আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১০০ বছরের প্রচেষ্টায় ম্যালেরিয়ামুক্ত মিসর
ম্যালেরিয়ায় বিশ্বে প্রতি বছর কমপক্ষে ছয় লাখ মানুষ মারা যায়, যার বেশির ভাগই ঘটে আফ্রিকায়
শত বছরের প্রচেষ্টার পর ম্যালেরিয়ামুক্ত ঘোষিত হলো মিসর। আফ্রিকান দেশটিকে ম্যালেরিয়ামুক্ত প্রত্যয়িত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। দেশটির এ অর্জনকে ‘সত্যিই ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘের জনস্বাস্থ্য সংস্থা। খবর বিবিসির।
ম্যালেরিয়া প্লাজমোডিয়াম নামের একটি জটিল পরজীবী জীবাণুর সংক্রমণে সৃষ্ট প্রাণঘাতী রোগ, যা মশার কামড়ে ছড়ায়। ম্যালেরিয়ায় বিশ্বে প্রতি বছর কমপক্ষে ছয় লাখ মানুষ মারা যায়, যার বেশির ভাগই ঘটে আফ্রিকায়।
মিসরীয় কর্তৃপক্ষ প্রায় ১০০ বছর আগে প্রাণঘাতী মশাবাহিত সংক্রামক রোগ ম্যালেরিয়া নির্মূল করার জন্য তাদের প্রথম প্রচেষ্টা শুরু করেছিল। ১৯২০-এর দশকে শুরু করা প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তখন বাড়ির কাছাকাছি ধান চাষ ও কৃষি ফসল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
অবশেষে তাদের সেই সাফল্যের স্বীকৃতি মিলল। দেশটিকে রবিবার ম্যালেরিয়ামুক্ত ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রাচীনকাল থেকে চেষ্টা করে একটি রোগের অবসান ঘটানোর জন্য মিসরীয় সরকার ও জনগণ প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আরব আমিরাত ও মরক্কোর পরে মিসরই হলো ডব্লিউএইচওর পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে প্রত্যয়িত তৃতীয় দেশ। বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ৪৪টি দেশ ও একটি অঞ্চল এই মাইলফলক ছুঁয়েছে।
ডব্লিউএইচও প্রধান তেদ্রোস আদহানম গেব্রেইয়াসুস বলেছেন, ম্যালেরিয়া মিসরীয় সভ্যতার মতোই পুরোনো। যে রোগটি ফারাওদের জর্জরিত করেছিল, তা এখন ইতিহাসে পরিণত হলো।
মূলত একটি দেশকে তখনই ম্যালেরিয়ামুক্ত ঘোষণা করা হয়, যখন তারা প্রমাণ করে যে সংক্রমণ টানা তিন বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। অর্থাৎ, পরপর তিন বছরে কেউ রোগটিতে আক্রান্ত হয়নি।
ডব্লিউএইচও বলেছে, মিসরের জন্য বিষয়টি শুধু একটি নতুন পর্যায়ের সূচনা, মিসরকে তার ম্যালেরিয়ামুক্ত অবস্থা ধরে রাখার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। বর্তমানে অনেক দেশে ম্যালেরিয়া রোগের ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে রোগ পর্যবেক্ষণ এবং মশার কামড় এড়ানো ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
"