আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

পানামা খালের আশপাশে চীনের উপস্থিতি নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি

মার্কিন দূত

পানামা খালের আশেপাশে চীনের উপস্থিতিকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি অ্যাখ্যা দিয়ে লাতিন আমেরিকা বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত মরিশিও ক্লভের-কারোনে বলেছেন, পানামার সরকারকেই এ সংক্রান্ত উদ্বেগ নিরসনে ব্যবস্থা নিতে হবে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর পানামা সফরের আগে শুক্রবার তিনি এ কথা বলেছেন।

দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফরে শনিবার মধ্য আমেরিকার দেশটির উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন রুবিও; সেখানে পানামা খাল পরিদর্শনের পাশাপাশি দেশটির প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনোর সঙ্গেও তার বৈঠক করার কথা, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প পানামা খাল দখলে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর এটাই হতে যাচ্ছে দুই দেশের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।

রুবিও এরপর এল সালভাদর, কোস্টারিকা, গুয়াতেমালা ও ডমিনিকান রিপাবলিকেও যাবেন। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ওই অঞ্চলের অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো এবং যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের স্রোত ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রচেষ্টা তার আলোচ্যসূচিতে থাকবে, টেলিফোনে সাংবাদিকদের এমনটাই বলেছেন ক্লভের-কারোনে।

তিনি বলেন, পানামার আগের সরকারগুলোর সময় খালের আশেপাশে চীনের উপস্থিতি যে ‘পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল’ তাতে মুলিনোর দায় না থাকলেও পানামার প্রেসিডেন্টকেই এখন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।

“পানামা খাল এলাকায় বন্দর, লজিস্টিকস থেকে শুরু করে টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো ও অন্য সব কিছুতে চীনা কোম্পানি ও সংশ্লিষ্টদের ক্রমবর্ধমান উপস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। সত্যি বলতে কি এটি শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যই নয়, বরং পানামা এবং সমগ্র পশ্চিম গোলার্ধের জন্যও নিরাপত্তা ঝুঁকি। তাই আলোচনায় এ প্রসঙ্গ থাকবেই,” বলেছেন লাতিন আমেরিকা বিষয়ক মার্কিন এ বিশেষ দূত।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে হংকংভিত্তিক সিকে হাচিনসন হোল্ডিংস পানামা খালের প্রবেশপথের বন্দরগুলো পরিচালনা করে আসছে। কোম্পানিটি চীনের সরকারের সঙ্গে আর্থিকভাবে সম্পৃক্ত না থাকলেও হংকংয়ের প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত সরকারি তদারকির মধ্যেই থাকে। রয়টার্স লিখেছে, লাতিন আমেরিকাজুড়ে চীনের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে ওয়াশিংটন বেশ উদ্বিগ্ন। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চলটি চীনের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়তে পারে বলেও তাদের আশঙ্কা।

চীনের হাতে খালের কার্যক্রম ছেড়ে দেওয়া হয়েছে এমন গুঞ্জন জোরের সঙ্গে উড়িয়ে দিয়েছে পানামা। অবশ্য এরপরও বৃহস্পতিবার রুবিও বলেছেন, যে কোনো সংঘাতে খালটি আটকে দেওয়ার পরিকল্পনা যে চীনের রয়েছে তা নিয়ে ‘বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই’ তার।

এদিকে মুলিনো জানিয়েছেন, খালের দখল কার থাকবে এ নিয়ে রুবিওর সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা করবেন না তিনি। হংকংভিত্তিক সিকে হাচিনসন ঠিকঠাক অর্থ পরিশোধ করেছে কিনা তা নিয়ে যে নিরীক্ষা চলছে পানামা এখন তার অপেক্ষায় রয়েছে; এই নিরীক্ষার ফলকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে মধ্য আমেরিকার দেশটি হাচিনসনকে খালের কার্যক্রম থেকে সরিয়ে দিতে পারে বলে অনুমান অনেক বিশ্লেষকের।

ইউএস আর্মি ওয়ার কলেজের অধ্যাপক ইভান এলিসের ধারণা, খালের দখল কার থাকবে, তা নিয়ে সম্প্রতি দুই মিত্র দেশের মধ্যে খানিকটা অস্বস্তি তৈরি হলেও উভয় পক্ষই এখন দ্রুত সমাধানের পথ খুঁজছে। “আমার মনে হয়, এটি তুলনামূলক তাড়াতাড়িই শেষ হবে। দিনের শেষে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্ভবত এমন একটি চুক্তি করতে চাইছেন, যার সাহায্যে তিনি নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করতে পারবেন। আর পানামাবাসীরা খুঁজে দেখছে, খালে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ অক্ষুণ্ন রেখেই কী কী ছাড় দেওয়া যায়,” বলেছেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close