আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১২ নভেম্বর, ২০২৪

পুতিনকে ফোন ট্রাম্পের, ইউক্রেনে যুদ্ধ না বাড়ানোর পরামর্শ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোন দিয়েছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøলাদিমির পুতিনকে। ফোনালাপে পুতিনকে ইউক্রেন যুদ্ধ আর না বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাম্প। খবর ওয়াশিংটন পোস্ট ও গার্ডিয়ানের।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেল ক্ষমতায় ফেরার মধ্য দিয়ে বছর তিনেক ধরে চলা ইউক্রেন যুদ্ধের রাশ টানার সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদ দেখা দিয়েছে। কেননা, দ্রুত যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে ট্রাম্প। এ ছাড়া কিয়েভের জন্য ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে দেওয়া কোটি কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা নিয়েও ট্রাম্পের প্রশ্ন রয়েছে।

ওয়াশিংটন পোস্ট রবিবার এক রিপোর্টে জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

ফোনালাপ নিয়ে ওয়াকিবহাল একটি সূত্র বলেছেন, ফোন কলে ট্রাম্প পুতিনকে ‘ইউরোপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল সামরিক উপস্থিতির’ কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্টকে ইউক্রেনে যুদ্ধ না বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, ট্রাম্প শিগগিরই ‘ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান’ বিষয়ে পুতিনের সঙ্গে ফলো-আপ কথোপকথনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

যদিও ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুতিন ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন নিয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে তিনি মস্কোর দাবি পরিবর্তনে সম্মত হবেন। যুক্তরাষ্ট্রে গত ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভোটের ফল প্রকাশের একদিনের মাথায় বৃহস্পতিবার পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারণার সময়ই ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘এক দিনের মধ্যে’ যুদ্ধ শেষ করার একটি সমাধান খুঁজে বের করবেন তিনি। তবে সেটি কীভাবে করবেন তা ব্যাখ্যা করেননি ট্রাম্প। ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপ বিষয়ে জ্ঞাত ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্প সম্ভবত ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহতা নিয়ে তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্সি শুরু করতে চান না।

ট্রাম্প-পুতিন ফোনালাপ নিয়ে ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টিভেন চেউং বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি ঐতিহাসিক নির্বাচনে বিপুল ম্যান্ডেটে জয়লাভ করেছেন এবং সারা বিশ্বের নেতারা জানেন যে আমেরিকা বিশ্ব মঞ্চে প্রাধান্য ফিরে পাবে। এ কারণেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। কারণ তিনি বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতিনিধিত্ব করেন।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্প বুধবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলেছেন। তবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। এদিকে বিদায়ি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামীকাল বুধবার ট্রাম্পকে ওভাল অফিসে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান জানিয়েছেন, বৈঠকে বাইডেন ট্রাম্পকে যে শীর্ষ বার্তাটি দেবেন, সেটি হচ্ছে ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি। ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে কী ঘটছে তা নিয়েও তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলবেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

সুলিভান বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন আগামী ৭০ দিনের মধ্যে কংগ্রেস এবং ট্রাম্পের আগত প্রশাসনের কাছে নিশ্চয়তা পাওয়ার চেষ্টা করবেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন থেকে দূরে সরে যাবে না, কেননা ইউক্রেন থেকে সরে যাওয়া মানে ইউরোপে আরও অস্থিতিশীলতা তৈরি হওয়া।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে কয়েক বিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করেছে। যদিও ট্রাম্প ওই অর্থায়নের বারবার সমালোচনা করেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close