আন্তর্জাতিক ডেস্ক
দণ্ডপ্রাপ্ত ছেলেকে নিঃশর্ত ক্ষমা করলেন বাইডেন
ক্ষমতার অপব্যবহার করেই ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত নিজের ছেলেকে ক্ষমা করে দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত রবিবার এক বিবৃতিতে ছেলে হান্টারকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমার ঘোষণা দেন তিনি। এ ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। খবর বিবিসির।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বড় ছেলে হান্টার বাইডেন দুটি ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত। গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে কর ফাঁকির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে নিজ রাজ্য ডেলওয়ারের আদালত। এ ছাড়া জুন মাসে আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় মাদক ব্যবহার নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায়ও দোষী সাব্যস্ত হন হান্টার।
ক্ষমতাসীন কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের সন্তান হিসেবে এই প্রথম দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন হান্টার। যদিও বাইডেন তখন বলেছিলেন, ছেলের বিচারকাজে কোনো হস্তক্ষেপ করবেন না তিনি।
তবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নেওয়ার আগমুহূর্তে এসে রবিবার সন্ধ্যায় ছেলে হান্টারের জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা জারি করলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেন, যদিও তিনি বিচার ব্যবস্থায় বিশ্বাস করেন, তবে হান্টারের সাজার ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন আদালত।
বাইডেন বলেন, শুধু মাত্র তার ছেলে হওয়ার কারণে হান্টারকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি এই বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছে এবং এটি ন্যায়বিচারের মৃত্যু ঘটিয়েছে।
ছেলেকে ক্ষমা করার ঘোষণায় বাইডেনের সমালোচনা করেছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি বলেন, এই ক্ষমা ন্যায়বিচারের অপব্যবহার এবং অপমৃত্যু।
বাইডেনপুত্রের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ, আগ্নেয়াস্ত্র কেনার সময় তিনি মিথ্যা তথ্য দেন। দ্বিতীয় অভিযোগ, অস্ত্র বিক্রেতার নথিপত্রেও মিথ্যা তথ্য থাকার বন্দোবস্ত করেন। তৃতীয় অভিযোগ হলো, হান্টার বাইডেন অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র কাছে রেখেছিলেন। এ মামলায় বলা হয়, ২০১৮ সালে একটি হ্যান্ডগান কিনেছিলেন হান্টার বাইডেন। সেই অস্ত্র কেনার সময়ই নিজের মাদকাসক্তি নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সমালোচনার মুখে চলতে হচ্ছে হান্টার বাইডেনকে। ২০১৫ সালে ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে মারা যায় বাইডেনের বড় ছেলে বিউ। ভাইয়ের মৃত্যুর পর মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন হান্টার। ২০১৮ সালে তিনি কোকেনে আসক্ত হয়ে পড়ার কথা স্বীকার করেন।
তবে পরিবারের দাবি, ২০১৯ সালে হান্টার মাদক ছেড়ে দেন। আর ২০১৮ সালেই মাদকাসক্ত নন বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বন্দুক কিনেছিলেন হান্টার বাইডেন, যা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য।
এ ছাড়া চলতি বছরের ৬ সেপ্টেম্বর কর ফাঁকির মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয় হান্টারের। ২০১৬ ও ২০১৯ সালে ইচ্ছাকৃতভাবে এক কোটি ৪০ লাখ ডলার আয়কর দেননি বলে অভিযোগ হান্টারের বিরুদ্ধে।
"