আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নেতৃস্থানীয় পর্বতারোহীর
হিমালয়ে কীর্তি গড়ার পরই প্রাণ গেল
নেপালের একটি ২৩ হাজার ৭৩০ ফুট উঁচু চূড়া থেকে নামার সময় একজন নেতৃস্থানীয় স্লোভাক পর্বতারোহীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বিবিসি জানিয়েছে, হিমালয়ের ল্যাংটাং লিরুং পর্বতে আরোহণ করেছিলেন স্লোভাক পর্বতারোহী অন্দ্রেজ হুসেরকা। এর মধ্য দিয়ে ওই পর্বতের পূর্বপাশ দিয়ে চূড়ায় ওঠার বিরল কীর্তি গড়েছিলেন তিনি। কিন্তু নামার সময়ই ঘটে দুর্ঘটনা। তিনি একটি ক্রেভাস বা অনেক গভীর একটি খাদে পড়ে গিয়েছিলেন। ৩৪ বছর বয়সি এই পর্বতারোহী এর আগে আল্পস, প্যাটাগোনিয়া এবং পামির মালভূমির পর্বতমালায় আরোহণ করেছিলেন। পর্বতারোহী হিসেবে স্লোভাকিয়ায় তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। হিমালয়ের ল্যাংটাং লিরুং পর্বতে আরোহণের সময় অন্দ্রেজের সঙ্গী ছিলেন চেক পর্বতারোহী মারেক হোলেসেক। ল্যাংটাং লিরুংয়ের ভয়ংকর পূর্বপাশ জয়ের পর মারেক ফিরে আসলেও ফিরতে পারেননি অন্দ্রেজ।
মারেক জানান, পর্বতের দেয়াল বেয়ে নামার সময় অন্দ্রজের দড়ি ছিঁড়ে গিয়েছিল। এতে তিনি অনেক গভীর একটি বরফের খাদের মধ্যে পড়ে যান। সঙ্গীকে হারিয়ে বেসক্যাম্পে একা ফিরে এসে ফেসবুকে একটি আবেগঘন পোস্ট দেন মারেক। অন্দ্রেজের চিৎকার শুনে তাঁকে বাঁচানোর জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করেছিলেন তিনি। মারেক লিখেছেন, ‘আমি তাঁর কাছে গিয়েছিলাম এবং তাঁর প্রাণ চলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত চার ঘণ্টা তাঁর সঙ্গে ছিলাম।’
আহত অবস্থায় অন্দ্রেজকে প্রথমে বরফের নিচ থেকে টেনে বের করার পরই মারেক বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর সঙ্গী পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। মারেক লিখেছেন, ‘আমার বাহুতে মাথা রাখার পরই তাঁর জীবনপ্রদীপ নিভে যেতে শুরু করেছিল।’
স্লোভাক পর্বতারোহীদের সমিতি ‘এসএইচএস জেমস’-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নেপালের প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি বিবৃতিতে এই সংগঠনটি বলেছে, ‘মারেক হোলেসেকের একটি ফোন কল এবং তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাস এবং ল্যাংটাং লিরুংয়ের প্রতিকূল আবহাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবার এবং বন্ধুদের এই সত্যটি মেনে নিতে হবে যে, অন্দ্রেজ আর আমাদের মাঝে নেই।’
জানা গেছে, ল্যাংটাং লিরুং হিমালয়ের খুবই বিপজ্জনক একটি পর্বত। নেপালি শেরপারা প্রায় সময় এই পর্বতকে ‘কিলার মাউন্টেন’ বলে বর্ণনা করেন। অসংখ্য মানুষ এই পর্বতে আরোহণ করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন এবং দুঃখজনকভাবে অন্দ্রেজ সহ অনেকেই সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন।
"