আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট
দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারির জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। খবর বিবিসির।
ইউন সুক-ইওল বলেন, দেশে সামরিক আইন ঘোষণার জন্য আমি খুবই দুঃখিত এবং আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনেকটা মরিয়া হয়ে আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু এটা জনগণের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছিল। তাদের অসুবিধায় ফেলেছিল।
তিনি বলেন, এই ঘোষণার ফলে যে কোনো আইনি ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির দায় আমি এড়াতে পারি না। মানুষের মধ্যে সন্দেহ রয়েছে যে আরেকবার সামরিক আইন জারি করা হবে কিনা; তবে আমি আপনাদের স্পষ্টভাবে এটা বলতে পারি যে, আরেকবার সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেওয়া হবে না।
প্রেসিডেন্ট ইউন এমন একসময় ক্ষমা চাইলেন, যখন ক্ষমতা ছাড়তে তার ওপর ক্রমাগত চাপ বাড়ছে। তাকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে অভিশংসনে দেশটির পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হওয়ার কথা রয়েছে। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে শুক্রবার দফায় দফায় জরুরি বৈঠক করে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক দলগুলো।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে হঠাৎই মার্শাল ’ল সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ইউন। এতে দেশটিতে শুরু হয় রাজনৈতিক উত্তেজনা। তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন প্রেসিডেন্ট। তার এই ঘোষণার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন আইনপ্রণেতারাও। পরে বিক্ষোভের মুখে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সামরিক আইন জারির ঘোষণা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট।
নোবেলজয়ী হান ক্যাং যা বললেন : দক্ষিণ কোরিয়ায় চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটে মুখ খুলেছেন দেশটির নোবেলজয়ী সাহিত্যিক হান ক্যাং। শুক্রবার হান জানান, প্রেসিডেন্টের সংক্ষিপ্ত সামরিক শাসন জারির পর দেশের রাজনৈতিক সঙ্কট নিয়ে তিনি গভীরভাবে ‘মর্মাহত’।
তিনি বলেন, অনেক কোরীয় নাগরিকের মতো, আমিও গভীরভাবে মর্মাহত। আমি আমার দৃষ্টি সার্বক্ষণিকভাবে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের দিকে নিবন্ধ করে রেখেছি।
হান বলেছেন, ১৯৭৯-৮০ সালে অভ্যুত্থানের মাধমে সামরিক শাসন জারির পর তিনি সেই সময়কার সামরিক শাসনের পরিস্থিতি নিয়ে পর্যাপ্ত পড়ালেখা করেছেন। এমনকি সেই সময়ের মানব সৃষ্ট কর্মকাণ্ডের ওপরও প্রচুর সময় ব্যয় করেছেন।
তিনি বলেন, এখন আমার পরম সৌভাগ্যের বিষয় হচ্ছে নিজ চোখে ২০২৪ সালের সামরিক শাসন প্রত্যক্ষ করা।
নোবেল জয়ী হান ১৯৮০ সালে দুই দফা সফল অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ করে বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় গোয়াংঝু শহরে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি স্বচক্ষে দেখেছেন, সামরিক শাসন জারির পর সেনা সদস্যদের অত্যাচার, নির্যাতন-নিপীড়ন ও গণতন্ত্র বিঘ্নিত হওয়ার প্রতিবাদে ছাত্রদের নেতৃত্বে আন্দোলনে ও ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ।
"