আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সিরিয়ায় বিদ্রোহী ঠেকাতে রুশ বিমান হামলা
সিরিয়ার সবচেয়ে জনবহুল শহর আলেপ্পো দখলের পর বিদ্রোহীরা হামার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের ঠেকাতে সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকার ও রাশিয়া যৌথভাবে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে আলেপ্পোর একটি হাসপাতালে অন্তত ১২ জন নিহত হন। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব শহরে আরেকটি হামলায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। হামা ও ইদলিবের বিদ্রোহী অধ্যুষিত গ্রামগুলোয় তাদের আস্তানা লক্ষ্য করেও বিমান হামলা হয়েছে। গৃহযুদ্ধ শুরুর পর গত রবিবার প্রথমবারের মতো সিরিয়া সরকারের হাতছাড়া হয় আলেপ্পো।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস-এসওএইচআর জানিয়েছে, গত বুধবার লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রথম দিনে আকস্মিক সক্রিয় হয়ে ওঠে দীর্ঘদিন কোণঠাসা থাকা সিরিয়ার বিদ্রোহী বাহিনী। তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম বা এইচটিএস ও তুরস্ক সমর্থিত কয়েকটি সংগঠন। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াইয়ে এ পর্যন্ত অন্তত ২০ জন নিহত ও ৩০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
এর আগে শনিবার সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোয় ২০১৬ সালের পর বিদ্রোহীদের লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো বিমান হামলা চালায় রাশিয়া। দেশটিতে গৃহযুদ্ধের চরম পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় রাখতে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এসওএইচআরের তথ্য অনুযায়ী, ইদলিবের একটি শরণার্থী শিবিরে (বিদ্রোহীদের আস্তানায়) রুশ বিমান পাঁচবার আঘাত হেনেছে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওই শহরে বিদ্রোহী এইচটিএস গোষ্ঠী বেশ শক্ত অবস্থানে আছে।
এসওএইচআর জানায়, রবিবার বিদ্রোহীরা সরকারি বাহিনীর কাছ আলেপ্পোর প্রায় পুরোটা নিয়ন্ত্রণে নেয়। এতে সিরিয়ার সামরিক বাহিনী পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে শহর থেকে সরে যায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা আলেপ্পোর দক্ষিণে সিরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম শহর হামার নিকটবর্তী গ্রামাঞ্চলে পৌঁছেছে। সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এ অঞ্চলে সেনা, রকেট লঞ্চার ও ভারী সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে তারা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা জোরদার করেছে।
সিরিয়ায় জাতিসংঘের বিশেষ দূত গায়ার পেডারসেন দুই পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে এ সংঘাতের রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর দাবি জানান। তিনি বলেন, সম্প্রতি ঘটনাপ্রবাহ বেসামরিক মানুষের জন্য গভীর ঝুঁকি তৈরি করবে। এছাড়া এর আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গুরুতর প্রভাব রয়েছে।
তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত এলাকা থেকে আলজাজিরার প্রতিবেদক সিনেম কোসিগরু বলেন, বিদ্রোহীরা হামা শহরের উপকণ্ঠে অবস্থান করছে। তারা সরকারি বাহিনীকে মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, গ্রাম ও শহর বিদ্রোহীদের হাতে চলে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে সিরিয়ার সামরিক বাহিনী সেগুলো পুনরায় তাদের নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে। বারবার এভাবে ঘটছে, যা পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে রাখছে। সিরিয়ার সরকারি বাহিনী বলছে, বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোয় অস্ত্রাগার ও আস্তানাকে টার্গেট করে হামলা চালানো হচ্ছে। আলেপ্পোয় পরিবারের সদস্যরা থাকেন- এমন একজন সিরীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ মানবাধিকার কর্মী রাজন সাফৌর বলেন, তারা সরকার ও রাশিয়ার বিমান হামলা নিয়ে আতঙ্কিত।
"