আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দাবানলে ১১ জনের মৃত্যু
লস অ্যাঞ্জেলসে যেন বোমা হামলা হয়েছে : বাইডেন
ভয়াবহ দাবানলে গত পাঁচদিন ধরে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস। এখন পর্যন্ত সেখানে ১০ হাজারের বেশি অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই দাবানলকে ‘যুদ্ধের দৃশ্য’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন এখানে যেন বোমা ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, “এই দাবানল আমাকে যুদ্ধের দৃশ্যের কথা বেশি মনে করিয়ে দিচ্ছে। যেখানে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে বোমা ফেলা হয়েছে। এটি যেন পুরোপুরি যুদ্ধক্ষেত্রের দৃশ্য।”
গতকাল শুক্রবার ওভাল অফিসে বাইডেনকে দাবানলের সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে লুটপাটের বিষয়টি স্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, “লুটপাটের স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। আমরা প্রমাণ পেয়েছি আক্রান্ত এলাকায় অনেকে গিয়ে লুটপাট করছেন। এছাড়া দাবানল নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোয় ট্রাম্পের সমালোচনা করেন তিনি।
স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার লস অ্যাঞ্জেলেসে তাণ্ডব চালানো শুরু করে দাবানল। আলাদা পাঁচটি সক্রিয় দাবানলে সেখানে প্রায় ৩৫ হাজার একর অঞ্চল পুড়ে গেছে। মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। আর পুড়ে গেছে হাজার হাজার অবকাঠামো। আবহাওয়া বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা অ্যাকুওয়েদার গতকাল শুক্রবার জানায়, দাবানলে ১৩৫ থেকে ১৫০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আর এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে লম্বা সময় পাড়ি দিতে হবে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু : যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের সর্বগ্রাসী দাবানলে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগুনে এ পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি ও স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লস অ্যাঞ্জেলেসের পরিস্থিতিকে ‘যুদ্ধের দৃশ্য’র সঙ্গে তুলনা করেছেন এবং মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরো জোরালো বাতাসের বয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে, ফলে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় দাবানলের পরিস্থিতি সঙ্কটজনক, এমন ইঙ্গিতবাহী ‘রেড ফ্ল্যাগ’ সতর্কতা জারি করা হয়েছে; জানিয়েছে বিবিসি। কর্মকর্তারা জানান, দাবানলে যাদের মৃত্যু হয়েছে প্রচলিত পদ্ধতিতে তাদের শনাক্ত করা সম্ভব না হলে এ প্রক্রিয়ায় কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।
যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যরা মার্কিন গণমাধ্যমকে প্রিয়জন হারানোর পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন। অ্যান্থনি মিচেল ও তার প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে জাস্টিন দাবানল থেকে বাঁচার জন্য বের হয়ে আসার সময় তাদের আলতাডেনার বাড়িতেই মারা যান, জানিয়েছে তার পরিবার। হাজিমে হোয়াইট ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, তার ৬৭ বছর বয়সী বাবা মিচেল তাকে কল দিয়ে জানান, “আগুন বাড়ির উঠানে চলে এসেছে।”
অবসরপ্রাপ্ত বিক্রিয় কর্মী ও বিকলাঙ্গ মিচেল তার ছেলে জাস্টিনের সঙ্গে থাকতেন। বিশোর্ধ জাস্টিন একজন প্রতিবন্ধী। মিচেলের আরেক ছেলে জর্ডানও তাদের সঙ্গে থাকেন, কিন্তু ঘটনার সময় তিনি অসুস্থতাজনিত কারণে হাসপাতালে ছিলেন। হোয়াইট জানান, পরে তিন খবর পান মিচেল ও জাস্টিনের মৃত্যু হয়েছে। এ খবরে তার কেমন লেগেছে বলতে গিয়ে হোয়াইট বলেন, “এক টন ইট যেন আমার উপরে এসে পড়ল।”
"