আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরো ৪৮ জন নিহত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় রাতভর বিমান চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বিমান হামলায় গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৮ জন নিহত হয়েছেন। এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বোমা হামলার তীব্রতা বাড়ানোর পাশাপাশি ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো গাজার উত্তর ও দক্ষিণের অঞ্চলে অগ্রসর হচ্ছে। খবর বিবিসি ও আল জাজিরার।
সূত্রমতে, গাজার উত্তরে গাজা সিটির অন্তত তিনটি এলাকায়, মধ্য গাজার নুসেইরাত ক্যাম্পসহ বেশ কয়েকটি স্পটে বৃহস্পতিবার রাতে হামলা বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
শুক্রবার ভোরেও গাজা সিটিতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় বেইত লাহিয়া শহরে কামাল আদওয়ান হাসপাতালের কাছে একটি বাড়িতে দুটি বিমান হামলায় ছয় ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস এলাকায় একটি মোটরসাইকেলে ইসরায়েলি হামলায় আরও চারজন নিহত হয়েছেন।
পরে পূর্বাঞ্চলীয় খান ইউনিস এলাকায় একটি আশ্রয়শিবিরের কাছে ইসরায়েলের বিমান হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হন। বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো ওই শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিল।
নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে কয়েকটি হামলা চালানো হয়েছে। শিবিরের আল আওদা হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, হামলায় কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। এতে একটি বহুতল ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন মসজিদের বাইরের সড়কগুলোয় হামলা হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৪৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৫৩ জনের বেশি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসলায়েলি বাহিনীর অব্যাহত হামলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৪ হাজার ৩৩০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৯৩৩ জন।
গাজার পাশাপাশি লেবাননেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে বুধবার ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও বিচ্ছিন্ন হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৬১ জন নিহত এবং ১৬ হাজার ৫২০ জন আহত হয়েছে।
উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের গভীরে ঢুকেছে ইসরায়েলি ট্যাংক : ইসরায়েলের ট্যাংকগুলোও গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকাগুলোর আরও গভীরে ঢুকে পড়েছে।
এক বিবৃতিতে তারা বলেন, আশ্রয়শিবিরের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা থেকে ইসরায়েলি ট্যাংকগুলো অগ্রসর হওয়ায় বেশ কয়েকটি পরিবার তাদের বাড়িতে আটকা পড়েছে। ট্যাংক থেকে অনবরত গোলা ছোড়ার কারণে অ্যাম্বুলেন্স সেখানে পৌঁছাতে পারছে না। এদিকে অব্যাহত ইসরায়েলি হামলার মধ্যে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজা উপত্যকায় আটকে পড়া মানুষেরা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে আছেন।
জাতিসংঘ বলেছে, ‘খাবার-দাবার দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে এবং দুর্ভিক্ষ আসন্ন। গাজার পানি সরবরাহের বেশির ভাগটাই পানের জন্য অনিরাপদ। কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় পরিবারগুলো পরিত্যক্ত বাড়িতে বা খোলা জায়গায় বসবাস করছে।
গাজার মধ্যাঞ্চল থেকে আল জাজিরার প্রতিনিধি তারেক আবু আজুম বলেন, পরিবারগুলো শুধু পানি পান করে এবং খেজুর খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।
"