আন্তর্জাতিক ডেস্ক
লাখ লাখ ফেডারেল কর্মীকে পদত্যাগের প্রস্তাব ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের লাখ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। সরকারের ব্যয় হ্রাস পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এবার নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে সরকার পরিচালনার ব্যয় হ্রাসের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী শপথ গ্রহণের পরপরই সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প প্রশাসন থেকে গত মঙ্গলবার লাখো ফেডারেল কর্মীর কাছে একটি ই-মেইল বার্তা পাঠানো হয়েছে। সেখানে কর্মীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, তারা সরকারের ‘ডেফার্ড রেজিগনেশন প্রোগ্রাম’ এর অংশ হতে চান কি না। এ বিষয়ে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের আশা, ১০ শতাংশের বেশি কর্মী তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করবেন। যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকারের ২০ লাখের বেশি কর্মী রয়েছেন। অর্থাৎ প্রায় দুই লাখ কর্মী স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা তাদের। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বাঁচাতে পারবে বলে মনে করেন ট্রাম্প প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
যদি এ কর্মীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করতে রাজি হন, তবে তারা এ প্রকল্পের আওতায় আট মাসের বেতন ও ভাতা পাবেন বলে ইমেইলে জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন থেকে আশা করা হচ্ছে, ১০ শতাংশের বেশি কর্মী তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করবেন। যুক্তরাষ্ট্রে কেন্দ্রীয় সরকারের ২০ লাখের বেশি কর্মী রয়েছেন। অর্থাৎ প্রায় দুই লাখ কর্মী স্বেচ্ছায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা তাদের। এ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার বাঁচাতে পারবে বলে মনে করেন ট্রাম্প প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
যারা পদত্যাগ করতে রাজি আছেন, তাঁদের ই–মেইলের উত্তর পাঠানোর সময় বিষয়ের ঘরে ‘পদত্যাগ’ শব্দটি লিখতে বলা হয়েছে। প্রস্তাবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেতন ও ভাতা দেওয়ার কথা বলা আছে। তবে কয়েকটি বিভাগের কর্মীরা এ প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারবেন না, যেমন ডাক বিভাগের কর্মী, সেনাসদস্য, অভিবাসন কর্মকর্তা ও জাতীয় নিরাপত্তা বিভাগের কিছু কর্মী।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মানবসম্পদবিষয়ক সংস্থা ‘অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট’ থেকে গতকাল স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় পাঠানো ওই ই–মেইলে যাঁরা এ প্রস্তাব গ্রহণ করবেন না, তাঁদের জন্য সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে যখন সরকারি ব্যয় কমানোর আরও উদ্যোগ নেওয়া হবে, তখন যাঁরা থেকে যাচ্ছেন, তাঁদের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।
ই-মেইলে বলা হয়েছে, ‘আপনার থাকা বা আপনার সংস্থার টিকে থাকার বিষয়ে পূর্ণ নিশ্চয়তা আমরা দিতে পারছি না। কিন্তু যদি আপনার পদ বিলুপ্ত করা হয়, তবে আপনার সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করা হবে।’২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পর ফেডারেল কর্মীদের নিয়ে আরও একটি আদেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, কোভিড মহামারির সময় থেকে যেসব কর্মী এখনো বাড়িতে বসে কাজ করছেন, তাঁদের এখন সপ্তাহে পাঁচ দিন কর্মস্থলে গিয়ে কাজ করতে হবে।
অনুদান বন্ধে ট্রাম্পের নির্দেশনা স্থগিত : যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল অনুদান ও ঋণ স্থগিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আদেশের কিছু অংশ আপাতত কার্যকর হচ্ছে না। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকাল ৫টায় ওই আদেশ কার্যকরের কথা থাকলেও সময় অতিক্রমের কিছু আগে আদালতের নির্দেশে তা আপাতত স্থগিত রাখা হয়। ট্রাম্পের আদেশ কার্যকর হলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে সড়ক নির্মাণ পর্যন্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে অভিযোগ জানায় কয়েকটি সংগঠন। এরপরই ইউ এস ডিস্ট্রিক্ট জাজ লরেন আলিখান এই সাময়িক স্থগিতাদেশ জারি করেন। আগামী সোমবার বিষয়টি পুনরায় পর্যালোচনা করবে আদালত।
ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাপক সংস্কার পরিকল্পনার অংশ হচ্ছে অর্থসহায়তা বন্ধের ওই সিদ্ধান্ত। ইতোমধ্যে তিনি বৈদেশিক সহায়তা বন্ধ, সরকারি চাকরিতে নিয়োগ স্থগিত এবং বিভিন্ন সংস্থার বৈচিত্র্য সংক্রান্ত কর্মসূচি বাতিলের উদ্যোগ নিয়েছেন। মঙ্গলবার প্রশাসন সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য স্বেচ্ছায় অবসরের প্রস্তাবও দেয়, যার লক্ষ্য সরকারি ব্যয় কমানো।
"