আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েল-হিজবুল্লাহর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা দেবেন বাইডেন-ম্যাক্রোঁ
অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্সের চাপের মুখে লেবাননের হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েল সরকার ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘বেশ কাছাকাছি’ পৌঁছে গেছে। এ বিষয়ে শিগগিরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। আর ঘোষণা দিতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। লেবাননের সংশ্লিষ্ট চারটি জ্যেষ্ঠ সূত্র সোমবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছে। তবে কোনো সূত্রই সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সূচি জানাতে পারেনি।
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কারবি বলেন, ‘আমরা খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। তবে সবকিছু চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু হয়েছে, সেটা বলা যাবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত আমোচ হোচস্টেইন গত সপ্তাহে বৈরুতে জেরুজালেম ও লেবানন সফর করে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি বলেছেন, সম্ভাব্য চুক্তিটি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এটাই শেষ সুযোগ। সম্ভাব্য মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে যাবে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ। এটাকে পরীক্ষামূলক চুক্তি হিসেবে দেখা হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যকার যুদ্ধবিরতি আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সোমবার মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে এই নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
জেরুজালেমে ইসরায়েলি সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির খসড়ার অনুমোদন দিতে বৈঠকে বসবে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা। সোমবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘ইয়েনেট’ বলেছে, ইসরায়েলের মনোভাব লেবাননকে জানানো হয়েছে।
সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির অগ্রগতির বিষয়ে জানতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তবে সেখান থেকে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে। জাতিসংঘে ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেন, যেকোনো চুক্তির অধীনে ইসরায়েল দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালু রাখার সক্ষমতা বজায় রাখবে। এর আগে লেবাননের পক্ষ থেকে খসড়া চুক্তির এমন শব্দবন্ধ নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছিল, যেটা ইসরায়েলকে এমন অধিকার দেবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির খসড়া নিয়ে দুই পক্ষের (ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ) মতপার্থক্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এসেছে। তবে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য তাদের এখনো বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার দরকার হবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হয়। তখন থেকেই হামাস ও ফিলিস্তিনের সমর্থনে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় হিজবুল্লাহ। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এ সংঘাত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে তীব্র হয়ে ওঠে। ইসরায়েল লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে এবং হিজবুল্লাহর কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে হত্যা করে। নিহত হন হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন এবং সংগঠনটির প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দেওয়া ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়েছে হিজবুল্লাহ। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আশা জাগাচ্ছে।
"