছে, রয়টার্সের এমন জিজ্ঞাসার উত্তরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, বিমান বাহিনী জেনিন এলাকায় ‘সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের’ ওপর আঘাত হেনেছে। তারা আর কিছু বলতে রাজি হয়নি।
পরে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জেনিন এলাকায় ওই কিশোরের পাশাপাশি ইসরায়েলি হামলায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, জেনিনের কাবাতিয়া এলাকায় একটি গাড়িতে আঘাত হেনেছে বিমান বাহিনী। ওই গাড়িতে ‘সন্ত্রাসীরা’ ছিল। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, এই অভিযান চালাকালে জেনিনে ও নিকটবর্তী গ্রামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর ছয় সদস্য এবং দুই বছরের এক বালিকাসহ অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, তারা অন্তত ১৮ ‘জঙ্গিকে’ হত্যা ও ৬০ জন ফেরারি ব্যক্তিকে আটক করেছে, পাশাপাশি শতাধিক বিস্ফোরক ডিভাইস ধ্বংস এবং অস্ত্র তৈরির কারখানা জব্দ করেছে। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বারবার দাবি করছেন, তাদের দেশের শত্রু ইরান পশ্চিম তীরের ‘জঙ্গিদের’ কাছে অস্ত্র পাচার করছে আর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ‘ইরানি অক্ষের’ বিরুদ্ধে তৎপরতা চালাচ্ছে। রয়টার্স জানিয়েছে, সম্প্রতি ইসরায়েল তাদের দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ দাখিল করেনি আর পশ্চিমা কর্মকর্তারাও বলছেন, ইরান পশ্চিম তীরে অস্ত্র পাচার করছে; তবে এসব দাবি কতোটা সত্য তা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
জেনিনে ইসরায়েলি বাহিনী বহু ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে এবং ইসরায়েলি বুলডোজার সংলগ্ন শরণার্থী শিবিরের রাস্তাগুলো খুঁড়ে নষ্ট করে দিয়েছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডে কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। জেনিনের শরণার্থী শিবিরের পানির সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে আর ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিবিরটির অন্তত ৮০ শতাংশ বাসিন্দাকে তাদের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বুধবার বলেছেন, সামরিক অভিযান শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী জেনিনে অবস্থান করবে। তবে কবে সামরিক অভিযান শেষ হবে সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।
"