আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কায়রোয় হামাসের প্রতিনিধি
গাজা উপত্যকায় সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা করতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রতিনিধিরা গতকাল শনিবার কায়রোয় গেছেন। হামাসের এক কর্মকর্তা গত শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর এএফপি ও বিবিসির।
বিষয়টির স্পর্শকাতরতার কারণে হামাসের ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি এবং গাজা উপত্যকায় জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য মিসরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েকটি বৈঠক করতে হামাসের একটি প্রতিনিধি দল কায়রো গেছেন।
ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার দুদিনের মাথায় এ ঘোষণা এলো। হিজবুল্লাহর মিত্র হিসেবে পরিচিত হামাস।
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে কাতার, তুরস্ক ও মিসরের সঙ্গেও নতুন করে কূটনৈতিক তৎপরতা শুরুর ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের হিসাব অনুসারে ওই হামলায় ১২০৭ জন নিহত হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, হামলায় এ পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৩৬৩ জন নিহত হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলার সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করেছিল হামাস। ধারণা করা হয়, জিম্মিদের মধ্যে ৯৭ জন এখনো গাজায় আছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, এসব জিম্মির ৩৪ জন মারা গেছেন।
২০২৩ সালের নভেম্বরে হওয়া যুদ্ধবিরতির সময়ে ইসরায়েল থেকে ২৪০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তির বিনিময়ে প্রায় ১০০ জন জিম্মিকে ছেড়ে দিয়েছিল হামাস।
নতুন করে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে এবং বন্দীদের মুক্তি নিশ্চিত করতে চলতি বছরের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর বেশ কয়েকবার প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। তবে তা ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে গাজার পাশাপাশি লেবাননেও হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৬১ জন নিহত এবং ১৬ হাজার ৫২০ জন আহত হয়েছে। এছাড়া সীমান্তবর্তী অসংখ্য বাড়িঘরও গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। তবে লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে বুধবার ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যস্থতায় বুধবার থেকে ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ।
যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনে বুধবার হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত লোককে দক্ষিণ লেবাননে তাদের বাড়িঘরে ফিরতে দেখা গেছে। দীর্ঘদিন পর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা হয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকে। এ যুদ্ধবিরতি থেকেই আশা দেখা যাচ্ছে গাজার যুদ্ধবিরতিতে।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসগাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছেন যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, আমি একটি শুভ লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি। যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি আঞ্চলিক যুদ্ধ ঠেকাতে ‘প্রথম আশার আলো’।
লিসবন সফরের সময় একটি টেলিভিশন বিবৃতিতে গুতেরেস বলেন, এটি অপরিহার্য যে যারা যুদ্ধবিরতি প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করেছে, তারা এটিকে সম্পূর্ণভাবে সম্মান করবে।
গুতেরেস আরো বলেন, লেবাননে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ করতে প্রস্তুত রয়েছে। এখন গাজায় যুদ্ধবিরতি দরকার।
"