আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গাজা-লেবাননে ইসরায়েলি ‘গণহত্যা’ বন্ধের আহ্বান সৌদি যুবরাজের
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের এই সামরিক আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে লেবানন ও ইরানে ইসরায়েলি হামলা বন্ধেরও আহ্বান জানান সৌদি যুবরাজ। খবর বিবিসির।
আরব লিগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা- ওআইসির যৌথ আয়োজনে সৌদির রাজধানী রিয়াদে সোমবার মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সম্মেলন শুরু হয়েছে। ওই সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গাজায় ইসরায়েলের ‘গণহত্যা’র নিন্দা জানান সৌদির প্রভাবশালী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধ নিয়ে এই প্রথম প্রকাশ্যে কথা বললেন যুবরাজ। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন ও লেবাননের জনগণের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো হচ্ছে। এই আগ্রাসন চালানো থেকে ইসরায়েলকে অবশ্যই বিরত থাকতে হবে।
এ সময় স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানান এমবিএস হিসেবে পরিচিত যুবরাজ। তিনি পশ্চিমতীর ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।
মুসলিম ও আরব নেতাদের ওই সম্মেলনে বক্তৃতাকালে যুবরাজ লেবানন ও ইরানে ইসরায়েলি হামলারও সমালোচনা করেন। প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াদ ও তেহরানের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির ইঙ্গিত হিসেবে, তিনি ইরানের মাটিতে হামলা শুরু করার বিরুদ্ধেও ইসরায়েলকে সতর্ক করেন। এদিকে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ বলেছেন, এটি ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতা’ যে গাজা যুদ্ধ এখনো বন্ধ হয়নি। ইসরায়েল গাজা ভূখণ্ডে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করেছে।
প্রিন্স ফয়সাল বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত তাৎক্ষণিক সংঘাতের অবসান ঘটানো এবং ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ করা।
ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা তুলে ধরে আরব লিগের মহাসচিব আহমেদ আবৌল ঘেইত বলেন, এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। ইসরায়েলি সহিংসতা দেখেও বিশ্ব চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না। সম্মেলনে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেন, লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে ইসরায়েল। কিন্তু এ যুদ্ধ তার দেশকে ‘নজিরবিহীন’ সংকটের মুখোমুখি করেছে। দেশের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
‘রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ততার’ কারণে সম্মেলনে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান যোগ দেননি। তবে দেশটির ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, হামাস-হিজবুল্লাহর নেতাদের হত্যা করার মধ্য দিয়ে ‘সংঘটিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ চালিয়েছে ইসরায়েল।
পৃথক দুই রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে ফিলিস্তিন সংকটের সমাধানের লক্ষ্যে আয়োজিত এই সম্মেলনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবু, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ প্রমুখ নেতারা অংশ নেন। গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলা ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এ যুদ্ধে গাজায় ৪৩ হাজার ৫০০ জনের মতো ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো সোয়া লাখ মানুষ। গাজায় হতাহতদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
"